সমাজ ও দেশ গঠনমূলক চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ২০১৭ সালের আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করেন এটিএম শামসুজ্জামান
বিনোদন রিপোর্ট চলচ্চিত্রকে সবচেয়ে শক্তিশালী গণমাধ্যম উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সবচেয়ে দ্রম্নত মানুষের মাঝে মেসেজ পৌঁছানো যায়। সেজন্য জীবন ধর্মী, সুন্দর সমাজ ও দেশ গঠনমূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। এমনভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে যেন নতুন প্রজন্ম সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে। গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সিনিয়র থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্মের শিল্পী, নির্মাতা-কলাকুশলীদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানে আলো ছড়ায়। চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্যসচিব আব্দুল মালেক। প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী আজীবন সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন এটিএম শামসুজ্জামানের হাতে। এই অভিনেতাকে পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমেই শুরু হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। তার পরেই প্রধানমন্ত্রী আজীবন সম্মাননা স্মারক তুলে দেন রূপবান খ্যাত নায়িকা সুজাতা ও বাংলার রঙিন নবাব খ্যাত অভিনেতা প্রবীর মিত্রের হাতে। এরপর ধারাবাহিকভাবে অন্য বিজয়ীদের হাতেও পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা সকল বিজয়ীকে শুভেচ্ছা জানান। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও গাজী সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছি। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের সিনেমা দর্শক হারিয়েছে। কীভাবে দর্শককে আবারও হলে ফেরানো যায় সেজন্য অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। আমি নিজেও হলমালিকদের সঙ্গে বসেছি। আমার মনে হয় দর্শক ফেরাতে হলে সিনেমাকে ডিজিটালাইজড করতে হবে। বিশেষ করে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও সিনেমা হল ডিজিটাল করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তাদের জন্য সময় উপযোগী বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।' প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'শিল্পকলার সবগুলো মাধ্যমের ভেতরে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্র। এর মাধ্যমে মানুষের মনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানুষের মনে গভীর দাগ কাটতে পারে এই চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে মানুষের জন্য। দেশে জঙ্গিবাদ আমরা প্রতিরোধ করছি। শুধু আইনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। চলচ্চিত্র এখানে বিরাট একটা ভূমিকা রাখতে পারে। সেদিকে আপনারা আরও বেশি নজর দেবেন। প্রত্যেকটা ঘটনা কাহিনী যখন তৈরি হবে সেটা যেন জীবনভিত্তিক হয়। দেশের অনেক শিল্পী বাইরে গিয়েও ভালো কাজ করছে। দেশেরও যেন তারা ভালো কাজ করে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।' শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায়। আমরা ভারতের প্রখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগালকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছি। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। ব্যস্ততার অভাবে সিনেমা দেখা হয় না বলে বক্তব্যে জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে বিদেশ যাওয়ারকালে বিমানে বসে দেশের সিনেমা দেখেন তিনি। দেশের সিনেমা তাকে মুগ্ধ করে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের নাটক বিশ্বমানের বলে ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জমকালো আয়োজনে গান পরিবেশন করেন মমতাজ, নকীব খান, সামিনা চৌধুরী, কণা ও খুরশীদ আলম। ইভান শাহরিয়ারের পরিচালনায় নৃত্যে দর্শক মাতান চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, ববি, মাহিয়া মাহি, জায়েদ খান, নুসরাত ফারিয়া ও তমা মির্জা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় মুখ ফেরদৌস ও পূর্ণিমা।