কুকুরের চালাকি

প্রকাশ | ২৮ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

উম্মে কুলসম নেশা
এক ছিল একটি বিড়াল আর একটি কুকুর। বিড়াল খুবই নিরীহ, চুপচাপ। কারও কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু কুকুরটি বিড়ালের সঙ্গে খুব শত্রæতা করে। তাকে যেন তার সহ্যই হয় না। এমন করে তেড়ে আসে যে বিড়ালকে খেয়ে ফেলবে। বিড়াল কিছুটা হলেও অঁাচ করতে পেরেছে। সে থেকে কুকুর দেখলে বিড়াল দৌড়ে আত্মরক্ষার জন্য নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যায়। বিড়ালকে মানুষ ভালোবাসে। কুকুরকে দেখলে মানুষ ছেঁয় ছেঁয় করে ঢিল ছুড়ে দূর হ দূর হ। বিড়ালকে তেমন কিছু বলে না। বরং ছেড়ে দেয়। মানুষের সম্মুখে এলে ভয়ের কোনো অনুভ‚তির উদ্রেক হয় না। যা কুকুরকে দেখলে হয়। বিড়ালকে সবাই পছন্দ করে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও পছন্দ করে। খেলা করে। পুঁস পুঁস শব্দে করলে বিড়াল কাছে আসে আবার ভয়ে দৌড় দেয়। বিড়াল যদি বাসায় রাখা মাছ খেয়ে নেয় তখন এক-আধটু রাগান্বিত হলেও প্রত্যক্ষ বিড়ালকে তাড়া বা ঢিল ছোড়ে না। বিড়াল দেখলে তাড়া দেয় আনন্দ পাওয়ার জন্য। জম্পেস বিড়াল মানুষের মধ্যে ভালো সম্পকের্র সঞ্চয় হয়। বিড়াল বাসায় থাকলে আমরা মাছের কঁাটা, উচ্ছৃষ্ট না ফেলে বিড়ালকে দিই। টপাটপ কড়মড় করে খেয়ে ফেলে। খুব ভালো লাগে। বিড়াল আমাদের দারুণ উপকারী প্রাণী। বাড়িতে ইঁদুর থাকলে অনেক ক্ষতি হয়। টিনের চালা মাটির ঘর হলে একটু বেশি লক্ষ্য করা যায়। গভীর রাতে টিনের ওপর কড়মড় আওয়াজ করে ঘুম ভেঙে যায়। ঘরের মেঝে। ঘরে ধান, চাল রাখার পাত্র বা কুঠি। ইঁদুর ধারালো দঁাত দিয়ে কুরে কুরে ফুটো করে দেয়। ঠিক তখন আমাদের অনেক ক্ষতি পোহাতে হয়। আর এ থেকে রক্ষা পেতে বিড়াল পোষা আবশ্যক। একটি বিড়াল বাসায় থাকলে সব ইঁদুর খেয়ে ফেলে। আমরাও শান্তিতে ঘুমাতে পারি। আমাদের খুব ভালো উপকার হয়। আর কুকুর থাকলে কখন কাকে কামড় দেয়। ভয়ে আতংকে থাকে। তাই দেখা যায় হাতেগোনা দু-এক বাড়ি কুকুর পোষে শখ করে। কিন্তু সবার পছন্দ না। কারও বাড়িতে থাক বা থাক বিড়াল অপছন্দের না। কুকুর মানুষের পায়ে কামড় দেয়। তাকে কেউ দেখতে পারে না সবাই ভয় করে যেমন তার থেকে দূরেও থাকে। দূর থেকে ঢিল, লাঠি দিয়ে তাড়ানোর ব্যবস্থা করে। একদিন নিশিতে বিড়ালের দুটি ছানা পৃথিবীর আলোর মুখ দেখলো। কুকুর সে খবর পেয়ে মহা খুশি। তার আনন্দ কে ধরে। ছানা দুটো বেশ মোটা তাজা কয়েক দিনে ভালোই বড় হয়েছে মা ছাড়াও একা একা খেলা করতে পারে, হঁাটতে-চলতে পারে। হঠাৎ কুকুরের কুনজর দুই ছানার ওপর পড়ে। কুকুরের বড় লোভ হয় এমন ভাবে এগিয়ে এলো যে ছানা দুটো খেয়ে ফেলবে। মা বিড়াল কুকুরের এভাবে আসা দেখে ছানা দুটো নিয়ে দৌড় দিল। মা বিড়াল সব বুঝতে পারলো। তখন কুকুরের চালাকির কারিসমা সব বলে দিল। ছানা দুটোকে শিখিয়ে দিল। বুকের মাঝে আগলে রাখে। মা বিড়াল খুবই আদর করে। এখন ছানা দুটো কুকুর দেখলে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে চলে আসে। কুকুরটি আর খেতে পারে না। কয়েকদিন পর মা বিড়াল কোথায় যেন চলেছে। ছানাদুটো খেলতে খেলতে দুজন দুদিকে ছোটাছুটি করে। পৃথক হয়ে যায়। এই সুযোগে কুকুরটি একটি বিড়াল ছানা খেয়ে ফেলে। মা বিড়াল বাড়ি এসে দেখে একটি ছানা কান্না করছে। আরেকটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বুঝতে আর বাকি রইলো না। কুকুর এই মন্দ কাজটি করেছে। খেয়ে ফেলেছে। মা বিড়াল তার প্রতিবেশীদের সব খুলে বললো। সবাই ফঁাদ পেতে থাকে কুকুর কখন আসবে। কুকুর সে এলাকায় তিনদিন পর এলো। কেউ কেউ দেখতে পেল। মা বিড়ালের সাথীরা তাকে মেরে এক পা ভেঙে দিল। কুকুরটি ভীষণ কষ্ট পেল। কুকুরটি তার সব ভুল বুঝতে পারলো। সে এখন তার সামনে অনেক জীব-জন্তু দেখে তবু কাউকে আক্রমণ করে না। খায় না। কিন্তু তবুও মানুষ তাকে দেখতে পারে না। দেখলে ঢিল ছোড়ে। পথে পথে অসহায় হয়ে ঘুরে বেড়ায়। সবাই ঘৃণা করে। সে ভালো সাজতে সবার কাছে প্রিয় হতে চায়। তার এমন জীবন আর ভালো লাগে না। কেউ তাকে ভালোবাসে না। সবাই দূর দূর করে। আর কেউ বিশ্বাস করে না। খারাপ কাজ করে বিশ্বাসের অমযার্দা করে। তার তো এমনটাই প্রাপ্য। ষষ্ঠ শ্রেণি ডুয়েট গাজীপুর