তারুণ্যের বিজয় ভাবনা

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, মুক্তির দিবস। বিজয় দিবস আসলে আমাদের ভাবনা মনের হৃদয়ে উঁকি দিতে থাকে। তাই এদিন আমাদের সবার অতি প্রিয়, অতি আনন্দের দিন। এই দিনটির মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মকে ও বিশ্বকে বারবার মনে করিয়ে দিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা, শহীদদের কথা...

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

রুমান হাফিজ
১৯৭১ সালে ২৫ মাচের্র পর থেকে সুদীঘর্ ৯ মাস বাংলার দামাল ছেলেরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীনতার দুয়ারে নিয়ে উপনীত হয়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঝঁাপিয়ে পড়ে বাংলার আবালবৃদ্ধবনিতা। ফলে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অজির্ত স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণের দিন এসে ধরা দেয়। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের জাল ভেদ করে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের প্রভাতী সূযের্র আলোয় ঝিকমিক করে উঠেছিল বাংলাদেশের শিশির ভেজা মাটি। অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরের নিবির্চার শোষণ, বঞ্চনা আর নিযার্তনের কালো অধ্যায়। তাই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, মুক্তির দিবস। বিজয় দিবস আসলে আমাদের ভাবনা মনের হৃদয়ে উঁকি দিতে থাকে। তাই এদিন আমাদের সবার অতি প্রিয়, অতি আনন্দের দিন। এই দিনটির মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মকে ও বিশ্বকে বারবার মনে করিয়ে দিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা, শহীদদের কথা। মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশ নামে একটি দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে সবর্স্ব উজাড় করে এগিয়ে আসার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের তারুণ্যের অবদান অপরিসীম। এই দিনকে নিয়ে বড়দের মতো আমাদের তরুণ প্রজন্মের কল্পনায়ও উঁকি দেয় কত কথা কত স্বপ্ন। বৈষম্যহীন নিরাপদ দেশ হোক আমার ভাবনা হলো সব ধরনের বৈষম্যহীন একটি নিরাপদ দেশ। যেখানে একজন আরেকজনকে শত্রæ না ভেবে একে অন্যের মিত্র হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করে যাবে সবাই। যেখানে নিজের মানুষের ভিড়ে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কাউকেই ভাবতে হবে না। স্বাধীন দেশের একটি ক্ষুদ্র বস্তুও হবে প্রতিটি মানুষের জন্য নিরাপদ। মাথার উপরের এক আকাশ আর পায়ের নিচের একই মাটির মানুষের মধ্যে থাকবে না কোনো দ্ব›দ্ব। আর এসব উদ্দেশ্যে তো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ করা, প্রাণ বিলিয়ে দেয়া অতঃপর বিজয় নিয়ে আসার মূলে ছিল। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাশা ছিল দেশটা এমনি হবে। এতকষ্টে অজির্ত বিজয় কেবল তখন পূণর্ মূল্যায়ন হবে যখন নিজেরা নিজেদের আপন ভাবতে পারব। তবেই এই বিজয়ের পূণর্ স্বাথর্কতা নিশ্চিত হবে। মীর মাইনুল ইসলাম ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সফল রাষ্ট্রের কারিগর হতে চাই সাতচল্লিশ বছর হয়ে গেল আমরা নিরাপদে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে জানান দিচ্ছি আমাদের স্বাধীনতা। উদযাপন করছি বিজয় দিবস। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবময় ইতিহাসের ঘটনাগুলো দেখিনি। তবে ইতিহাস থেকে পড়েশুনে জেনেছি, জানছি। উন্নয়নের সোপান বেয়ে পদ্মাসেতু গড়ে উঠছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু পথ এখনো অনেক বাকি! যে গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, সে গণতন্ত্রের চচার্ কতটুকু হচ্ছে? কতটা ভালো আছি আমি, আমরা, এই দেশটা? স্বপ্ন দেখি এই ছোট্ট দেশটা একদিন অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সেই সফল রাষ্ট্র গড়ার এক ছোট্ট কারিগর হতে চাই। মালিহা ইয়াসমিন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বের বুকে এক অপরাজেয় জাতি ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অজের্নর পর বাংলাদেশিরা বিশ্বের বুকে এক অপরাজেয় জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এ বিজয় এখনো যে কোনো ক্ষেত্রে আমাদের জয় ছিনিয়ে আনতে সাহস জোগায়। ইতিহাসের এক হিংস্র ও নিকৃষ্ট পাক-বাহিনীর কাছ থেকে যদি আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারি, তা হলে আজ কেন আমরা দেশের অভ্যন্তরীণ দলাদলি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও পাশবিকতাকে পরাভ‚ত করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দঁাড়াতে পারি না? প্রতিটা বাংলাদেশির মতো আমিও স্বপ্ন দেখি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের। যে স্বপ্নটা দেখেছিলেন জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সে স্বপ্নটা পূরণ করতে পারব এমনটাই আশা। বাক-স্বাধীনতা, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এ দেশে যেন আকাশ-কুসুম কল্পনার মতো। এই আকাশ-কুসুম কল্পনা একদিন বাস্তবায়িত হবে এ দেশে। সন্ত্রাসবাদ, দুনীির্ত, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতার কালো আলখাল্লা আমাদের দেশটাকে আরও পিছনে নিয়ে যেতে চাইছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় সবাই মিলে প্রতিরোধ না করলে পিছিয়ে পড়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না আমাদের।’ মো. আবীর আলী আন্তজাির্তক সম্পকর্ বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়