গোলাপ গ্রামে একবেলা

প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

মো. রাকিবুল হাসান
গণ বিশ্ববিদ্যালয়
গ্রামের আঁকাবাঁকা সরু পথ। পথের পাশ ঘেঁষে অসংখ্য গোলাপের বাগান। যতদূর চোখ যায় শুধু টকটকে লাল গোলাপ। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ গিয়েছিলেন গোলাপের মন মাতানো সুগন্ধ ও চোখজোড়া সাভার সাদুলস্নাপুরের গোলাপ গ্রামে। সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদীর তীরে এই গ্রাম। গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৬ কিলোমিটারের পথ গোলাপ গ্রাম। বাইশমাইল থেকে সাভার বাসস্ট্যান্ডে নেমে রিকশা বা অটোতে সহজেই গোলাপ গ্রামে যাওয়া যায়। গোলাপ গ্রামের আগেই ছোট্ট একটা বাজার। তাই গোলাপের রাজ্যে হারানোর আগেই দুপুরের খাবারটা হাতের কাছে হোটেলে খেয়ে নিলাম আমরা। ভরপেট খাবার ও এক কাপ চা শেষে আমাদের যাত্রা শুরু হয় গ্রামের দিকে। সাদুলস্নাপুর গ্রাম হলেও আঁকাবাঁকা সরু রাস্তা ধরে হাঁটলে দেখা যায় রাস্তার দুপাশ পুরোটাই গোলাপের বাগানে ঘেরা। কিছুটা কাছে গেলে মনে হয় লাল টকটকে গোলাপেরা যেন তাদেরই রাজ্যে খেলায় মশগুল। গ্রামের ৯০ ভাগ স্থানীয়দের পেষা গোলাপ চাষ। যা পুরো গ্রামজুড়ে সারা বছর হয়। পুরো গ্রামে নানা রঙের গোলাপ ফুল দিয়ে ঘেরা। এখানে গোলাপ ছাড়াও জারভারা, গস্নাডিওলাসু ফুল চাষ হয়। ঢাকার বেশির ভাগ ফুলের চাহিদা মেটানো হয় এখান থেকেই। বাগানে কাজ করছিলেন কয়েকজন গোলাপ চাষি। ফুলের মালা বুনতে থাকা এক চাষি বলেন, জানুয়ারি-ফেব্রম্নয়ারি গোলাপের মৌসুম। শীতের সময় বাগানগুলো অনেক সুন্দর লাগে। প্রতিটি ফুল দুই থেকে পাঁচ টাকায় বিক্রি হয়। বাগানগুলোতে সকালে ও বিকেলে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। স্থানীয় গোলাপ চাষি বলেন পঞ্চাশ বছর ধরে গোলাপ চাষ হয় এই গ্রামে। গোলাপ গ্রামে ঘুরতে এলে ফুল কেনার সুযোগ রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। গোলাপের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে দুপুর গড়িয়ে পড়ন্ত বিকেল। নিঝুম শান্ত গ্রামে ফুটন্ত গোলাপ দেখতে পাওয়া যায় বিকেলেই। বিকেল থেকেই শুরু হয় ফুল চাষিদের ফুল তোলা। গোছা বেঁধে প্রস্তুত করা হয় হাটের জন্য। সাদুলস্নাপুর ও এর আশপাশের গ্রামে আছে তিনটি ফুলের বাগান। সেখানকার শ্যামপুরে প্রতিদিনই বসে গোলাপের হাট। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় ফুল ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। রাতভর চলে জমজমাট বেচাকেনা। গ্রাম থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে গোলাপের দেশে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো তাড়া করছে ঠিকই। অসাধারণ কিছু ভালো লাগা নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরতে পারাটাই আনন্দের ছিল।