বৈশাখের শুরু থেকেই অল্প অল্প বৃষ্টিতে প্রকৃতি তার রুক্ষতা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। তরুলতা আর গাছপালাগুলো সতেজ হতে শুরু করেছে। এই অল্প অল্প বৃষ্টির মাঝে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসও যেন নতুন করে সাজতে শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি করা বাগানগুলোতে নানা রঙের ফুল ফুটতে শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদ এবং গ্রীষ্মাকালীন ছুটি থাকাতে দর্শনার্থীরা এসে মোবাইলের ফ্রেমবন্দি হচ্ছেন এই ফুলের বাগানগুলোতে।

প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা বাগানটিতে ফুটেছে টগর, অপরাজিতা আর গাঁদা ফুল। এই বাগানেই কয়েক রঙের নয়নতারা আর গোলাপের দেখা মেলে। স্বাধীনতা চত্বরের দুই পাশের জবা ফুলের বাগানে ভরে উঠেছে জবা ফুল। তবে বৃষ্টির পানিতে সতেজতা ফিরে পেয়েছে বাগানের গাছগুলো।

শহীদ মিনারের সামনের জারুল গাছটি যেমন ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে তেমনি পাশে থাকা চন্দ্রপ্রভা আর কুরচি গাছটার ফুল মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। শহীদ মিনারের পেছনের বাগানে লতানো ফুলের আধিপত্যটাই বেশি। এখানে সন্ধ্যামালতী আর হলদে কসমসের এক অপূর্ব সমাহার। তবে পাশে ফুটে থাকা বেলি আর নানান রঙের নয়নতারা দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বাধ্য করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের দক্ষিণ পাশ থেকে উত্তর পাশ পর্যন্ত পুরো এলাকাটা ভরে আছে বাহারি ফুলে। এখানে রঙ্গনের ছোট গাছগুলোতে আসা ফুলগুলো ভিন্ন এক পরিবেশ তৈরি করেছে। তবে পাশাপাশি থাকা মধুমঞ্জুরী তার সৌন্দর্য ছড়িয়ে কাছে নিয়ে যাচ্ছে দর্শনার্থীদের।

সুবর্ণজয়ন্তী রোভার মুট ২০২৪

লেকের পাশ ঘেঁষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ মু্যরাল 'জনক জ্যোতির্ময়'-এর রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে দেখা মিলবে রাঁধাচূড়া গাছের। হলদে লাল রঙের ফুলের ছায়া লেকের পানির সঙ্গে যেন এক মধুর মিতালী তৈরি করেছে।

রাঁধাচূড়া গাছ ফেরিয়ে গেলে দেখা মেলে চেরি ফুলের গাছ। গোলাপি রঙের ফুলগুলো সৌন্দর্য সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। লেকের ওপারে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, লেকের পানি আর এই গাছের ফুল ক্যামেরার ফ্রেমে যেন ভিন্ন এক পাবিপ্রবিকে উপস্থাপন করে।

তবে লেকের পাশে ভিন্ন এক আবহ তৈরি করেছে ল্যান্টানার কয়েকজাতের ফুল। গুল্মজাতীয় এই উদ্ভিদটি ছড়িয়ে আছে বড় একটা অংশজুড়ে। লাল, গোলাপি, সাদা রঙের ফুলের সংমিশ্রণ ল্যান্টানার বাগানে এক বৈচিত্র্যতা এনে দিয়েছে। প্রতিদিন বিকালেই এই বাগানটির পাশে বসে দর্শনার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেখা যায়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ মু্যরাল 'জনক জ্যোতির্ময়' দুইপাশের বাগানেই গাঢ় লাল, গোলাপী, সাদা রঙের নানান জাতের গোলাপ ফুটে আছে। লেকের পাড় দিয়ে 'জনক জ্যোতির্ময়' দেখতে গেলে এই গোলাপের বাগান দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে।

ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে আরিফুল হক নামের এক দর্শনার্থী জানান, এক ভিন্ন রকম ক্যাম্পাস দেখতে পাচ্ছি। আগে এরকম ছিল না। চারপাশের এখন ফুলের বাগান করা হয়েছে। বিকালের এই আবহাওয়ায় ক্যাম্পাসের এই সুন্দর পরিবেশে আমি মুগ্ধ।

আরেক দর্শনার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখেছি। প্রশাসনিক ভবন, স্বাধীনতা চত্বর, শহীদ মিনার, লেক সব জায়গাতেই ফুলের বাগান। বাগানগুলোতে ফুল ফুটে আছে। এটা দেখে ভালো লাগছে।