রা জ শা হী বি শ্ব বি দ্যা ল য়

মহামিলনের সন্ধিক্ষণে

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

আরাফাত শাহীন
ড. মুহম্মদ শহীদুলস্নাহ্‌ একাডেমিক ভবনের সামনের খোলা চত্বরটাতে প্রায় হাজারখানেক মানুষ সমবেত হয়েছেন। সবার পরনে সাদা টি-শার্ট ও সাদা ক্যাপ। হঠাৎ ক্যাম্পাসে আসা কোনো মানুষের মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে, এখানে এত মানুষের সমাগম কেন? অ্যালামনাই বা পুনর্মিলনী সম্পর্কে না জানা মানুষের মনে এমন প্রশ্ন জাগা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আসল ব্যাপার হলো, এদিন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের নতুন এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অন্যতম ও প্রাচীন বিভাগ হলো ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি। ১৯৫৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছর পর এই বিভাগের যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত অসংখ্য গুণী মানুষের জন্ম দিয়েছে এই বিভাগ। সেসব মানুষরা ক্যাম্পাসে এসে তাদের ফেলে যাওয়া দিনের স্মৃতিচারণ করলেন। আমরা মুগ্ধ হয়ে তাদের সেসব কথা শুনলাম। পুনর্মিলনী উপলক্ষে ড. মুহম্মদ শহীদুলস্নাহ্‌ একাডেমিক ভবনসহ পুরো এলাকা বর্ণিল সাজে সেজে উঠেছিল। এক অপূর্ব রূপ ধারণ করেছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে পুরনো একাডেমিক ভবনটি। আমরা যখন প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি ২০১৬ সালে, তখনই প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। যেহেতু আমরা তখন একেবারে নতুন, তাই রেজিস্ট্রেশন করতে সাহস পাইনি। তা না হলে কী হবে, বড় ভাই-আপুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছিলাম ঠিকই।ও এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে একে একে চারটি বছর কেটে গেছে। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমরাই সবচেয়ে সিনিয়র। তাই পুনর্মিলনীতে সবার আগে অংশগ্রহণ করেছি। এমন মিলনমেলা সব সময় দেখার সুযোগ হয় না। এখানে একদিকে যেমন নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব হয়; তেমনি প্রাক্তনদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ারও সুযোগ পাওয়া যায়। গত দুই বছরে ক্যাম্পাসে যে অনুষ্ঠানগুলো হয়েছে আমি তার বেশ কয়েকটিতে অংশ নিয়েছি। শুধু যে অংশগ্রহণ করেছি তাই নয়; বরং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও কাজ করেছি। কারণ, এখানে শেখার বহু সুযোগ রয়েছে। আমাদের এ পুনর্মিলনীতেও আমি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ফলে সবার সঙ্গে ভাব বিনিময়ের সুযোগ আমি অন্যদের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি পেয়েছি। এবার বেশ মজার একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের। দ্বিতীয় দিন সবাইকে দুপুরের খাবার দিতে দিতে একেবারে শেষ হয়ে যায়। ফলে আমরা যে ক'জন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করি তাদের ভাগ্যে কিছুই থাকে না। আমাদের টিমে ছিলেন ড. শামসুজ্জোহা এছামী স্যার। তিনি আমাদের ডেকে বললেন, 'কোনো চিন্তা কর না। আমরা টুকিটাকি চত্বরে গিয়ে যা হয় খেয়ে নেব। পরে তোমাদের ভালোমতো খাওয়ানো হবে। আর খাওয়াদাওয়ার পর প্যারিস রোডে ফটোশুট হবে।' সবাই বেশ উলস্নসিত হয়ে উঠলাম। খাওয়া শেষ করেই আমরা চলে এলাম স্বপ্নের প্যারিস রোডে। ক্যামেরাম্যান আগে থেকেই রেডি ছিল। আমরা গিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়াতেই ছবি তোলা শুরু হয়ে গেল। পুরো অনুষ্ঠানের স্মৃতিতে ছবিটা ফ্রেমবন্দি হয়ে রইল আমাদের কাছে।