কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়

আনন্দ-উৎসবে দশমিকের বিদায়

প্রকাশ | ০৯ মার্চ ২০২০, ০০:০০

আবু বকর রায়হান
বিদায় বেলায় বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে ব্যাচ দশমিক ছবি: জোবায়ের হোসাইন
অন্য সবার মতোই চলছে আনন্দ-উলস্নাস। রঙ ছিটিয়ে মেতে উঠেছেন সবাই। ঠিক যেমন সবাই করে। শুরুটা সবার মতো হলেও শেষটা হলো ব্যতিক্রমী। অসহায় শীতার্তদের হাতে তুলে দেওয়া হলো কম্বল ও খাবার। এ যেন এক অন্যরকম বিদায়। এভাবেই ভিন্নভাবে বিদায় নিল কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দশম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে বিদায়ী শিক্ষার্থীরা। দুই দিনব্যাপী বিদায়ী আয়োজনের প্রথম দিনে নাচে গানে ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখে তারা। কেউ মার্কার কলমে প্রার্থনা লিখছেন বন্ধুর টি-শার্টে। আবার কেউ ঝাপটে ধরে রঙ মাখিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছেন। এভাবেই চলছিল বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উলস্নাস। একটু পরই সেখানে মিলিত হলো বিভাগের সব শিক্ষার্থী। সবার অংশগ্রহণে আনন্দের বন্যায় ভাসছিল বিদায়ী ব্যাচের সদস্যরা। সে আনন্দ ও বেদনা প্রিয়জনদের ছেড়ে যাওয়ার। হয়তো জীবনের বাস্তবতায় আর কারো দেখা মিলবে না। সবার সঙ্গে আনন্দ করছিলেন বিদায়ী শিক্ষার্থী আছিয়া আক্তার মিনু। এর মাঝে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, 'আমার ক্যাম্পাস জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন বিদায়ী অনুষ্ঠানের দুইটা দিন। এটা শুধু বিদায়ী অনুষ্ঠান নয়, ছিল আমাদের মিলনমেলা। অনেক আনন্দ করেছি সবার সঙ্গে। তবে আর মাত্র কিছুদিন পরই পরিচিত মুখগুলোকে দেখব না, কথাটা মনে পড়লে খারাপ লাগে। যেখানেই যাই সবসময় খারাপ লাগবে প্রাণের এই ক্যাম্পাসের জন্য। সবসময় মনে পড়বে প্রিয় সহপাঠী-শিক্ষকদের।'  ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু করে অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ ব্যাচটি। ৫৪ জন শিক্ষার্থীর ব্যাচটি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পুরোটা সময় ছিল প্রাণবন্ত। অল্প সময়ের মধ্যেই সেশনজট ছাড়া স্নাতক শেষ করে ব্যাচটি। শিক্ষা জীবনের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় রাখতে জমকালো আয়োজন করে তারা। বিদায় অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় 'দশমিক'। ক্লাস শুরুর সেশন ২০১৫-১৬ কে সামনে রেখের্ যাগ ডে অনুষ্ঠান ১৫ ও ১৬ তারিখ করা হয়। কেক কেটের্ যাগ ডে আয়োজনের শুরু হয়। বিদায়ীর্ যালি, শীতার্তদের মাঝে কম্বল ও খাবার বিতরণ, রঙের খেলা এবং নাচে গানের্ যাগ ডে পালন করেন শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে পশ্চিমাকাশে সূর্যাস্ত হলো। বেজে উঠল শিক্ষার্থীদের মাঝে বিদায়ের সুর। চার বছর একসঙ্গে কাটানো বন্ধুদের থেকে এবার বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে গেছে। কারো মুখে অশ্রম্ন আবার কেউ কান্নায় মুখ লুকাচ্ছে। সবার মনে বাজছে বেদনার সুর। বিদায় বেলায় কথা হয় বিদায়ী শিক্ষার্থী আলাউদ্দীন মাহমুদের সঙ্গে। 'জীবনের সেরাদিনগুলোর মধ্যে দুইটা দিন অতিবাহিত করলাম। অনেক স্মৃতি জমে আছে লাল পাহাড়ি ক্যাম্পাসে। হাজারো স্মৃতি সঙ্গে থাকলেও সবসময় প্রাণের প্রাঙ্গণকে মনে পড়বে।'