বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি

দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি (বিইউ)। এই বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে উপাচার্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী সবার সঙ্গে কথা বলে এই বিশেষ আয়োজনটিতে লিখেছেন। তাকে সহযোগিতা করেছেন জনসংযোগ বিভাগের প্রধান ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার সোহেল আহসান নিপু।

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
লেখাপড়া ও খেলাধুলা সবই হয় বালাদেশ ইউনিভার্সিটিতে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের উত্তর পার্শ্বে ৫/বি, বেড়িবাঁধ, মেইন রোড, আদাবর, মোহাম্মদপুরে অবস্থিত স্থায়ী ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি (বিইউ)'র শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া সংসদ ভবনের উল্টো দিকে মোহাম্মদপুরের আসাদ এভিনিউ এবং ইকবাল রোডে অবস্থিত ক্যাম্পাসেও আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শুরুতে বিবিএ (ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ও সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগে ১৭ জন ছাত্রছাত্রী ও ১১ জন শিক্ষক ছিলেন। আগামী নভেম্বরে ১৮ বছর পূর্ণ হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। এখন তিনটি অনুষদ 'ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলোজি (এফএসইটি)', 'ফ্যাকাল্টি অব আর্টস, সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ল' (এফএএসএসএল)', 'ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস (এফবিই)' আছে। ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (এফএসইটি) অধীনে চার বছরের বিএসসি ইন সিএসসি, গণিত, ফার্মাসি, ইইই (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং পাঁচ বছরের আর্কিটেকচারের ওপর বি. আর্ক ডিগ্রি দেয়া হয়। ফ্যাকাল্টি অব আর্টস, সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ল' (এফএএসএসএল) অধীনে বিএ অনার্স (ইংরেজি), বিএসএস (সমাজবিজ্ঞান), এলএলবিতে অনার্স প্রোগ্রাম রয়েছে। এ অনুষদের অধীনে গ্র্যাজুয়েটদের এক বছরের ইংরেজিতে এমএ ও দুই বছরের এমএ (প্রিলি অ্যান্ড ফাইনাল), এক বছরের মাস্টার্স অব ল' ও দুই বছরের মাস্টার্স অব ল' ডিগ্রি দেয়া হয়। 'ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস (এফবিই)' অধীনে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ), বিএসএস ইন ইকোনমিক্স ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এ ছাড়া মাস্টার্স প্রোগ্রাম হিসেবে এক বছরের রেগুলার বা নিয়মিত এমবিএ, চাকরিজীবীদের এক বছরের এক্সিকিউটিভ এমবিএ ও বিবিএ পাস করাদের জন্য এমবিএ ডিগ্রি আছে। অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, এইচআরএম মেজর হিসেবে নেয়ার সুযোগ রয়েছে। এখন এখানে প্রায় ছয় হাজার ছাত্রছাত্রী পড়ছেন। পূর্ণকালীন ১২৩ জন ও খন্ডকালীন ২২ জন শিক্ষক আছেন। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস ঢাকার আদাবরে অবস্থিত। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে তিনটি ক্যাম্পাস আছে। প্রতিটি ক্যাম্পাসের ক্লাসরুমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, এসি আছে। ক্লাস শেষে শিক্ষকরা লেকচার শিট দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গ্রম্নপ স্টাডির ওপর জোর দেয়া হয়। ক্লাস প্রেজেন্টেশন করতে হয়। প্রতিটি বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই 'ইংরেজি', 'কম্পিউটার' ও 'গণিত' কোর্স করতে হয়। তিনটি অনুষদেই আলাদা কম্পিউটার ল্যাব আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার সোহেল আহসান নিপু বললেন, 'শুধু মানসম্পন্ন শিক্ষাদানই নয়, আমরা ছাত্রছাত্রীদের কর্মক্ষেত্রের জন্য উপযোগী করে গড়ে তুলছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শেষ সেমিস্টারের ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এ ছাড়া বিভাগীয় প্রধানরাও উদ্যোগী হয়ে পরিচিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করেন।' সর্বোপরি ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণের প্রয়োজনে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন তাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন না ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। বইয়ের ভুবন ইকবাল রোডের মূল ভবনে সবচেয়ে বড় লাইব্রেরিটি আছে। সেটির অধীনে দুটি আলাদা ভবনে দুটি লাইব্রেরি আছে। লাইব্রেরিগুলোতে মোট ৩৫ হাজার বিষয়ভিত্তিক বই, জার্নাল আছে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি'র লাইব্রেরিতে এমারেল্ড ইনসাইট (ঊসবৎবধফ ওহংরমযঃ) সফট্‌ওয়্যারের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) জার্নাল যে কোনো ছাত্রছাত্রী পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারেন। আছে ছয়টি গবেষণাগার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান ল্যাবটি ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শহরকে সুন্দর ও বাস উপযোগী করে গড়ে তুলতে পরিবেশ, অবকাঠামো, শিল্পকারখানা, বিদু্যৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা-প্রযুক্তি নিয়েই মূলত এটি গবেষণা করে। গবেষণাগারের সমন্বয়ক মো. মাহমুদ হোসেন বলেন, ''২০১৩ সালে রানা পস্নাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা ও প্রাপ্তি নিয়ে গবেষণা করে আমরা তাদের প্রতিবন্ধকতা ও জীবন মানোন্নয়নের জন্য গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করেছি। ২০১৬ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিলে 'নগর অ্যাপ' তৈরি করেছি। এর মাধ্যমে নাগরিকরা সমস্যা, দুর্ভোগ সরাসরি সিটি করপোরেশনকে জানাতে পারবেন।'' এটি (যঃঃঢ়ং://ঢ়ষধু.