পঞ্চান্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট

প্রকাশ | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

মো. জাহানুর ইসলাম
বাংলাদেশে অর্ধশতবর্ষ কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সি যে সব প্রতিষ্ঠান আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট গ্রম্নপ সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ জন্মের আগে ১৯৬৬ সালে জন্ম নেওয়া প্রতিষ্ঠানটি অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বর্তমানে ৫৫তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। বছরের শুরু থেকেই এই নিয়ে রোভারদের মধ্যে আগ্রহ, উদ্দীপনা ছিল দেখার মতো। আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিক উদযাপন করা হবে খুব ঘটা করে। সেই পরিকল্পনারই বাস্তবায়ন ঘটে ২১ ডিসেম্বর রোজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে। ২১ ডিসেম্বর সকাল থেকেই রোভাররা নিজ নিজ কাজ নিয়ে ব্যস্ত। উদ্দেশ্য একটাই অনুষ্ঠানে যেন কোনো ধরনের ঘাটতি না থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে রোভারদের উপস্থিতি। সকাল পেরিয়ে দুপুর, দুপুর পেরিয়ে বিকালের আগমন ঘটলে টিএসসি অডিটোরিয়াম দর্শকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। ঘড়ির ঘণ্টার কাটা যখন ৪টার ঘরে পৌঁছায় ঠিক তখনই শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। অতিথির আসন গ্রহণ করেন বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রধান জাতীয় কমিশনার মোজাম্মেল হক খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট গ্রম্নপের প্রেসিডেন্ট রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত কৃতি রোভার, ডুপসেপের সভাপতি রফিকুল ইসলাম খানসহ অন্য অতিথিরা। রোভারমেট মেহেদি হাসান ও তাসনিম তামান্নার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম খান তার চার দশকে হৃদয় স্মৃতিপটে জমাকৃত বিভিন্ন স্কাউটিং অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন, শুধু তাই নয়- স্মৃতিচারণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট গ্রম্নপ সৃষ্টির শুরুর দিককার বিভিন্ন মধুর ঘটনারও। বক্তার কথা শুনে উপস্থিত সবাই আপস্নুত হয়ে পড়েন। অনেকে আবার ডুব দেন স্মৃতির সাগরে। অন্য অতিথিরাও স্মৃতিচারণ করেন। বিশেষ অতিথিদের কথা শেষ হলে দৃশ্যপটে হাজির হন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোজাম্মেল হক খান। তিনি স্কাউটিং অভিজ্ঞতা শেয়ারের পাশাপাশি ক্যারিয়ার গঠনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন যা উপস্থিত সবার মনে অনুপ্রেরণা ও সাহস জোগায়। উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠেন রোভাররা। অনুষ্ঠানের একদম মুহূর্তে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও গ্রম্নপের প্রধান রোভার স্কাউট লিডার মাহমুদুর রহমান উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। এ যেন এক আনন্দ শেষ হতে না হতেই আরেক আনন্দের আগমন। দুই পর্বের ফাঁকে কয়েক মিনিটের বিরতি ঘোষণা করা হলে রোভাররা এটাকে কাজে লাগায়। আনন্দঘন মুহূর্তের স্মৃতিগুলো অনেকে ক্যামেরাবন্দি করে, অনেকে মেতে ওঠেন একে অন্যের সঙ্গে খোশগল্পে। বিরতি শেষ হলে দেশাত্মবোধক গান ও নাচের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশন করা হয় বিভিন্ন শিক্ষণীয় নাটিকা। এমন মন মাতানো পরিবেশনা আসা দর্শকদের মুগ্ধ করে। হর্ষ ধ্বনি আর আনন্দ চিৎকারে প্রকম্পিত হয় টিএসসির পুরো অডিটোরিয়াম। সময় সন্ধ্যা পেরিয়ে যখন রাত ৯টা তখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করতে হয়। এবার সবার বাড়ি ফেরার পালা। কিন্তু না! মঞ্চ থেকে ঘোষণা আসে অতিথি ও দর্শক সবার জন্য রয়েছে বুফে গ্রান্ড ডিনারের ব্যবস্থা। ঘোষণা শুনে সবাই আনন্দিত ও আপস্নুত। সবার মনে খুশির জোয়ার বইতে থাকে। রাত ১০টার মধ্যে খাওয়া-দাওয়া পর্ব শেষ হলে শুরু হয় বাড়ি ফেরার পালা। সবাই নিজ নিজ গন্তব্যের পথ ধরে ঠিকই তবে সবার মনের ভাবখানা এমন যেন আর একটু থেকে যাই। এভাবেই পরিসমাপ্তি ঘটে রোভারদের সারাদিনের কর্মচাঞ্চল্যের।