মুজিববর্ষে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

মুজিববর্ষকে সামনে রেখে সরকারি-বেসরকারিভাবে চলছে নানা পরিকল্পনা। মুজিববর্ষের প্রত্যাশা নিয়ে লিখছে অনেকেই। হাজারো প্রত্যাশা ও পরিকল্পনা পূরণ করতে যারা কাজ করবে সর্বাগ্রে তারা হচ্ছে এ দেশের তরুণ প্রজন্ম। মুজিববর্ষে সে তরুণদের মধ্য থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবনা নিয়ে আজকের আয়োজন। লিপিবদ্ধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী- আমজাদ হোসেন হৃদয়।

প্রকাশ | ১৬ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বঙ্গবন্ধুর নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগই হোক মুজিববর্ষের শিক্ষা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম বার্ষিকীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এ বছরটিকে মুজিব শতবর্ষ রাখা হয়েছে। এটি আমাদের বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের। এই মহান পুরুষের আপ্রাণ ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। তার ত্যাগ ও কষ্টগুলো আজও স্মৃতির পাতায় অমর হয়ে রয়েছে। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত মিলে কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থদ্বয়ে। তবে তিনি যেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য এ দেশের মাটি ও মানুষকে মুক্ত করেছিলেন সেই স্বপ্ন কালো হাতের থাবায় পড়ে বারবার কলঙ্কিত হয়েছে। আজও সোনার বাংলায় অনিয়ম, শোষণ-বঞ্চনা, দুর্নীতি, ধর্ষণ, মানুষে মানুষে রক্তের হলি খেলায় মত্ত হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত বাস্তবায়ন হলো এসব অশুভ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং এ দেশকে ও দেশের মানুষকে ভালোবাসা। তবেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার স্বপ্ন স্বার্থক হবে। আবু হুরায়রা আতিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। মুজিববর্ষের অঙ্গীকার হোক সোনার বাংলাদেশ গড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই মানুষটি যে কি না সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন গণতন্ত্রের। প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন একটি শোষণহীন সমাজ। বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। হাসি ফোটাতে চেয়েছেন সমাজের নিপীড়িত, শোষিত শ্রেণিী মানুষের মুখে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা অর্জনের বন্ধুর পথগুলি ধাপে ধাপে অতিক্রান্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই। মহান ত্যাগের মধ্যে দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই বাঙালি জাতির জন্য অর্জন করে দিয়ে গেছেন একটি স্বাধীন দেশ। তিনি গত হয়েছেন ঠিকই কিন্তু এই সমাজের কাছে রেখে গেছেন স্বাধীন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার হাজারো দৃষ্টান্ত। আমাদের তরুণ সমাজের কর্তব্য হবে তাকে অর্থবহ করে তোলা। ২০২০ সালে সব বাঙালি জাতি এবং একাত্ম দেশপ্রেমীদের অঙ্গীকার হোক একটাই- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। নুসরাত জাহান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। অনুপ্রেরণার বাতিঘর বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি আন্দোলনের নাম। একটি জাতির ইতিহাসের নাম। একটি দেশের মানচিত্রের নাম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির অন্ধকার দিনের এক জ্বলন্ত পিদিম। একটি দিশেহারা জাতিকে দেখিয়েছেন আশার প্রদীপ। যিনি তার সারাটা জীবন ব্যয় করেছেন পরোপকারে অন্যায়ভাবে বারবার জেল-জুলুমের মাধ্যমেও শত্রম্নরা পরাভূত করতে পারেনি যাকে জীবনের শেষাবধি লড়েছেন অন্ধকার আর কালোর বিরুদ্ধে তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে নিজের অধিকার আদায় করে নিতে হয়। কীভাবে জালিমের হুঙ্কারকে ছাপিয়ে সত্য কণ্ঠ সমুন্নত রাখতে হয়? তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক। তিনিই আমদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর। মাহবুব এ রহমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আরও সম্প্রসারিত হোক ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত এ সময়টুকু দেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষ হিসেবে উদযাপিত হবে। মুজিব নামের তরীটি বিপুল বিস্তার ও ত্যাগের সমুদ্রে ভাসমান ছিল, সে তরীর মানুষ কেবল বাংলার মানুষ। সে তরী- জীবন সাধনায় স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং স্রোতের বিপরীতে হলেও চালিয়ে নিয়েছেন, বিনির্মাণ করেছেন স্বাধীন রাষ্ট্রের। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের জীবন কাজে লাগতে হবে। দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামে শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ যেমন গুরুত্ব পেয়েছে, এ মুজিববর্ষও তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করার গুরুত্ব পাক। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাত, বাঙালির সংগ্রাম-সংঘাত, ইতিহাসের নানা বাঁকবদল প্রভৃতি বিষয়ের আবদানে হয়ে উঠেছেন একজন আদর্শ বাঙালি ও মহান নেতা। যে তারুণ্য নিয়ে আমাদের আশার অন্ত নেই, সেই তারুণ্যে মিশে আছে 'মুজিব' নামটি। তরুণ হৃদয়ে ভালোবাসার প্রথম অনুসঙ্গ হোক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।তার সততা, দেশপ্রেম,বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সাহসী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আমাদের তরুণরা খুঁজে নেক আগামীর বাংলাদেশকে। মোমেনা আক্তার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। মুজিব আদর্শে তারুণ্য হোক আরও উজ্জীবিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি আদর্শের নাম। তিনি যেন তরুণদের সব প্রেরণার উৎস। এ দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, সে স্বপ্নের পথেই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এ সরকার মুজিববর্ষে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পালনের পদক্ষেপ নিয়েছে। ওই কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে তরুণ সমাজের কাছে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ, অবদান সহজেই তুলে ধরা সম্ভবপর হবে। বঙ্গবন্ধু কখনো অন্যায় মেনে নেননি বরং এর বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছেন। পাশাপাশি গরীব-দুঃখীদের পাশে এসে দাঁড়াতেন। ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে লাখো মানুষের মনের মধ্যে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার বীজ বপন করে দিয়েছিলেন। যার দরুন আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। মুজিব বর্ষের মাধ্যমে পুরো বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি আলাদা পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত হোক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে তারুণ্য উজ্জীবিত হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা। সুমাইয়া আহমেদ নুসরাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। মুজিববর্ষ হোক দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার শপথ পরাধীনতা থেকে দেশ মুক্ত হলেও অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি না আসার কারণ হলো দুর্নীতি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু দুর্নীতিকে প্রচন্ড ঘৃণা করতেন। তিনি তার জীবনের সংগ্রাম অবলীলায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে উৎসর্গ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মূল আদর্শ ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে ন্যায় নীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সাম্যভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, ব্যক্তি, সমাজ ও দেশ ব্যতীত বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি, জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন কোনো অবস্থায় সম্ভব হবে না। শেখ হাসিনা সরকারের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গে আসুন মুজিববর্ষে আমরাও শপথ গ্রহণ করি টেবিল-চেয়ার সাজিয়ে, অফিস বানিয়ে চড়া সুদের ব্যবসা করব না। কিস্তির শেষ এক টাকার সুদ প্রথম কিস্তির সমপরিমাণ ৬০ টাকা নেব না। ঘুষকে নতুন নামে- পরিশ্রমের উপরি পাওনা বলে ঘুষ গ্রহণ করব না। বাঙালির চেতনাবোধ,সচেতনতার অহঙ্কবোধ, বিবেচনাবোধ প্রতিষ্ঠিত হোক দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার শপথ গ্রহণের মাধ্যমে। হোসনেয়ারা খাতুন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।