ই স লা মী বি শ^ বি দ্যা ল য়

খেলাধুলায় প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

ইমানুল সোহান
ক্লাসের ফঁাকে বষার্র রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে চলে ফুটবল খেলা
তখনও সূযের্র আভায় আলোকিত হয়নি ক্যাম্পাস। কিন্তু তারুণ্যের ছুটে চলা শুরু হয়েছে। মাঠের মধ্যে চলছে ব্যায়াম। চলছে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলা। লক্ষ্য একটাই শরীর সুস্থ রাখা। বলছি ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের একদল মেধাবী ফুটবলারের কথা। যারা সকালের আভায় নিজেদের তৈরি করছে যোগ্য ফুটবলার হিসেবে। এই দলের অনেকে দেশের নামকরা ফুটবল ক্লাবে খেলে থাকে। এ দলের কবির ঢাকা সাইফ স্পোটিং, বাবু আরামবাগ, রহিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সাদ্দাম অগ্রণী ব্যাংক ও রয়েল বিজেএমসিতে খেলে থাকে। ফলে সবসময় তাদের পদচারণায় মুখরিত থাকে ক্যাম্পাস। এ ছাড়াও ক্যাম্পাস চলাকালে চোখে পড়বে খেলাধুলার দৃশ্য। আর বিকেলের দৃশ্য দেখলে ক্যাম্পাসকে ফুটবল একাডেমি বলে মনে হবে অনেকের। কারণ ফুটবল কিংবা ক্রিকেট মাঠ সবখানে চলে খেলাধুলা। কেউ খেলছে ক্রিকেট কেউবা ফুটবল। বিশেষ করে বিশ^কাপ উন্মাদনার রেশে ক্যাম্পাসে বেড়েছে ফুটবল খেলা। ক্লাসের ফঁাকে বষার্র রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে চলে ফুটবল খেলা। কাদামাটির সঙ্গে চলে অন্যরকম খুনসুটি। বন্ধুত্বের মাঝে চলে কাদা ছোড়াছুড়ির প্রতিযোগিতা। সবই দেখা মেলে ১৭৫ একর ক্যাম্পাসে। খেলাধুলায় সোনালি অতীত রয়েছে এই বিশ^বিদ্যালয়ের। এই বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীর্রা দেশের হয়ে খেলাধুলায় অবদার রাখছে। বতর্মানে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ফাহিমা খাতুন এই বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রী। যার বোলিং নৈপুণ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল জয়লাভ করেছে। আরেকজন আবদুল্লাহ আল হিল-কাফি। সবার কাছে নামটি অতি পরিচিত হওয়ার কথা। যার নেতৃত্বে ২০০৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেয়। এ ছাড়াও দেশের দ্রæততম মানব নামে খ্যাত শামসুদ্দিন এই বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীর্ ছিল। যে কিনা ২০০৪ সালে গ্রিসে অনুষ্ঠিত ২৮তম অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে। সবচেয়ে গৌরবের বিষয় হচ্ছে তামান্না খাতুন। যিনি ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত যুব বিশ^ হকি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ দলের হয়ে অংশগ্রহণ করে স্বণর্পদক লাভ করে। একই বছর তিনি অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় বিশেষ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার গ্রহণ করেন। এ ছাড়াও আন্তঃবিশ^বিদ্যালয় ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় বিশ^বিদ্যালয়টি অন্য বিশ^বিদ্যালয়ের কাছে পরাশক্তি দল হিসেবে পরিচিত। এ পযর্ন্ত আন্তঃবিশ^বিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় বিশ^বিদ্যালয়টি ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়। ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অনাসর্ তৃতীয় বষের্র কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটবল আমার ধ্যান-জ্ঞান। আমি সাইফ স্পেটিং ক্লাপের হয়ে খেলে থাকি। খেলাধুলার কারণে ক্যাম্পাসটি আমার খুব ভালো লাগে। আমি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলতে চাই।’ ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দ্বিতীয় বষের্র শিক্ষাথীর্ মেহেদী হাসান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আসার পর খেলাধুলা দেখে আমার ভালো লাগত। পরে আমি বাস্কেটবল খেলা শুরু করি। আমার বন্ধু আমাকে সহযোগিতা করে। এ বছর আমি আন্তঃবিশ^বিদ্যালয় হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় বিশ^বিদ্যালয়ের হয়ে খেলি এবং চ্যাম্পিয়ন হই।’ বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বষের্র শিক্ষাথীর্ পপি খাতুন বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয় হলো প্রতিভা বিকাশের জায়গা। এই জায়গায় সবাই নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগায়। আমিও ক্যাম্পাসে এসে আমার প্রতিভাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। এ বছর আমি আন্তঃহল ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি এবং চ্যাম্পিয়ন হই। আমাদের ক্যাম্পাস খেলাধুলায় অনেক এগিয়ে।’ গণিত বিভাগের অনাসর্ শেষ বষের্র শিক্ষাথীর্ রাফসান বুলবুল বলেন, ‘সুস্থ দেহ এবং সুন্দর মনের সমন্বয় সাধনে খেলাধুলার বিকল্প নেই। ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাস আমাকে মেলে ধরার অনুপ্রেরণা জোগায়। আমি এটিকে উপভোগ করি। এরকম অনেক শিক্ষাথীর্র মুখে খেলাধুলায় প্রাণবন্ত ক্যাম্পাসের কথা শোনা যাবে। সবাই একসুরে বলবে মাদক, হতাশা ও সুস্থ সুন্দর জীবনের তাগিদে খেলাধুলার প্রয়োজন। যেটা ক্যাম্পাসের শিক্ষাথীের্দর মাঝে লক্ষ্য করা যায়। সব মিলে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় খেলাধুলায় এক অনন্য নাম। এই ধারা অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে এই ক্যাম্পাস থেকে বের হবে আগামী বাংলাদেশের মুস্তাফিজ।