ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

সামাজিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রায়হান মাহবুব দুই দিনব্যাপী সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় আন্তর্জাতিক জোট (আইসিএসডিএপি) সম্মেলন শেষ হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি)। দেশে প্রথমবারের মতো ইবিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এ সম্মেলন। সংস্থাটির সপ্তম দ্বিবার্ষিক এ সম্মেলনের আয়োজক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ এবং আইসিএসডিএপি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভেনু্যতে একযোগে অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলনের নানা আনুষ্ঠানিকতা। এতে অংশ নেয় এশিয়া, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ৮টি দেশের ৪৭ জন বিদেশি গবেষকসহ মোট ২৬৭ জন। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক এ ধরনের আয়োজন এটিই প্রথম। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ইবি প্রশাসন। সম্মেলনের সহযোগী আয়োজক হিসেবে ছিল সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটি অব সোশ্যাল সায়েন্স এবং থাইল্যান্ডের থাম্পাসাট বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগে আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের ষষ্ঠ দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সিঙ্গাপুরে। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ইবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন আইসিএসডিএপি'র সভাপতি ড. মনোহর শঙ্কর পাওয়ার। এ সময় আইসিএসডিএপি'র চেয়ারপারসন ড. অশোক কুমার সরকার, ঢাকার রয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রফুলস্ন চন্দ্র সরকার, ইবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহা উপস্থিত ছিলেন। দুই দিনে মোট ১৬টি সেশনে সামাজিক উন্নয়নবিষয়ক মোট ৬৫টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। এসব প্রবন্ধে চলমান বিশ্বের গৃহযুদ্ধ, শরণার্থী ও সামাজিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, দ্বন্দ্ব নিরসন, অর্থনৈতিক বৈষম্য, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বিশ্বায়ন, অভিবাসন, লিঙ্গবৈষম্য, সহিংসতা, শান্তি এবং উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের পরিবেশ, টেকসই শিক্ষা, সামাজিক উদ্যোগ ও টেকসই উন্নয়ন অর্জনে ব্যবসায়িক-সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পর্কিত বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে। সম্মেলনে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব কমিউনিটি অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট নামক জার্নালের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান সামাজিক অসন্তোষের কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি শ্লথ হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন ও শান্তির পথ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অনেক দেশেই জাতিগত নিধন এবং গণহত্যার শিকার হয়ে শান্তি ও নিরাপত্তার খোঁজে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য মানুষ ভিন্ন দেশে আশ্রয় নিচ্ছে। আবার উন্নয়নশীল দেশের মানুষ উন্নত দেশে প্রবেশ করছে। ঐচ্ছিক ও বলপ্রয়োগের এমন অভিবাসন প্রক্রিয়া বিশ্বের জাতীয়তাবাদীমুখী রাজনৈতিক দল ও সরকারসহ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মূল্যবোধগত প্রশ্ন এবং উত্তপ্ত বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। আবার নিজ দেশের ভেতর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন, সহিংসতার মাধ্যমে শ্রেণি, লিঙ্গ, অঞ্চল এবং ধর্মের মধ্যে সামাজিক অস্থিরতার বীজ রোপিত হচ্ছে। সামাজিক অস্থিরতার মাধ্যমে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করে শান্তির পথনির্দেশ করা এবং শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করাই আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের লক্ষ্য বলে সম্মেলনে আগত বক্তারা তাদের বক্তব্যে উলেস্নখ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে সমাপনী পর্বে একে একে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন দেশ হতে আগত স্কলাররা, আমন্ত্রিত অতিথিরা। পরে সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয় আইসিএসডিএপি'র এবারের সম্মেলন।