মড়ড়মষব.পড়স/ংঃড়ৎব/ধঢ়ঢ়ং/ফবঃধরষং?রফ=পড়স.ড়ৎরড়হরহভড়ৎসধঃরপং.ফরমরঃধষফযধশধ্‌যষ=বহ) গুগল প্লে স্টোরে দেয়া হয়েছে। ক্রিকেটে সেরা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সহশিক্ষা কার্যক্রমের প্রতি জোর দিচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি ক্লাব আছে-'বিইউ কালচারাল ক্লাব', 'বিইউ সোশ্যাল ক্লাব', 'বিইউ ডিবেট ক্লাব', 'বিইউ স্পোর্টস ক্লাব', 'বিইউ কম্পিউটার ক্লাব', 'বিইউ বিজনেস ক্লাব' ও 'বিইউ ফার্মা ক্লাব'। ডিবেট ক্লাবটি ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই ক্লাবের উদ্যোক্তা সংগঠক ও পরিচালক (টেকনিক্যাল) কাজী সাইফ সাদাত বলেন, 'এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সেমিস্টারে খেলোয়াড় কোটায় দুজন ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়। তারা বিনা খরচে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। কোটায় ভর্তি হওয়া উলেস্নখযোগ্য খেলোয়াড়দের মধ্যে আছেন-জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার মো. আল-আমিন হোসেন, কলাবাগান ক্রিকেট দলের শাওন খন্দকার, অগ্রণী ব্যাংক ও রংপুর বিভাগীয় দলের মেহরাব হোসেন জোশি, ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট ক্লাবের রাইয়ান আনাস অন্যতম। ফলে ভালো খেলোয়াড়রাই আমাদের দলে রয়েছে। বিইউ ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন ও প্রাণ ভোমরা সাইমন আহমেদ প্রিমিয়ার লীগে অগ্রণী ব্যাংক, ন্যাশনাল লীগে রংপুর বিভাগের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।' ক্লাব ম্যানেজার সাদিক ইকবাল বলেন, 'আমরা ২০১৫ সালে ভারতের কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিবেক কাপ টি-টোয়েন্টিতে ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ২০১৬ সালে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত যথাক্রমে চতুর্থ এবং পঞ্চম ক্লেমন ইনডোর ইউনি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এ ছাড়া সেজান কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও এলএমএস ইউনি ক্রিকেট টুর্নামেন্টেও অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।' বিইউ কালচারাল ক্লাব বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা ছাড়াও নিয়মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে, জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে বিশ্ববিদ্যালয়কে সাহায্য ও সহযোগিতা করে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয় কাজী জামিল আজহার, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির (বিইউ) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান কাজী জামিল আজহার কাজী আজহার আলীর বড় ছেলে। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের 'ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক)' থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে 'ব্যাচলর অব সায়েন্স'; ২০০৩ সালে 'হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি' থেকে 'আইটিতে (ইনফরমেশন টেকনোলজি) 'মাস্টার্স অব সায়েন্স' ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে অরিয়ন টেকনোলজির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৮ সালে মাইক্রোসফট করপোরেশনের 'সিনিয়র টেকনোলজি আর্কিটেক্ট' হিসেবে কাজ শুরু করেন। এখন তিনি সরকারের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা। এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে কিভাবে 'বিইউ' পরিচালিত হয়? উপাচার্য মহোদয় ২০১০ সালের 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন' অনুসারে এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেন। অনুষদ, বিভাগের উন্নয়ন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য কল্যাণকর পদক্ষেপ নিজ নিজ অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানরা তার কাছে প্রস্তাবনা আকারে পেশ করেন। তিনি প্রয়োজনে নিজেই তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সেসব প্রস্তাবনা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভায় তিনি উত্থাপন করেন। ফলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়। আমরা যারা বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, তাদের সম্মিলিত আলোচনা, সিদ্ধান্ত এবং উপাচার্য মহোদয়ের সম্মতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর, কর্মোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থার ওপর জোর দিচ্ছেন কেন? আমরা এমন সব বিষয়ে পাঠদান করে থাকি, যেগুলো পড়ে ছাত্রছাত্রীরা সহজে নিজেদের দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে সক্ষম হয় এবং প্রতিযোগিতামূলক কর্মবাজারে নিজেদের যোগ্যতার মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে। তবে মানবসম্পদ উন্নয়ন কিংবা চাকরি লাভের জন্য লেখাপড়া শেখানোই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য নয়; তারা যেন সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগে দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে; সে জন্য প্রতিটি বিভাগেই আবশ্যকীয়, মৌলিক কোর্স হিসেবে 'ইংরেজি', 'গণিত' ও 'কম্পিউটার শিক্ষা' বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। 