ক্ষুরধার যুক্তিতে তারুণ্যের জয়গান

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

খালেদ জুবায়ের শাবার
একটি জাতির বিকাশধারা নির্ভর করে তার চিন্তাশক্তির অনুশীলনের ওপর। যে জাতির চিন্তাশক্তির চর্চা যত বেশি, সে জাতি তত বেশি অগ্রসর। চিন্তাশক্তি বিকাশের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করে বিতর্কচর্চা। বিতর্কচর্চার মাধ্যমে চিন্তাশক্তির সঙ্গে সঙ্গে মুক্তচিন্তা ও যুক্তিবাদী বিশ্লেষণের ক্ষমতারও বিকাশ ঘটে। বিতর্কচর্চা মানুষকে কোনো বিষয়ের উভয়দিককে যুক্তিবাদী আলোচনা দ্বারা তুলে ধরতে সাহায্য করে। মানুষকে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠের ধারণা দেয়। এই বিতর্কচর্চার মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তির উন্নয়ন ও মুক্তচিন্তার বিকাশ সাধন ঘটাতে কাজ করে যাচ্ছে জিওগ্রাফি ডিবেটিং ক্লাব- জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি (জিডিসি-জেইউ)। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল সমিতির পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রম্নয়ারি থেকে শুরু হয় সংগঠনটির পথচলা। পথচলার পর থেকেই পূর্ণোদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। নিয়মিত বিতর্ক কর্মশালার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আয়োজন করছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার। বিশ্ব মহামারি কোভিডের কারণে বিশ্ব ছিল মন্থর, বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বন্ধ। কিন্তু করোনার ভয়াল ছোবল থামিয়ে রাখতে পারেনি সংগঠনটি কার্যক্রমকে। করোনাকালীন সময়ে অনলাইন পস্ন্যাটফর্মের মাধ্যমে সংগঠনটি আয়োজন করেছে বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রতিযোগিতার। অনলাইন পস্ন্যাটফর্মে তারা সম্পন্ন করেছে প্রথম জাতীয় আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতা। সংগঠনটির মাধ্যমে তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফুটে উঠছে বিতর্কের প্রতিভা, তৈরি হচ্ছে নতুন বিতার্কিক। জিডিসি-জেইউর সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া রোকনী বলেন, 'ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষ নাগরিক ও জ্ঞানচর্চায় আগ্রহী হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা নিয়েই আমরা জিডিসি-জেইউ যাত্রা শুরু করেছিলাম। এই যাত্রায় আমাদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ফারাক বই সামান্য। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা জিডিসি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম সেই স্বপ্নের প্রতিফলন এখন নবীন বিতার্কিকদের মধ্যে দেখতে পাই। আশা করছি এদের হাত ধরেই জিডিসি-জেইউ পৌঁছে যাবে সাফল্য ও জ্ঞানগরিমার সুউচ্চ শিখরে।' সংগঠনটির সদস্য ফাইরুজ জান্নাত বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জিডিসি-জেইউর সান্নিধ্য আজ আমাকে বিতর্ক জগৎ সম্পর্কে প্রতিনিয়ত আগ্রহী করে তুলছে যেখানে বিতর্ক নিয়ে কোনো ধারণা ও অভিজ্ঞতাই ছিল না। আর জিডিসিতে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হচ্ছে কিছু অসাধারণ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরিচয় হওয়া। তাদের সংস্পর্শে এসে বিতর্ককে নতুনভাবে শিখছি ও বুঝছি। এটি একটি বিভাগীয় ক্লাব হয়েও বিতার্কিকদের কতটা উজ্জীবিত করছে এবং নবীনদের প্রতি কতটা যত্নশীল, সাম্প্রতিক প্রতিযোগিতাগুলোই তার প্রমাণ।' সংগঠনটির আয়োজিত প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো, জিডিসি-জেইউ প্রথম জাতীয় আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতা, জিওগ্রাফি ডিবেটারস লীগ ১.০, সুবর্ণজয়ন্তী- জিওগ্রাফি ডিবেটারস লীগ ২.০ ও পাবলিক স্পিকিং প্রতিযোগিতা। জিডিসি-জেইউ এগিয়ে যাক দুর্বার গতিতে। বিতর্ক চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যুক্তিবাদী চিন্তার বিকাশ ঘটুক।