উচ্চশিক্ষায় ভর্তিচ্ছুদের পাশে

প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রুমান হাফিজ ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৩ লাখেরও অধিক শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে গত ১৭ জুলাই দেয়া ফলাফলের ভিত্তিতে উত্তীর্ণ হয় প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই স্বপ্ন থাকে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির। কিন্তু জিপিএ-এর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করে ৭ লাখ শিক্ষার্থী। স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে তারা প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে দেয় অনেক আগে থেকেই। 'ভর্তিযুদ্ধ' নামে খ্যাত এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকার জন্য অনেকে কোচিংয়ে ভর্তি হয়, কেউ কেউ আশ্রয় নেয় প্রাইভেট টিউটরের, কারও আবার প্রস্তুতি নেয়া হয় সম্পূর্ণ নিজ থেকে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিতে পারার সুযোগ থাকায় তাদের প্রতিযোগী হিসেবে এসে যোগ দেয় আগেরবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা কিছু শিক্ষার্থী। সব মিলিয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গড়ে প্রতি বছর দাঁড়ায় প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ। এ সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু এই এতগুলো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা। প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন পদ্ধতি অনলাইনভিত্তিক হওয়ায় এবং অনেক শিক্ষার্থীই এদিক দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকায় তাদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। কবে কোথায় পরীক্ষা হবে, মানবণ্টন কত, একজন পরীক্ষার্থী কোন কোন ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবে- এসব ব্যাপারে সামান্য তথ্যের ভুলেই ভেঙে যায় অসংখ্য পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন। ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানার জন্য সিংহভাগ শিক্ষার্থীই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল; যার ফলে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। তাছাড়া আবেদনের ক্ষেত্রে ভুল এড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীরা ভিড় করে দোকানে যা একই সঙ্গে সময় এবং অর্থের অপচয়। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সঠিক সময়ে সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে পড়তে হয় বিভিন্ন জটিলতার মধ্যে; কখন কী পড়তে হবে, কীভাবে পড়তে হবে তারা বুঝতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গত কয়েক বছর থেকে সমন্বিত পরীক্ষার আয়োজন করতে চাইলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। ফলে বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষার্থীদের জন্য সেখানে যাতায়াত এবং গিয়ে থাকার জায়গা পাওয়া হয়ে দাঁড়াচ্ছে আরেক সমস্যা। এসব সমস্যা একজন ভর্তি পরীক্ষার্থীকে প্রতিযোগিতায় অন্যদের থেকে অনেকটা পেছনে ফেলে দেয়। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের এসব সমস্যার কথা মাথায় রেখে 'ঊঝচ খধন' নিয়ে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুদের জন্য সর্ববৃহৎ এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ পস্নাটফর্ম 'অফসরংংরড়হ অংংরধংঃধহঃ'। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রস্তুতি, ভর্তি তথ্য এবং ফর্ম ফিলাপ এখন একটি পস্নাটফর্মেই। তাদের এই অ্যাপের মাধ্যমে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ অ্যাডমিশন নোটিশ এবং তথ্য পাওয়া সম্ভব। পরীক্ষার্থীরা সহজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটগুলোয় তাদের ভর্তিযোগ্যতা যাচাই করতে পারবে। এছাড়া ওই ইউনিটগুলোতে আবেদন করা সম্ভব অ্যাপের সাহায্যে, ঘরে বসেই; এমনকি, অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড এবং সিটপস্ন্যানও দেখা যাবে অ্যাপের মাধ্যমেই। থাকছে এক্সাম ডেইটের কাউন্টডাউন এবং এসএমএস অ্যালার্ট, যার ফলে কোনো পরীক্ষার তারিখ ভুল হওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। এর পাশাপাশি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার জন্য থাকছে পিডিএফ সাজেশন, প্রশ্নব্যাংক, মডেল টেস্ট এবং লাইভ এক্সাম দেয়ার ব্যবস্থা। পড়ালেখা সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যাপারে লাইভ সাপোর্ট ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনাও নিতে পারবে অ্যাপে দেয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের থেকে। এছাড়া সেসব ভার্সিটিতে যাতায়াতের এবং থাকার ব্যবস্থাও করে দেয়ার চেষ্টাও করবে তারা। যাতায়াতের জন্য বাস ও ট্রেনের টিকিট কাটা যাবে অ্যাপ থেকেই। শুধু তাই নয়- এক্সামের পর রেজাল্টও দেখা যাবে এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই। মোট কথা, একজন ভর্তি পরীক্ষার্থীর যত ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন, তার প্রায় সবই পাওয়া যাবে এই অ্যাপ থেকে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং পরীক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিনিয়ত আপডেটের মাধ্যমে নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করা হচ্ছে এই অ্যাপটিতে, যা এটিকে করে তুলছে আরও বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি। অ্যাপটির ব্যাপারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিফুল বলেন, 'আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে অ্যাপের এসএমএস সার্ভিস। এর জন্য অনেক সময় সেইভ হয় এবং সহজেই সব ভার্সিটির আপডেট পাই। অ্যাপটির ব্যাপারে কথা হয় ঊঝচ খধন-এর প্রতিষ্ঠাতা আবদুলস্নাহ আল মামুনের সঙ্গে। তিনি জানান, 'ভর্তি পরীক্ষাকালে তার কোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিল না এবং সঠিক সময়ে সঠিক তথ্যের অভাব তাকে নানা বিপত্তিতে ফেলেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য কীভাবে এই পথটা সুগম করা যায় যেটা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন তিনি এবং অবশেষে ২০১৮ সঙ্গে তার কিছু বন্ধুর সহায়তায় অবশেষে 'অ্যাডমিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট' একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এবং গত বছর তারা তাদের পস্নাটফর্মের মাধ্যমে ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রত্যক্ষভাবে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে ভর্তি তথ্য সহায়তা প্রপ্রণ করেছেন এবং এই বছরে তাদের ইচ্ছা ১ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে প্রত্যক্ষ সহায়তা করা। সঠিক সময়ে সঠিক তথ্যের অভাবে যে ভেঙে না যায় আর একটি ভর্তিচ্ছুর স্বপ্ন এবং আগামীতে প্রতিটা শিক্ষার্থী যেন ঘরে বসেই সম্পূর্ণ ভর্তি প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারে সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন তারা।' এত এত সুবিধাযুক্ত এই অ্যাপটি পাওয়া যাচ্ছে গুগল পেস্ন স্টোরে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। তাই এখনই পেস্ন স্টোর থেকে 'অফসরংংরড়হ অংংরংঃধহঃ' লিখে সার্চ দিয়ে অ্যাপসটি নামিয়ে ফেলুন এবং শেয়ার করুন আপনার বন্ধু ও প্রিয়জনদের সঙ্গে।