চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

নবীনদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

সাইফুল ইসলাম
এরই মধ্যে ভতির্যুদ্ধ শুরু হয়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভতির্ পরীক্ষা এখনো শুরু হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিকের গÐি পেরিয়ে সব শিক্ষাথীর্ চায় নিজের পছন্দ কিংবা দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়াশোনা করতে। এর মধ্যে শিক্ষাথীের্দর অন্যতম পছন্দের তালিকায় থাকে দেশের দক্ষিণ-পূবার্ঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) । ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় সবুজ শ্যামল পাহাড়ে ঘেরা এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটি, হঁাটি হঁাটি পা পা করে দীঘর্ ৫২ বছর অতিক্রম করছে। মাত্র ৪টি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তার একাডেমিক কাযর্ক্রম শুরু করে, বতর্মানে ৭টি অনুষদের অধীনে তার রয়েছে ৫২টি বিভাগ, ৫টি ইনস্টিটিউড এবং ৫টি গবেষণা কেন্দ্র । দীঘর্ ৫২ বছরে অসংখ্য ও অগণিত অজর্ন আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের, যা কেবল দেশব্যাপী নয় সুনাম কুড়িয়েছে আন্তজাির্তক পরিসরেও। ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবষের্র স্নাতক ভতির্ পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ভতির্ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৭- ৩১ অক্টোবর পযর্ন্ত। বরাবরের মতো এইবারও একটা বিশাল সংখ্যক শিক্ষাথীর্ লড়াই করবেন এই বিশ্ববিদ্যালয় ভতির্ হওয়ার যুদ্ধে। তথ্য অনুযায়ী, এইবার ৪ হাজর ৯২৬ আসনের বিপরীতে আবদেন করছে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪২৭ জন। যার ফলে প্রতি আসনের জন্য লড়তে হবে ২৮ জন পরীক্ষাথীের্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অথর্নীতি বিভাগের শিক্ষাথীর্ নাদিয়া জাহান বলছিলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় সবারই ইচ্ছা থাকে ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে ভতির্ হওয়া। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আমার পছন্দের শীষের্। এর অন্যতম কারণ, শাটল ট্রেনে গাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাথীের্দর নানারকম গান, বৃষ্টিভেজা ক্যাম্পাসের মনোরম সৌন্দযর্ আর সবোর্চ্চ মানের পড়ালেখার বিষয়টা তো আছেই। তবে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখানে ভতির্ পরীক্ষার প্রশ্ন অনেকটাই ভিন্ন হয়। বলতে গেলে একটু বেশি ক্রিটিকাল। এক্ষেত্রে চোখ কান খোলা রেখে পরীক্ষা দিতে হবে। নিজের লালিত স্বপ্নের বান্তবায়নে হাজার হাজার পরীক্ষাথীের্ক পেছনে ফেলে মেধা তালিকায় স্থান করে নিতে হবে। এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিভাগ বাচাই করে নিয়ে, ভালো করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।“ আইন বিভাগের শিক্ষাথীর্ মিজানুর রহমান জানালেন, এইচএসসি পরিক্ষার পর মোটামটি সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ভতির্ হওয়ার জন্য পড়াশোনা শুরু করে। তবে আশানুরূপ রেজাল্ট না হওয়াতে অনেকেই মন খারাপ করে বসে থাকেন। এটা ভুল। কারণ অনেক সময় ভালো একাডেমিক রেজাল্ট থাকা সত্তে¡ও চান্স হয় না। এক্ষেত্রে ভতির্ পরীক্ষায় নিজের সেরাটা দেওয়াই হচ্ছে আসল কাজ। এক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এর বিশেষ সুবিধা রয়েছে। কারণ রেজাল্টের ওপর কম মাকর্ ধরা হয় বিদায় এখানে রেজাল্ট ভতির্ পরীক্ষার ওপর তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। তবে আশার দিক হচ্ছে, এখানে প্রতিবছরের রেজাল্টের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে খুব কম মাকর্স পেয়েই বেশিরভাগের চান্স হয়। এ জন্য পরীক্ষায় খুব সচেতনভাবে উত্তর দেয়ার বিকল্প নেই। পাশাপাশি মনোবল আর প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। হার জিত থাকবেই। তাই বলে মন খারাপ করে বসে থাকলে চলবে? রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষাথীর্ ইমাম উদ্দিন জোনায়েদ বলছিলেন, ‘জীবন মানেই একটা যুদ্ধ। এখানে টিকে থাকতে হলে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয়। আর জীবনে অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভতির্ পরীক্ষা এর অন্যতম। তবে আশানুরূপ ফলাফল না হলে হতাশার কিছু নেই, নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সফলতা আসবেই। ঠিক করে নিতে হবে আমি কি পড়তে চাই, কোথায় পড়তে চাই। একাডেমিক রেজাল্ট আর আত্মবিশ্বাসের জায়গা থেকে ঠিক করতে হবে, পছন্দের বিষয়। যেমন, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস, বিজ্ঞান, জীবজগৎ, ইতিহাস, দশর্ন, অথর্নীতি, রাজনীতি মেরিনসায়েন্স ভেটেরিনারি, চারুকলা কিংবা অন্যান্য যেকোনো বিষয়। লক্ষ্যকে ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে তোমাদের বহু দূরে। চারদিকে সবুজ পাহাড়ে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দযের্র অপরূপ লীলাভ‚মি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শহরের কোলাহল আর যান্ত্রিকতা থেকে দূরে অবস্থিত এই ক্যাম্পাস যেন প্রকৃতির কোলে গড়ে উঠা এক অপূবর্ ও অনন্য নৈসগর্। আয়তনে দেশের সবর্বৃহৎ ২১০০ একরের এই ক্যাম্পাসটি যেন প্রকৃতি আর মানব প্রাণের মেলবন্ধন। সবুজ বৃক্ষসারির ওপর উড়ন্ত হরেক রকম পাখি, সবুজ পাহাড়ের থাকা হরিণ, অজগর কিংবা বিচিত্র আর দুলর্ভ প্রাণীর জীবন্ত জাদুঘর চবি ক্যাম্পাস। ঝুলন্ত ব্রিজ, ঝরনাধারা, বোটানিক্যাল গাডের্ন, ফরেস্ট্রি, জাদুঘর, রহস্যময় চালন্দা গিরিপথ, ১নং গেইট থেকে শুরু করে জিরো পয়েন্ট পযর্ন্ত দুই দিকে মেহগনি গাছ বিশিষ্ট বিশাল রাস্তা, কাটা পাড়ার, সুবিশাল মাঠ কি নেই এই ক্যাম্পাসে? এসব মায়বী সৌন্দযর্ উপভোগ করার জন্য আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগত নবীনদের জানায় অগ্রিম স্বাগতম।