পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

উচ্ছল আনন্দের একটি দিন

সোনালি রোদের খরতাপের ভিতরে বৃষ্টির ঝাপটা গায়ে লেগে আনন্দের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ছাত্রছাত্রীদের হাতে হাতে রং-বেরঙের ব্যানার, পস্নাকার্ড, ফেস্টুন, সঙ্গে রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার অবলম্বন রঙিন ছাতা। কেউবা আবার রোদ- বৃষ্টিকে তোয়াক্কা না করেই আনন্দের মিছিলে শরিক হয়েছেন...

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

ইমাদুল হক প্রিন্স
১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আনন্দ উচ্ছ্বাসে শিক্ষার্থীরা
ভোরবেলা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর রোদেও লুকোচুরি খেলা। সোনালি রোদের খরতাপের ভিতরে বৃষ্টির ঝাপটা গায়ে লেগে আনন্দের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ছাত্রছাত্রীদের হাতে হাতে রং-বেরঙের ব্যানার, পস্নাকার্ড, ফেস্টুন, সঙ্গে রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার অবলম্বন রঙিন ছাতা। কেউবা আবার রোদ- বৃষ্টিকে তোয়াক্কা না করেই আনন্দের মিছিলে শরিক হয়েছেন। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বর্ণিল কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ৮ জুলাই পালিত হলো দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম শুভ জন্মদিন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনটিতে উৎসবে-আড্ডায় মেতে উঠেছিল ক্যাম্পাসের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সবাই। রঙে রঙে দিনটি রঙিন হয়ে উঠেছিল তাদের কাছে। দেশের আধুনিক শিক্ষানগরী বরিশাল বিভাগীয় শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার পূর্বে দুমকি উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে ৮৯.৯৭ একর জমির ওপর অবস্থিত পবিপ্রবি ক্যাম্পাস। ১৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উৎসবের এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা রং-বেরঙের ব্যানার এবং ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা একাট্টা হয়ে আনন্দ উৎসবে মুখর করেছিল বন্যাকবলিত দক্ষিণাঞ্চলের এ পাদপীঠকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নিয়ে একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে জমায়েত হওয়ার পরে সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা আকাশে উড়িয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ এবং প্রোভিসি প্রফেসর মোহাম্মাদ আলী প্রতিষ্ঠা উৎসব অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এসময় জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা। এরপর সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ এবং প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মাদ আলী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে প্রশাসন ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ভাইস-চ্যান্সেলর এবং প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর, ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন, পবিপ্রবি দক্ষিণাঞ্চল তথা সমগ্র দেশের উচ্চশিক্ষা বিস্তারে যে অনন্য অবদান রেখে চলেছে তা দেশের মানুষ সারাজীবন মনে রাখবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের অফিস এবং ক্লাসে মনোযোগী হওয়াসহ সব ধরনের দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা, প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, হলগুলোর প্রভোস্টসহ সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের ব্যানার, ফেস্টুন, টি-শার্ট ও ক্যাপ দেয়া হয়। বিভিন্ন হল থেকে আশা শোভাযাত্রা প্রশাসন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। আগেই কৃষি অনুষদের ডিন ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাসেম চৌধুরীকে সভাপতি করে ৩৯ সদস্যবিশিষ্ট ১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস কমিটি গঠন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বিকাল ৪টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন খেলাধুলা। এ ছাড়া বিকাল ৫টায় উদীচী এবং বিকাল ৬টা ২০ মিনিটে আলোকতরী শিল্পীগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্বলন ও ফানুস উৎসব এবং রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এনিমিয়া ও টিউনক্রাফট এ ছাড়া সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বাধন পবিপ্রবি ইউনিটের উদ্যোগে দিনব্যাপী রক্তের গ্রম্নপ নির্ণয় করা হয়।