দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ | ২৮ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

এম এম হোসেন
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অধীনে দেশের কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষা পরিচালিত হয়। অন্যদিকে কোনো বিশ^বিদ্যালয় না থাকায় মাদ্রাসার উচ্চশিক্ষা কাযর্ক্রম ব্যাহত হয়। মাদ্রাসায় মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতে একটি পূণার্ঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি ছিল এ দেশের ওলামা একরাম, পীর-মাশায়েখ, ইসলামী চিন্তাবিদ, মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষাথীের্দর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শত বছরের এই দাবি পূরণ হয়েছে। বতর্মানে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাযর্ক্রম পরিচালিত হলেও শিগগিরই ঢাকার কেরানীগঞ্জে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন স্থায়ী ক্যাম্পাস হচ্ছে। সেখানে ৩০ একর জমি বরাদ্দ রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চূড়ান্ত অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া সৌদি সরকারের অথার্য়নে দক্ষিণ এশিয়ায় সবর্প্রথম ইসলামী অ্যারাবিক ইনস্টিটিউট হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বতর্মান উপাচাযর্ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহর নেতৃত্বে মাদ্রাসা শিক্ষাথীের্দর জন্য বিশ^মানের ইসলামী উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের সব ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসার ভতির্, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ অনলাইনে পরিচালিত হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সেশনজট নেই। প্রতিবছর শিক্ষাথীর্ সংখ্যা বাড়ছে। এতে প্রতিফলিত হয় ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর দেশের ওলামায়ে একরাম, পীর-মাশায়েখ ও শিক্ষক-শিক্ষাথীের্দর আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেশের সব ফাজিল, ফাজিল (অনাসর্) ও কামিল মাদ্রাসা পরিচালনার ভার ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যস্ত হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার অধীনে থাকাকালে ফাজিল অনাসর্ চালু ছিল ৩১টি মাদ্রাসায়। এ দিকে সারা দেশে ফাজিল অনাসের্র চাহিদা ছিল অনেক বেশি। শিক্ষাথীের্দর আগ্রহ ও মাদ্রাসার সক্ষমতা বিবেচনা করে জেলাভিত্তিক কয়েকটি মাদ্রাসায় ফাজিল (অনাসর্) চালু করা হয়েছে। বতর্মানে ৭৩টি মাদ্রাসায় ফাজিল (অনাসর্) কোসর্ চালু করা হয়েছে। জানা গেছে, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। জাতীয় অথৈর্নতিক পরিষদে (একনেক) গত ১৭ অক্টোবর ৪১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জে স্থায়ী ক্যাম্পাসে থাকবে শহীদ মিনার, প্রশাসনিক ভবন, প্রশিক্ষণ ভবন, মিলনায়তন, হাসপাতাল, স্কুল, মাদ্রাসা, উপাচাযর্ বাসভবন ও উপউপাচাযর্ ও কমর্কতাের্দর আবাসিক ভবন। এ প্রসঙ্গে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. রোশন খান বলেন, শূন্য হাতে উপাচাযর্ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা শুরু করেন। উপাচাযের্র নেতৃত্বে বিশ্বমানের ইসলামী উচ্চশিক্ষা প্রদানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। বতর্মানে ৭৩টি মাদ্রাসায় অনাসর্ কোসর্ চালু করা হয়েছে। ইসলামক আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামি স্কলার তৈরি হবেন উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ ছিদ্দিকী বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন করে কুরআন-হাদিস শাস্ত্রে পারদশীর্ দক্ষ আলিম তথা প্রকৃত জ্ঞানী গুণী ইসলাম ধমর্তত্ত¡বিদ তৈরি হবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাযর্ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহর নেতৃত্বে সেই লক্ষ্য নিয়ে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, মাদ্রাসার উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ইতিবৃত্ত শিক্ষাথীের্দর পাঠ্যসূচিতে অন্তভুর্ক্ত করা হচ্ছে। মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও আরবি, ইংরেজি এবং কম্পিউটার তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান দেয়া হচ্ছে। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাযর্ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। নিজস্ব ক্যাম্পাস নিমাের্ণ তার হাত দিয়ে জাতীয় অথৈর্নতিক পরিষদে (একনেক) গত ১৭ অক্টোবর ৪১৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। এ জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অপরিসীম কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমতা দিয়েছেন তার হাত দিয়ে একনেকে এটি পাস হয়েছে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন সবার্ত্মকভাবে সহযোগিতা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও সাবির্ক সহযোগিতা করেছেন।