নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

১০১ একরের সেকাল একাল

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

সাজ্জাদ যোবায়ের
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাসের একাংশ
সারা বাংলাদেশে নোয়াখালী জেলা এবং এ জেলার মানুষের আলাদা একটা পরিচয় সমাদৃত। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ও পরে এবং বর্তমানে দেশের শিক্ষাঙ্গন, রাজনৈতিক প্রাঙ্গণ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বাংলার এই দক্ষিণ জনপদের মানুষের নেতৃত্বের কারণেই এই অঞ্চলকে মানুষ অন্যভাবে দেখে। নোয়াখালীর গ্রহণযোগ্যতা সারাদেশব্যাপী ক্রমেই বাড়ছে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুকরণে। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) এ অঞ্চলের মানুষের কাছে অন্যতম প্রধান দর্শনীয় স্থান। নোয়াখালী জেলা শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে হাজী ইদ্রিস সড়কের পশ্চিম পাশে ১০১ একর জায়গায় নিজের অবস্থান করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয়টি। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-২০০১ কার্যকর করার মাধ্যমে ২০০৬ সালের ২৩ জুন সর্বপ্রথম একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বৃহত্তর নোয়াখালীর সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ নোবিপ্রবি প্রতিষ্ঠাকালীন হিসেবে বাংলাদেশের ২৭তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। স্বপ্নিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের সবকয়টি জেলার শীর্ষ মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্ন পূরণে ভর্তি হয়। নোবিপ্রবির প্রধান ফটকের ভেতর দিয়ে দৃষ্টি গেলেই আর ফেরাতে ইচ্ছা করবে না। ফটক পার হলেই চোখের সামনে দৃশ্যমান থাকে বঙ্গবন্ধু মু্যরাল। তারপাশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জামে মসজিদ। বিশালাকার প্রশাসনিক ভবনের সামনে পুষ্পশোভিত মুক্তিযুদ্ধ চত্বর। হাজী ইদ্রিস অডিটোরিয়াম (নোবিপ্রবি টিএসসি)। ২টি একাডেমিক ভবন, দৃষ্টিনন্দন লাইব্রেরি ভবন, ৫টি আবাসিক হল (২টি নির্মাণাধীন)। নোবিপ্রবির নীল দীঘি। অন্যরকম জলরাশিরর সমাহার। ক্লাশ ছুটিতে কিংবা পড়ন্ত বিকেলে দলবেঁধে আড্ডার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয় এই নীল দীঘির তীর ঘেঁষা সবুজ ঘাস। দীঘির অতল জলরাশি তীরে বসা যুগলবন্দিদের মুগ্ধ করে রাখে। গানের আসরে গিটারের টুংটাং শব্দে পার্ক ক্যাফেটেরিয়ার চারপাশ বিমোহিত রাখে আড্ডাবাজদের। ক্যাম্পাসের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের দৌড়ঝাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ তার স্বাভাবিক চাঞ্চল্যতা ফিরে পায়। বৃষ্টির দিনে ময়নাদ্বীপকে ঘিরে রহস্যের গন্ধটা থেকেই যায়। নৌকাযোগে সেখানে যাওয়ার স্বপ্ন অনেকের স্বপ্নেই ভালো মানায়। নোবিপ্রবি লন্ডন রোডের ( শিক্ষকদের আবাসিক এলাকার ভেতরের রাস্তা) আশপাশে ঋতুকালে ধবধবে সাদা কাশফুলের সমাহার দেখেই মন জুড়ে যায়। তখন গাইতে ইচ্ছে করে 'আমার মন যেখানে, হৃদয় সেখান' নোবিপ্রবি ব্যাকলগ বন নামে পরিচিত সেই বিখ্যাত বন নিয়ে বিতর্ক চলছে, চলবে। ধারণা করা হয়, ব্যাকলগ দিয়ে এই বনে এসে কেউ কেউ স্বস্তি খুঁজে। হতাশার মোড়! একেকটি করুন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে হতাশদের একীভূত করে। দেশের প্রায় সবকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম একটি প্রসিদ্ধ মোড় থাকে। নোবিপ্রবিও কম যায় না। এই মোড়ের পেছনের ইতিহাস চরম হৃদয়বিদারক। পড়ন্ত বিকেলে কিছু মানানসই জুটিকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। অনেকের ভবিষ্যৎ বন্ধনটা এখান থেকেই শুরু। বন্ধনটা যে আয়নিক!!!ভালোবাসার গল্প, ভালোলাগার গল্পে নোবিপ্রবিও কম যায় না। হাজারো ভালোবাসা, হাজারো গল্প, হাজারো স্মৃতি আর হাজারো তরুণ- তরুণীর পদচারণায় নোবিপ্রবির ক্যাম্পাস মুখরিত থাকে প্রতিটি মুহূর্ত। ভালো থাকুক ভালোবাসার ক্যাম্পাস, ভালো রাখুক ভালোবাসার ১০১ একর।