'বিইউ' থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার ছাত্রছাত্রী 'গ্র্যাজুয়েশন' করেছে। তারা বাংলাদেশের নামকরা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক কম্পানি, মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আইটি ফার্মসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে চাকরি করছে। আরো উন্নয়নের জন্য কী কী পরিকল্পনা নিয়েছেন? আমরা নিয়মিতই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণাসহ সার্বিক মানোন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নিই। বিভাগগুলোকে আরো উন্নত করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। যেমন-'সিএসই' ও 'ইইই' বিভাগে এমএসসি, অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞানে 'মাস্টার্স অব সোশ্যাল সায়েন্স (এমএসএস)' ডিগ্রি চালু করা হবে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে সেখানে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাকার্যক্রম চালু হওয়ায় ভবিষ্যতে স্নাতক পর্যায়ে 'শারীরিক শিক্ষা', 'গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা', 'সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং' কোর্স চালু করার পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করেছি। বিভাগগুলোর গবেষণাগারগুলোকেও আরো সম্প্রসারিত, উন্নত করাসহ আধুনিক গবেষণাযন্ত্র সংযোজনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতে গবেষণার সুযোগ ও মান বাড়বে এবং আমাদের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও গবেষকরা গবেষণা খাতে আরো অবদান রাখতে পারবেন। মানসম্পন্ন শিক্ষাদানই আমাদের লক্ষ্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক শরীফ, উপাচার্য, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির (বিইউ) উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক শরীফ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা জানালেন। আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসটি ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে তৈরি হয়েছে। সেটির ঠিকানা ৫/বি, বেড়িবাঁধ, মেইন রোড, আদাবর, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। ফলে ঢাকার ছেলেমেয়েরা ভর্তি হতে পারবে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পূর্ণাঙ্গ পরিবেশে পড়তে আসবে। আমাদের ছাত্রছাত্রী আশানুরূপ। ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সমাবর্তনে দুই হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো অনেক বাড়বে। একে আমরা বিশ্বমানের, আধুনিক ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলব। সে জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৫৩ হাজার বর্গফুটের বিশাল খেলার মাঠ আছে, তাতে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত খেলাধুলা করবে, তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটবে; ভালো ভালো ক্রীড়াবিদের জন্ম হবে। আর তাদের জ্ঞান ও মেধার বিকাশ ঘটাতে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমগুলো তো আছেই। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে নিয়মিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বিতর্কানুষ্ঠান, আইনের ছাত্রছাত্রীদের মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল প্রগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেগুলো স্থায়ী ক্যাম্পাসে আরো ব্যাপকভাবে করা হবে। অ্যাকাডেমিক লেখাপড়ার মান, সুবিধা বাড়ানোর আরো উদ্যোগ নেয়া হবে। সবগুলো শ্রেণিকক্ষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও প্রযুক্তি সুবিধাসম্পন্ন হবে। আমাদের প্রায় ৩৫ হাজার বইয়ের বিশাল লাইব্রেরি রয়েছে। লাইব্রেরিটির দেশ-বিদেশের লাইব্রেরিগুলোর সঙ্গে সংযোগ ঘটাতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে দুটি মিলনায়তন রয়েছে। ৩০০ আসনের মিলনায়তনে বিভাগীয় সেমিনার, কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। এক হাজার ৫০০ আসনের বিশাল মিলনায়তনে দেশ-বিদেশের বিশ্বমানের সেমিনার আয়োজন করা হবে। আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের আলাদা হোস্টেল থাকবে। মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা উন্নত পরিবেশে নিরাপদে জীবন কাটাবে। তারা লেখাপড়ায় আরো মনোযোগী হবে। মেয়েদের হোস্টেলের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধার দিকে বিশেষ নজর দেয়া হবে। পুরো ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা, অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার আশঙ্কা থাকবে না। ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা কমনরুম, গেমসরুম থাকবে। শুরু থেকেই আমরা অসচ্ছল অথচ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পদক্ষেপ নিয়েছি। ভালো ফলাফল করা ছাত্রছাত্রীরা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে কোর্স ফি'র ওপর ২০-১০০ শতাংশ ওয়েভার পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তারা এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো আর্থিক লাভ বা সুবিধা নেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, প্রশাসনের একমাত্র লক্ষ্য- 'বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি' নিজের পায়ে দাঁড়াক, সাবলীল ও স্বাভাবিক কার্যক্রমে সুপ্রতিষ্ঠিত হোক। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, এই বিশ্ববিদ্যালয় সারা বিশ্বের অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একই গুণাবলি অর্জন করবে, শিক্ষা-গবেষণার মান অত্যন্ত উন্নত হবে। শিক্ষার্থীদের গুণগত ও মানসম্পন্ন শিক্ষাদানই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।