কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

বষার্য় সৌন্দযের্র লীলাভ‚মি

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

স্বকৃত গালিব
ব্যস্ত ক্যাম্পাসে হঠাৎ বৃষ্টি, প্রকৃতিতে যেন এনে দেয় গম্ভীর এক নীরবতা
চারদিকে সবুজের সমারোহ। দৃষ্টিনন্দন লালমাটির পাহাড়। সুউচ্চ টিলা। নানা প্রজাতির পাখির কিচির মিচির। লালমাই বুকে ধবধবে সাদা রঙের সুউচ্চ দালান। প্রকৃতির এমন মনোলোভা লালমাই পাহাড়েই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। আর এই প্রকৃতির সঙ্গে বৃষ্টির যেন এক নিবিড় সম্পকর্ আছে। বৃষ্টির এই সম্পকর্ই যেন বষাের্মৗসুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি পরতে পরতে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রাস্তায় হেঁটে হেঁটে বৃষ্টিতে ভেজার অভিজ্ঞতা আমার এখানেই প্রথম। ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না সে অনুভূতি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগ থেকে ঘুরতে আসা মোনজ কুমার রায় এভাবেই তার অনুভূতির কথা জানান। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বষের্র ছাত্রী মুন্নি আক্তার বলছিলেন পড়াশোনার জন্য প্রয়োজন প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ। প্রকৃতির সঙ্গে বৃষ্টির এক নিবিড় সম্পকর্ রয়েছে। বষার্কালে প্রকৃতি সাজে নতুন রূপে। বৃষ্টিতে ভেজার ভেতরে একটি প্রাকৃতিক আবহ ও ভালোবাসা বিদ্যমান। তাই সুযোগ পেলেই বৃষ্টিতে ভিজি। ক্যাম্পাস কিংবা বাসা যেখানেই থাকি বৃষ্টিতে ভেজা একটা নেশার মতো। তবে ক্যাম্পাসের পরিপাটি সাজানো গোছানো সবুজ প্রকৃতি বষার্কালে অন্য রকম দেখায়। এ অনুভূতি বলে বুঝানো যাবে না। মুন্নির কথা শেষ না হতেই অনেকটা মুখের কথা কেড়ে নিয়ে সহপাঠী লিমা বলেন: ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে যখন প্রবেশ করি তখন রাস্তায় দু’পাশ দিয়ে সবুজ গাছের সমারোহ দেখে যেন চোখ ফেরানো যায় না। আর বষার্কালে ক্যাম্পাসের খেলার মাঠগুলো যেন সবুজ চাদরে ছেয়ে গেছে। মন চাই যেন,ঘাসের মধ্যে গিয়ে বসে থাকি। লিমা ও মুন্নির মত বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষাথীর্র একই রকম অনুভূতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বষার্ মৌসুমের সৌন্দযর্্য নিয়ে। শীত-বষার্-গ্রীষ্ম যে কোনো ঋতুতেই ষোলকলায় পূণর্ এই ক্যাম্পাস। কঁাঠালতলা, লালন চত্বর, ভালিবল মাঠ, পিএ চত্ব¡র, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এমন কোনো জায়গা নেই যে বষার্র অপরূপ সাজে সাজেনি। বষার্কালের আচমকা ক্ষণেক্ষণে বদলে যায় ক্যাস্পাসের দৃশ্যপট। বৃষ্টির এলোমেলো ঝঁাপটা থেকে বঁাচার জন্য দিগি¦দিক ছোটাছুটি শুরু হয় শিক্ষাথীের্দর। আবার অনেক শিক্ষাথীর্ বন্ধুদের সঙ্গে নেমে পড়েন রাস্তায় জলে ভেজার নেশায়। তবে বৃষ্টির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্বরগুলোতে চলে নানা রকমের আড্ডা, গান, কবিতা হরদম। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে গোল হয়ে একসাথে বসে মুড়ি মাখিয়ে খেতে খেতে খোশ গল্পে মেতে ওঠে। অনেক সময় আবাসিক হলের ছাত্ররা ফুটবল নিয়ে নেমে পড়েন খেলার মাঠে। বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার সময় ফেলে আসা শৈশবের স্মৃতিকে ঝালিয়ে নেন অনেকে। ক্যাম্পাসের ছোট ছোট লালমাটির সবুজ টিলাগুলো প্রকৃতিতে অপরূপ সৌন্দযর্ ছড়িয়ে দেয় বষার্র কোমল ছেঁায়া পেয়ে। আর এই কোমল ছেঁায়া পেয়ে ক্যাম্পাসের সবর্ত্রই ফুটে থাকে, হাজার রকমের নাম না জানা পাহাড়ি বুনো ফুলের সমারোহ। এই পাহাড়ি বুনো ফুলগুলোই সবাইকে জানিয়ে দেয়, প্রকৃতিতে বষার্র আগমনী বাতার্। বষার্র এই আগমনী বাতার্ পেয়ে পাহাড়ি বুনোফুলগুলো ক্যাম্পাসের প্রকৃতিকে যেন, নববধূর মতোন সাজিয়ে তোলে বছরের পর বছর ধরে।