বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নুডলস ও সু্যপে ইলিশের স্বাদ

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

তানিউল করিম জীম
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম বিশেষ উপায়ে উদ্ভাবন করেন ইলিশের সু্যপ ও নুডলস
বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ। এ মাছের স্বাদ সবার কাছে মোহনীয়। কিন্তু সারা বছর ইলিশ পাওয়া কঠিন। আবার পাওয়া গেলেও অত্যধিক দামের কারণে সবার পক্ষে কেনা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বছরজুড়ে প্রাপ্তিস্বল্পতা, সংরক্ষণ ও অত্যধিক কাঁটার কারণে এ মাছ অনেকের কাছেই আবার অপছন্দের কারণ। অন্যদিকে ইলিশে আমিষের পরিমাণ ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ অন্য মাছের থেকে তুলনামূলক বেশি। এসব পুষ্টিগুণ সবার কাছে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম বিশেষ উপায়ে উদ্ভাবন করেন ইলিশের সু্যপ ও নুডলস। সু্যপ ও নুডলসে মিলবে ইলিশের স্বাদ ও পুষ্টি। এ বিষয়ে গবেষকের সঙ্গে কথা বললে তিনি ইলিশের পুষ্টিগুণ, সু্যপ ও নুডলস তৈরি প্রক্রিয়া ও সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। ইলিশের পুষ্টিগুণ ইলিশের পুষ্টিগুণ পৃথিবীর যে কোনো উৎকৃষ্ট মাছের সমতুল্য বা এর চেয়ে বেশি। ইলিশের চর্বিতে বিদ্যমান থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড মানুষের রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ইলিশ মাছ মানুষের দেহের হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে সুস্থ, সবল ও সতেজ রাখে। ইলিশের সু্যপ ও নুডলস তৈরি ইলিশের আমিষ, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড, অনান্য পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিনের কোনো ঘাটতি না ঘটিয়ে মাছের মাংসের কিমা তৈরি করে, মাথা, নাড়িভুঁড়ি ও ডিম আলাদাভাবে ফ্রিজে সংরক্ষণযোগ্য ছোট বস্নক আকৃতির কিউব তৈরি করা হয় নুডলস ও সু্যপ তৈরির জন্য। এক কেজি ইলিশ মাছ থেকে প্রায় ২৫০টি বস্নক তৈরি করা সম্ভব। প্রতিটি বস্নকের ওজন ১২ গ্রাম। প্রতিটি বস্নক থেকে একজন মানুষের খাওয়ার উপযোগী ৭০ গ্রাম নুডলস অথবা ১৬০ মিলিলিটার সু্যপ তৈরি করা সম্ভব। শুধু গরম পানি মিশিয়ে সহজেই এটি পরিবেশন করা যাবে। সম্ভাবনা : নুডলস ও সু্যপ শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের কাছে একটি পছন্দনীয় খাবার। সে জন্য নুডলস ও সু্যপের মাধ্যমেই সবার কাছে ইলিশের পুষ্টিগুণ পৌঁছানো সম্ভব। কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই সবাই ইলিশের পুষ্টি গ্রহণ করতে পারবে। কারণ এখানে থাকছে না সংরক্ষণ, রান্না ও কাঁটা বাছার ঝামেলা। গবেষক বলেন, প্রতি প্যাকেট নুডলস অথবা সু্যপের খুচরা বাজারমূল্য পড়বে মাত্র ২০ থেকে ২৫ টাকা। মূল্য হাতের নাগালে হওয়ায় সবাই সারা বছর ইলিশের স্বাদ পাবে। এ ছাড়া বিদেশে রপ্তানি করে ইলিশের পরিচিতি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। বাজারজাতকরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইকোফিশ প্রকল্পের সহায়তায় ভারগো ফিশ অ্যান্ড অ্যাগ্রো প্রসেস লিমিটেডেরমাধ্যমে শিগগিরই দেশব্যাপী বাজারজাত করা হবে ইলিশের নুডলস ও সু্যপ।