রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একজন আদশর্ শিক্ষকের গল্প

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

আসিফ হাসান রাজু
গবেষক, শিক্ষানুরাগী বহুমাত্রিক কৃতিত্বের অধিকারী একজন আলোকিত মানুষ, যিনি ছাত্রবান্ধব, অসহায় মানুষ ও সমাজের জন্য নীরবে-নিভৃতে কাজ করে চলেছেন। শিক্ষার আলোতে সমাজকে আলোকিত করার মহান ব্রত নিয়ে যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন; যে মানুষটি তার নাম ড. প্রভাষ কুমার কমর্কার। সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষার আলোকে ছড়িয়ে সমাজ, দেশ ও একটি শিক্ষিত জাতি বিনিমাের্ণ দিন-রাত অবিশ্রান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি। সব শ্রেণির মানুষকে নিমিষেই আপন করে নেয়ার গুণ রয়েছে তার মধ্যে। তিনি সবার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন খোলা মনে। প্রফেসর প্রভাষের জীবনের একমাত্র ব্রত জাতির জনকের আদর্শকে লালন করে দেশ, সমাজ ও মানুষের জন্য কাজ করা। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী এককজন শিক্ষক হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত মুখ। শিক্ষকতার এ মহান পেশাকে তিনি তার জীবনের সব থেকে বড় অজর্ন মনে করেন। তিনি এক বিবেকবান মহিরুহ। ১৯৭২ সালের ১৫ জুন ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুÐু উপজেলার সোনাতনপুর গ্রামের শ্রী রনজন কুমার কমর্কার ও স্বগীর্য় দুলালী রাণী কমর্কারের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন প্রফেসর প্রভাষ কুমার কমর্কার। বতর্মানে তিনি সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। শিক্ষা জীবনের প্রথম হাতে খড়ি নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরবতীর্ সময়ে হরিণাকুÐু পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৮৯ সালে জেলার কে সি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীণর্ হন। পরে বিএসসি অনাসের্ ভতির্ হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে। ১৯৯২ সালে তিনি বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে সাফ্যলের সঙ্গে উত্তীণর্ হন। পরবতীর্ সময়ে একই বিভাগ থেকে ১৯৯৩ সালে এমএসসি ডিগ্রিতেও প্রথম স্থান অধিকার করেন প্রফেসর প্রভাষ। ২০০৯ সালে “ওহাবংঃরমধঃরহম ঃযব ওহঃবৎৎবষধঃরড়হংযরঢ় ধসড়হম ঃযব াধৎরড়ঁং ভধপঃড়ৎং রহ ইড়ৎড় জরপব চৎড়ফঁপঃরড়হ ড়ভ ইধহমষধফবংয” শিরোনামে ইকোনোসেন্টির ওপর পি এইচডি ডিগ্রি অজর্ন করেন তিনি। কমর্জীবনের শুরুতে ১৯৯৯ সালে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে পরিসংখ্যানের শিক্ষক হিসেবে প্রভাষক পদে যোগ দেন। পরবতীর্ সময়ে একই বছর মানুষ গড়ার এ কারিগর যোগ দেন নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগ পরিসংখ্যানে। পেশাগত জীবনে তিনি আন্তজাির্তক কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর, পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আন্তজাির্তক সেমিনারে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া বতর্মানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলের শিক্ষক, সহকারী প্রক্টর, ছাত্র-উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বতর্মানে বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সদস্য, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সংগঠনের আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য হিসেবে যুক্ত আছেন। পাশাপাশি তারই হাত ধরে নিজ বিভাগের চারজন শিক্ষাথীর্র পিএইচডি, এমফিল ডিগ্রি অজর্ন করেছে। একাডেমিক কাজের পাশাপাশি অনেকগুলো সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। প্রবীণ এই গবেষকের এ পযর্ন্ত প্রায় ২৭টির ঊধ্বের্ দেশ- বিদেশের বিভিন্ন জানাের্ল প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। গুণী এই মানুষটির জামার্ন থেকে ঞযব ওসঢ়ধপঃ ড়ভ ঈড়হঃৎরনঁঃড়ৎু ঋধপঃড়ৎং ড়হ ইড়ৎড় জরপব চৎড়ফঁপঃরড়হ একটি বইও প্রকাশিত হয়েছে। ২০১২ সালে গবেষণায় অবদানের জন্য মালয়েশিয়ার ইউপিএম হতে ঊীপবষষবহঃ চবৎভড়ৎসধহপব অধিৎফ ২০১২ ভ‚ষিত হন তিনি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অজর্ন করেন বিভিন্ন গোল্ড মেডেল। ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল নিজেকে শিক্ষার ক্ষেত্রে উৎসগর্ করা। আজকের এই অবস্থানে আশার পেছনে পরিবার, শিক্ষকদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন তিনি। নিজের ওপর আস্থা রাখাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘সবর্দা নিজের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। জীবনের সাফল্যে সবাই সঙ্গী হতে চাইলেও ব্যথর্তার দায় একান্ত নিজেকেই বহন করতে হয়। তাই সফল জীবন পেতে আত্মবিশ্বাসের কোনো বিকল্প নেই।’ তার শত ব্যস্ততা সত্তে¡ও আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশীর বিপদে স্থির থাকতে পারেন না, ছুটে যান সবার আগে। সমাজের অসহায় ও নিরন্ন মানুষদের সাহায্য করেন গোপনে।