বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সম্প্রীতি আর বন্ধুত্বের ৪ বছর

ইমরান হোসাইন হিমু
  ২৩ মার্চ ২০২০, ০০:০০
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বন্ধুত্ব! শব্দটাই যেন মনের নীল আকাশে ডানা মেলে উড়তে থাকা রঙিন ঘুড়ি। যেন শত ব্যস্ততার যান্ত্রিক জীবনে এক পশলা সুখের বিচ্ছুরণ। বয়সটা যার যেমনই হোক বন্ধুত্বের ছোঁয়ায় সবাই ফিরে পায় ফেলে আসা শৈশব, কৈশোর আর ঝলমলে উচ্ছ্বাসে ভরা তারুণ্যের মাদকতা।

দীর্ঘ ১২ বছর স্কুল-কলেজের পাঠ চুকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা। যৌবনদীপ্ত তরুণ-তরুণীরা পায় স্বাধীনতার স্বাদ ও বন্ধু নির্বাচনের একচেটিয়া অধিকার। সমমনাদের নিয়ে গঠিত হয় বন্ধুবৃত্ত। দেশের ভিন্নভিন্ন জায়গা থেকে আসা, ভিন্ন মনমানসিকতা, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ধর্মের মানুষগুলো হয়ে ওঠে অনেক আত্মার এক প্রাণ। সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের চতুর্থবর্ষের মাইদুল ইসলাম বললেন এমনটাই। তার মতে, এখানেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে বড় স্বার্থকতা। এই বন্ধুত্ব জাতি-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠতে শেখায়, শেখায় সহিষ্ণুতা। বন্ধু ছাড়া ক্যাম্পাস যেন মরুভূমি। প্রয়োজনে বন্ধুরাই অবতীর্ণ হয় মা, বাবা, ভাইয়ের ভূমিকায়।

আর এই বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও মজবুত ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুত্বের চার বছর পূর্তিতে গত ১১ মার্চ বসন্তের এই স্নিগ্ধ সকালে একসঙ্গে মিলিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম ব্যাচের (চতুর্থ বর্ষ) শিক্ষার্থীরা। গণরুম থেকে শুরু করে ক্লাস ফাঁকি, প্রক্সি, অগোছালো আড্ডা, শহিদ মিনারে ক্লাস শেষের আড্ডা, দলবেঁধে ঘোরাঘুরি, রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে গলা খুলে গান গাওয়া, চাঁদা তুলে জন্মদিন পালন করার একেকটি অধ্যায় যেন রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। এসব স্মৃতিকে মনের গহীনে গেঁথে রাখতে চতুর্থ বর্ষপূর্তির এই আয়োজন তাদের। 'প্রবল প্রলয়ে পঁয়তালিস্নশ প্রণয়ে' স্স্নোগানের এই উৎসবে শিক্ষার্থীদের কোলাহলে বুধবার অতিথি পাখির ক্যাম্পাস সেজেছিল নতুন সাজে।

সকাল ৯টায় আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে চতুর্থ বর্ষপূতি উদযাপনের শুভ সূচনা করেন শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ ফ্লাশমবের মাধ্যমে শেষ হয়। এছাড়াও ফানুস উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণ, পথশিশুদের খাদ্য বিতরণ, মুভি উৎসব, ক্যাম্পাস পরিষ্কার ও ডাসবিন প্রতিষ্ঠা করেন তারা।

দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবির আবদুলস্নাহ বলেন, 'কালোর ওপর খয়েরি রংয়ের একই টি-শার্টে গায়ে সারা ক্যাম্পাস পাখির মতো ঘুরে বেড়িয়েছি। আমার দেহ ভিন্ন হলেও প্রাণ এক। টি-শার্টে লেখা বন্ধুদের জন্য স্মৃতি কথা,র্ যালি, গানবাজনা আর নানা রকম হইহুলেস্নাড়ের মধ্যে দিয়ে বন্ধুত্বের এই দিনটি পার করলাম। সারা দিন চললো অবিরত রঙের খেলা। বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো চার বছরের বর্ণিল স্মৃতিগুলো এক-দুই কথায় লিপিবদ্ধ হয়ে গেল স্মৃতির ভান্ডারে। সেই টি-শার্ট এখন এক স্মৃতির অ্যালবাম। আমাদের এই বন্ধুত্ব নিয়েই হয়তো কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন- আসবে আবার আশিন-হাওয়া, শিশিরভেজা রাত্রি, থাকবে সবাই, থাকবে না এই মরণপথের যাত্রী! আসবে শিশির রাত্রি! থাকবে পাশে বন্ধু স্বজন, থাকবে রাতে বাহুর বাঁধন, বধূর বুকের পরশে আমার পরশ আনবে মনে- বিষিয়েও-বুক উঠবে- বুঝবে সেদিন বুঝবে!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<93702 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1