চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

খৈয়াছড়া ঝণার্য় একদিন...

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

রুমান হাফিজ
খৈয়াছড়া ঝণার্র পাশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীর্রা
আড্ডা দিচ্ছিলাম ভাসিির্টর বুদ্ধিজীবী চত্বরে। মাহবুব এসে যোগ দিল। কথা চলছিল নানা বিষয়ে। হঠাৎ মাসুম ভাই সবাইকে থামিয়ে দিল। Ñআচ্ছা, সামনের দুদিন তো অফ ডে। কাছাকাছি কোথাও ঘুরে আসা যায় কি-না! সঙ্গে সঙ্গে মাহবুব বসা থেকে উঠে পড়ল। ও সব কিছুতেই একটু বেশি আবেগ প্রকাশ করে! -হুম, যাওয়া যায়। সঙ্গে পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগের নাইম ভাইও যোগ দিলেন। আমি আর না করি কেমনে! তিনজনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলাম। এখন কথা হচ্ছে, কাছাকাছি কোথায় যাওয়া যায়। সবাই ভাবল কিছুক্ষণ। কেউ কাছের আবার কেউ দূরের জায়গাগুলোর নাম বলতে লাগল। যাকগে, এবার মাসুম ভাই বললেন, Ñআমরা তো খৈয়াছড়া ঝণার্য় যেতে পারি। কাছাকাছি আছে। আবার একটু হলেও পাহাড় বেয়ে ঝণার্ দেখাতে অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে কারও দ্বিমত না হওয়াতে নিধাির্রত সময়ে আমরা রওয়ানা করি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত খৈয়াছড়া ঝণার্র উদ্দেশ্যে। আমাদের সাথে আরও যোগ দিলেন, শরীফ ও কামরুল ভাই পেঁৗছাতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। তবে মেইন রোড থেকে ঝণার্ যেতে আবার সিএনজিতে চড়তে হয়। তারপরের সব পথই হঁাটার। উঁচুনিচু পথ পাড়ি দিতে হয়। জায়গাটা বেশ নীরব। তার ওপরে গহিন অরণ্যবেষ্টিত। ভয় একটু হলেও কাজ করছিল। গরমে সবাই হঁাপিয়ে উঠছিলাম। সঙ্গে রাখা পানি একটু পর পর সবাই গিলতে লাগলাম। মাসুম ভাই তার বেসুরা গলায় গানের কিছু লাইন উচ্চারণ করার চেষ্টা করেননি যে, তা নয়। তবে পেরে উঠতে সক্ষম হলেন না। কারণ, উনার কণ্ঠ বেজে ওঠার আগেই নাইম ভাই সে রকম বিরক্তিভাব নিয়ে থামিয়ে দিতে সময়ক্ষেপণ করেননি। বিষয়টি মজার ছিল! এভাবে কিছুক্ষণ পর পেঁৗছলাম ঝণার্য়। ওপর থেকে নেমে আসা শীতল পানির ছিটা গায়ে লাগতেই সব ক্লান্তি যেন মুহূতের্ই হারিয়ে গেল! কাপড়চোপড় পাল্টে নিয়ে ঝণার্র স্বাদ আস্বাদন ব্যস্ত বয়ে গেলাম। মূল আকষর্ণ তো পাহাড়ের ওপরেই। সুতরাং সবাই সেখানে যাব। এ জন্য পাড়ি দিতে হবে উঁচু এবং ঢালু পাহাড়। নিচ থেকে দেখেই তো আমার স্বাদ চুপসে গেল! এত্ত উঁচু পাহাড়, তাও উপরে উঠতে হবে দড়ি ধরে! সাহস সঞ্চার করে সিদ্ধান্ত নিলাম। আমাকে উঠতেই হবে। ওপরের একটা ধাপে থামলাম। কাপড় পরিবতর্ন করে নিলাম সবাই। সঙ্গে সঙ্গে ঝঁাপিয়ে পড়লাম ঝণার্র শীতল পানিতে। উপযুর্পরি ডুব দিলাম এদিক-ওদিক। দুগর্ম উঁচু পাহাড় বেয়ে ওঠার সব কষ্ট যেন শীতল পানির সঙ্গে করে ভেসে গেছে। একজন আরেকজনের ওপর পানি ছিটিয়ে দিতে গিয়ে মনে হচ্ছিল সেই ছোট্ট বেলার দুরন্ত শৈশবে চলে গেছি। অবস্থা এমন যে, দুরন্তপনায় কেউ থেকে যেন কেউ কম যান না! কম সময়ের এই ভ্রমণটা বেশ ভালোই উপভোগ্য ছিল। বাংলাদেশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক ঝণার্গুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে খৈয়াছড়া ঝণার্ অন্যতম একটি। চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যানের ভেতরে অনিন্দ্য সুন্দর এই ঝণার্র অবস্থান। একে একে নয়টি বড় ধাপে এই ঝণার্ থেকে অনবরত পানি ঝরছে। কম সময়ে কাছের কোনো জায়গায় ঘুরে আসতে পেরে বেশ ভালোই লাগলো। এ জন্য স্পেশালি থ্যাংকস মাসুম আহমদ ইকবাল ভাইকে!