স্বপ্ন পূরণের প্রথম দিন...

কিছুটা ভয়, কিছুটা উত্তেজনা। কপাল ঘামানো, মুখ শুকানো। পানির পিপাসা। নতুন পরিবেশ। অজানা পরিস্থিতি। ক্যাম্পাসে প্রথম দিন।

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

আসিফ হাসান রাজু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগার্নাইজেশন স্ট্যাট্রেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগে ২০১৮-১৯ সেশনে ভতির্ হয়েছেন দিনাজপুরের মেয়ে সোমা জামান। ক্যাম্পাসের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মফস্বল শহরে আমার জন্ম। প্রথম থেকেই স্বপ্ন ছিল দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠে অধ্যায়নের। ছোটবেলা থেকে সেই লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আজ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষাথীর্। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনটা আমার কাছে সব থেকে বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষ করে এদিন সকালে মনটা খুব লাফাচ্ছিল! রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি। ঘুম না হলেও উত্তেজনায় ক্লান্তি একেবারে উড়ে যাওয়ার জোগাড়। আজ যে প্রাচ্যের অক্সফোডের্ প্রথম যাচ্ছি। প্রথমবারের মতো ক্লাস করতে! ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। একেবারে শরীর ঠাÐা হয়ে যাওয়ার উপক্রম। প্রথম দিনের স্মৃতিমাখা এ দিন আমি কোনো দিনও ভুলতে পারব না।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের আরেক শিক্ষাথীর্ তাসলিমা আক্তার জানান, ‘ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল একজন আইনজীবী হব। আজ সেই স্বপ্ন যাত্রার প্রথম দিন। প্রথম দিন ক্লাসে আসার আগে অনেক কিছু ভেবেছি, ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য কোন ড্রেস পরব, কী করব, এমন নানা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল অবশেষে সেই সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে আজ সেই দিনটা পূরণ হলো। নতুন মুখ! নতুন জায়গা! এমন পরিস্থিতিতে আমি নিজেকে আজ নিজে উপলব্ধি করতে পেরেছি। আগামীতে চাই একজন আইনজীবী হিসেবে দেশের সেবা করতে।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষাথীর্ শুভ্রজামান বলেন, ‘ক্যাম্পাসের প্রথম দিন আমার জীবনে পাওয়ার সব থেকে স্মরণীয় একটি দিন। ছোটবেলা থেকে বাংলা সাহিত্যের প্রতি আমার এক ধরনের ভালোলাগা ছিল। সেই বাংলা বিভাগে ভতির্ হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। বিভাগের সবাই আমাদের যেভাবে আপন করে নিয়েছেন তা কখনো ভুলব না। প্রথম দিন যখন ক্যাম্পাসের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি তখন এক চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল। যখন শাটলে করে ক্যাম্পাসে আসি নিজেকে অনেক বেশিই ভাগ্যমান মনে হচ্ছিল। আমি আজ চবির শিক্ষাথীর্। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভতির্র আগে শুনেছিলাম র‌্যাগিংয়ের বিষয়ে। তবে এখানে এসে সেই ধারণা পাল্টে গেছে।’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষাথীর্ সাফায়েত উল্লাহ রুম্মান বলেন, ‘ভতির্র আগে ভাবতাম যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীর্ হতে পারতাম! কিন্তু আজ যখন শিক্ষাথীর্ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গÐিতে পা রাখি তখনকার অনুভ‚তি ব্যাখ্যা করার মতো ভাষা আমার নেই। তবে এটুকু বলব স্বপ্ন সারথী হিসেবে যে বিশ্ববিদ্যালয়কে পেয়েছি, তার মাধ্যমেই নিজেকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই’। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের লাইমা তাবাচ্ছুম ইশিতা বলেন, ‘জীবনে স্বপ্ন পূরণের এ দিনটি আমার কাছে হয়ে রবে সব থেকে এক স্মরণীয় দিন। মফস্বলের ক্যাম্পাস হলেও সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাসের শিক্ষাথীর্ হিসেবে নিজেকে গবির্ত মনে করি। স্কুল থেকে শিক্ষা সফরে প্রথম যখন এই ক্যাম্পাসে আসি তখন থেকেই এখানকার একজন শিক্ষাথীর্ হতে চেয়েছি। আজ আমার স্বপ্ন পূরণের প্রথম দিন। আমি চাই যে ইচ্ছাগুলো মনের মাঝে জমা করে রেখেছি তা সব একদিন পূরণ হবে।’