রা জ শা হী বি শ্ব বি দ্যা ল য়

সাতাশের বন্ধুত্ব

বিশ্ববিদ্যালয় নামক পস্নাটফর্মে এসে পাওয়া যায় পরিবারের বাহিরে আরো একটি পরিবার। যে পরিবার রক্তের বন্ধনে না হলেও আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ। বন্ধুত্ব নামক পরিবারের কথা কখনই স্মৃতির পাতা থেকে ঝরে যাওয়ার নয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ব্যাচ টুয়েন্টি সেভেনের বন্ধুত্বের গল্প...

প্রকাশ | ০৭ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ছবি : আসিফ আহম্মেদ দিগন্ত
মো. উমর ফারুক স্কুল-কলেজের ছোট্ট গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ। পাড়ার প্রাণের বন্ধুবান্ধব রেখে নতুন ক্যাম্পাসে নতুন পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নেয়া সহজ বিষয় নয়। সে সময়টা অনেক বিরক্তিকর ও ভালো না লাগার গল্প। সেই বিরক্তিকর গল্পের মাঝে নতুন আলো জ্বেলে আবির্ভাব ঘটেছিল একটি পরিবারের। বলছিলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২৭তম ব্যাচের বন্ধুত্বের কথা। দিনটি ছিল ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি রবিবার। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনটি সবার জন্যই বহুল আকাঙ্ক্ষিত ও আনন্দময় বটে! কেননা, একটি যুদ্ধে জয়ের পর জয়ীদের যে উলস্নাস তারই প্রতিফলন এই দিনটি! সবাই ভিন্নভিন্ন জেলা থেকে মিলিত হয়েছিলাম এই বিভাগে। নবীনদের বরণ করে নেয়ার জন্য বিভাগের রুমগুলো রঙে রঙিন করে তুলেছিল, কেউবা নতুন ড্রেসে আবার কেউবা নতুন শাড়িতে নিজেকে রাঙিয়েছে নতুন সাজে। কেউ কারও পরিচিত নই, কিন্তু কীভাবে যেন সেদিনই সবাই সবার সঙ্গে মিলিত হয়ে গেলাম। এই দিনটি থেকেই শুরু আমাদের পথচলা। সময়ের পরিক্রমায় সব অপরিচিত মুখগুলো ধীরে ধীরে পরিচিত হয়ে উঠলো। নতুন বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে ক্লাসে, আড্ডায় কখন যে সবার চিরচেনা হয়ে গেছি সেই ভাবনার অবকাশ নেই। ক্যাম্পাস মানেই বন্ধুত্ব আর বন্ধুত্ব মানেই ক্যাম্পাস। আড্ডা, গান আর খুনসুটিতে মেতে থাকা হয় প্রতিমুহূর্ত। সেমিনার, লাইব্রেরি, কখনও শহীদ মিনার, কখনও বুদ্ধিজীবী, আবার টুকিটাকি চত্বরে বসে চায়ের কাপে জমে উঠে আমাদের প্রাণবন্ত আড্ডা। ক্লাস-পরীক্ষার ফাঁকে সময় সুযোগ পেলেই বন্ধুদের নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। শুধু তাই নয়, পড়াশোনার মাঝে চলে তুমুল যুদ্ধ। বিভাগে কার থেকে কে ভালো ফলাফল করবে এ নিয়েও চলে প্রতিযোগিতা। দুঃসময় কিংবা সুসময় বন্ধুদের ছুটে চলা একসঙ্গে। এ যেন পরিবারের বাহিরে আরো একটি পরিবারের আত্মার বন্ধন। সুখে কিংবা দুঃখে মেতে উঠি একসঙ্গে। দেখতে দেখতে ক্যাম্পাস জীবনের কেটে গেল প্রায় ২২টি মাস। বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরো দৃঢ করতে আয়োজন করা হয়েছিল ক্লাস পার্টি। বিভাগের সভাপতি ও শিক্ষকরা কেক কেটে ব্যাচের ক্লাস পার্টির শুভ সূচনা করেন। গান-বাজনার তালে নৃত্য মেতে উঠেছিল সবাই একসঙ্গে। দিনব্যাপী আনন্দ-উলস্নাসে ও রঙিন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ক্লাস পার্টি শেষ হয়। কেন জানি মনে হয়, আনন্দময় ক্যাম্পাস জীবনের সময় খুব দ্রম্নত ফুরিয়ে যাচ্ছে। প্রবাদের ছন্দে আমাদেরও বলতে হয়- সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। হয়তো প্রকৃতির নিয়মেই দিনগুলো এগিয়ে যাচ্ছে। সময়ের পরিক্রমায় আমাদেরও ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে হবে আগামীর পথে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাচ টুয়েন্টি সেভেনের সদস্যরা এগিয়ে যাব দুর্বার গতিতে- এইতো মোদের অঙ্গীকার।