রা জ শা হী বি শ্ব বি দ্যা ল য়

এক নতুন জীবনের হাতছানি

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মালেক সরদার সকাল ৯টার সময় ক্লাসে উপস্থিত হওয়ার আর কোনো তাড়া থাকবে না। দেরিতে ক্লাসে গিয়ে স্যারের বকা খাওয়া, বোরিং ক্লাসে পেছনের বেঞ্চে বসে দুষ্টামি করা, ফিসফিস করে গল্প আরও কত কিছু করার সুযোগ থাকবে না। রজব ভাইয়ের দোকানে বসে ধোঁয়া উঠা গরম চায়ের কাপে চুমুকের সঙ্গে আড্ডা। কিংবা বিভিন্ন প্রোগ্রামে বন্ধুরা একসঙ্গে গিয়ে হৈচৈ করা, গিটার নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বরে বসে গান করা। এসব স্মৃতিগুলো এসে খুব করে নাড়া দেয় অনার্স জীবনের চারটি বছর শেষে। এ ছাড়াও ক্যাম্পাস জীবনের কত শত স্মৃতি এসে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। কারণ, মাস্টার্সে এসে অনেক বন্ধুদেরই হারিয়ে ফেলতে হয়। অনেকে অনার্স শেষ করেই চাকরিতে জয়েন করে, কেউ আবার অন্য কোনো ক্যাম্পাসে মাস্টার্স করে। যারা ক্যাম্পাসে মাস্টার্সে ভর্তি হবে তারা আবার কয়েকটি গ্রম্নপে ভাগ হয়ে যায়। তাই অনার্স জীবনের একসঙ্গে সব বন্ধুরা মিলে ক্লাস করার সুযোগটা আর হয় না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে যারা ভর্তি হয়েছিল তাদের মধ্যে বেশ কিছু বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কোনো কোনো বিভাগে আবার পরীক্ষা চলছে। মূলত অনার্সের ভাইভার মধ্যে দিয়েই শেষ হয় ক্যাম্পাস জীবন। কয়েকদিন আগে ক্যাম্পাসের শহীদুলস্নাহ কলাভবনের সামনে যেতেই দেখা গেল ফরমাল ড্রেস পরা বেশ কিছু শিক্ষার্থীদের। তাদের দেখে বুঝতে খুব একটা বাকি রইল না যে তারা সবাই ভাইভা দিতে এসেছে। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা রুনার সঙ্গে কথা হলো। ক্যাম্পাস জীবনের চারটি বছর শেষে তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাম্পাসে যে দিন প্রথম এসেছিলাম তখন আমি ছিলাম একা, কিন্তু এই চার বছরে অনেক বন্ধু হয়েছে। তাদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো, আড্ডা, দুষ্টামি সবকিছু মিস করব। সবচেয়ে বেশি মিস করব গণরুমের দিনগুলো। অনার্স জীবনের সোনালি সময় শেষ হয়ে গেল ভাবতেই খুব খারাপ লাগছে। ভাইভা শেষে প্যারিস রোডে ছবি তুলতে ব্যস্ত একদল শিক্ষার্থী। কথা হলো তাদের কয়েকজনের সঙ্গে। তারা জানালেন, এই চার বছরে জমে থাকা ক্যাম্পাস জীবনের নানা স্মৃতি। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী অনন্যা রহমান বলেন, 'এক পরিবার ছেড়ে এসে এই চার বছর যেন আরেকটি পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। কখনও মনে হয়নি আমি একা। ক্লাসে দুষ্টুমির জন্য স্যারদের বকা মিস করব। অনার্স শেষে একদিকে যেমন আনন্দ লাগছে তেমনি কিছুদিন পর এই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে হবে জন্য কষ্টও লাগছে।' একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আব্দুল হাসিবের আবার একটু ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, 'আমি অপেক্ষায় ছিলাম অনার্স পরীক্ষাটা শেষ হওয়ার। কারণ আমার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে এমবিএ সম্পূর্ণ করার। সেখানে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি শুরু করব এবং এখন সেদিকেই পুরোটা মনোযোগ দিব।' ক্যাম্পাস জীবনের এ চারটি বছর যেন চোখের নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। প্রতিটা শিক্ষার্থীর কাছেই ক্যাম্পাস জীবন মানে ডায়েরির পাতায় অসংখ্য স্মৃতি। প্রিয় ক্যাম্পাস, রঙিন দিনগুলো আর কত শত নস্টালজিয়া।