মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ | ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন এবং '৫৪-এর একুশ দফার ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্টের নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বাধিকারের আন্দোলন, '৬৬-র ছয় দফা ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফার ভিত্তিতে '৬৯-এর গণঅভু্যত্থানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। '৭০-এর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সামরিকজান্তা বাঙালি জাতির ওপর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাত থেকে এক অসম যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলোতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস নামধারী কুখ্যাত বাহিনীর সব ষড়যন্ত্র, ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। একাত্তরের ২৬ মার্চ সকালে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েতে উপস্থিত হন এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তৎকালীন ভাইস চান্সেলর প্রফেসর ড. কিউ এম ফজলুর রহিম ওই সভায় দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা দেন "আজ থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হবে স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।" বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় হারায় জাতির ১৯ জন বীর সন্তান- যারা দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য অকাতরে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তারা আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন এবং আগামী দিনগুলোতেও আমরা তাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি বারবার অনুভব করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর শহীদদের মাঝে রয়েছে একজন শিক্ষকসহ ১১ জন ছাত্র, ছয়জন কর্মচারী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে তিনটি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়েছে। হলগুলো হল: শহীদ শামছুল হক হল,শহীদ নাজমুল আহসান হল ও শহীদ জামাল হোসেন হল। ভাষা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ ক্যাম্পাসে শহীদ মিনার, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ এবং বিজয়'৭১ নামে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নির্মিত বধ্যভূমি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের নির্মম হত্যাকান্ড ও ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।