রম্য বিতর্কে বসন্তবরণ

রম্য বিতর্কে বসন্তবরণ

প্রকাশ | ০২ মার্চ ২০২০, ০০:০০

আশিকুর রহমান
যুক্তির আলোয় শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানস গঠনে বিতর্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যুক্তি-তর্কের মাধ্যমেই মানুষ সত্যের কাছাকাছি পৌঁছায়। প্রবাদ আছে, 'যুক্তিতেই মুক্তি'। যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে কুসংস্কার, হীনতা আর আত্মপ্রবঞ্চনা থেকে মুক্তি মেলে। বিতর্ক প্রতিযোগিতায়, যুক্তি চর্চার মাধ্যমে বিতার্কিকরা অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। এতে মানুষ সহিষ্ণু হয়। বিতর্ককে শিল্পের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। সেদিন ছিল পহেলা ফাল্গুন। সেদিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। সবাই রম্য বিতর্ক উপভোগ করতে এসেছে। আমিও সেই রম্য বিতর্ক উপভোগ করার জন্য বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলাম মিলনায়তনে। বসন্তবরণ উপলক্ষে জাঁকজমকভাবে বাকৃবি ডিবেটিং সোসাইটি ওই রম্য বিতর্কের আয়োজন করেছিল। বিতর্কের বিষয় ছিল 'চাহিয়াছিলাম জীবন কাটাবো ধরিয়া তোমারই হস্ত, জানিতাম না প্রেমের শর্ত শুধুই মানিব্যাগের স্বাস্থ্য'। ওই রম্য বিতর্ক প্রতিয়োগিতায় আমাদের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির উপস্থিত ছিলেন। অধীর আগ্রহে বসেছিলাম বিতর্ক শুরুর অপেক্ষায়। যথাসময়ে বাকৃবি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিতর্কের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি। সেদিন বিতর্ক অনুষ্ঠানে মডারেটর হিসেবে ছিলেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মন্ডল। অধ্যাপক ড. ফাতেমা হক শিখা, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম, ড. মো. নাহিদ সাত্তার ও ড. আলেয়া ফেরদৌসি বিচারক হিসেবে ছিলেন। রম্য ওই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ছেলেদের দলের প্রতিনিধিত্ব করেন জাহিন আবরার হিমেল, রাসেল আল মামুন ও মো. রাশেদুল ইসলাম রাশেদ। মেয়েদের দলের প্রতিনিধিত্ব করেন ফারিহা কামাল আনিকা, ফারহানা সাদিয়া নীতি ও মায়িশা ফাহমিদা। শুরু হলো সেই রম্য বিতর্ক। বিতর্কের পুরো সময়টা ছিল হাস্য রস-রসিকতায় ভরপুর। পুরো এক ঘণ্টা কীভাবে অতিবাহিত হলো, আমি টেরই পেলাম না। যাই হোক, বিতর্কের শেষলগ্নে ফলাফল ঘোষণার পালা। আমার কাছে উভয় দলের যুক্তি-তর্কই ভালো লেগেছে তবে ছেলেদের উপস্থাপনাগুলো বেশি ভালো লেগেছিল। ভেবেছিলাম ছেলেদের দল বিজয়ী হবে কিন্তু উভয় দল সমান পয়েন্ট পেয়ে যৌথভাবে বিজয়ী হয়েছিল। সবচেয়ে ভালো লেগেছিল ওই বিতর্ক অনুষ্ঠানের মডারেটর ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মন্ডল স্যারের সেই উক্তিটি, 'অভাব যখন দরজায় এসে পৌঁছায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়।'