প্রিয়জন উম্মে

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

কুলসম নেসা
এক বনে এক টিয়া পাখি ছিল। পাখিটি রোজ রুমার বাসা যেত। খাবার খেয়ে চলে আসত। রুমা ভালোবেসে খাবার ছিটিয়ে দেয়। এভাবে প্র্রায় খাবার খেতো আর চলে যেত। রুমার খুব পছন্দ হয়। টিয়া পাখিটিকে ধরার প্রবৃত্তি করে। বাবাকে বলেছে বাজার থেকে একটি সুন্দর খঁাচা নিয়ে আসতে। পাখিটিকে রাখবে। সারাদিন তার সঙ্গে খেলা করে, কথা বলে সময় কাটাবে । একদিন রুমা পাখিটিকে চুপচাপ ধরে ফেলল। খঁাচার ভেতর রাখল । পাখিটি দ্রæত রুমার পোষ মেনে যায়। পাখিটিকে বাইরে ছেড়ে দিলেও রুমার কাছে চলে আসে। রুমার বন্ধু হয়ে যায়। যেখানে যায় সেখানে সঙ্গে রাখে। পাখিটি রুমার সব কথা বুঝে রুমাও তার কথা বুঝে। পাখির সঙ্গে সব শেয়ার করে। এখন পাখিটি কথা বলতে পারে রুমা খুব খুশি। সারাক্ষণ পাখিটিকে দুই নয়নের সামনে রাখে। ভালো ভালো খাবার দেয়। রুমা আর বাইরে খেলতে বের হয় না। সে টিয়া পাখির সঙ্গে খেলাধুলা করে। একদিন সব বন্ধুরা মাঠে খেলতে এসেছে কিন্তু রুমা নেই। লক্ষ্য করে ইদানীং রুমাকে দেখা যায় না। ব্যাপার কি? কি হয়েছে? অসুখ হলো কিনা? তাও জানি না। চলো বন্ধুরা আমরা রুমাদের বাড়ি যাব। রুমার বাড়ি এসে সবাই হতবাক। একটি সুন্দর ফুটফুটে টিয়া পাখির সঙ্গে খেলা করছে। এবার বুঝেছি রুমা আমাদের সঙ্গে খেলতে না যাওয়ার প্রধান কারণ। তারাও টিয়ে পাখির সঙ্গে কথা আদান-প্রদান করে বান্ধবির খেঁাজখবর নিয়ে চলে যায়। রুমার বান্ধবিদের মাঝে এক বান্ধবি খুব লোভী ও দুষ্টু টাইপের। রুমার বাড়ির পাশে দুষ্টু বান্ধবির বাড়ি। সে কয়েকদিন পর দুপুরে এলো রুমার বাড়ি। দেখল পাখিটি রুমার মাথার পাশে বসা। রুমা ঘুমিয়ে পড়েছে। এইতো সুন্দর সুযোগ এসেছে। পাখিটি হাতে নেয়া মাত্র কিচিরমিচির শব্দ করে। রুমা জেগে যায়। দ্রæত দৌড় পলায়ন করে। রুমা বুঝল তার বান্ধবি আমার কাছ থেকে সত্যি সত্যি শেষ পযর্ন্ত টিয়াপাখিকে চুরি করতে এসেছে। রুমা খুব কান্না করে। কোনো দিন তার কাছ থেকে হারিয়ে যাক বা কেউ চুরি করুক সে তা চায় না। অনেক ভালোবাসে টিয়া পাখিকে। রাত হয়ে এলো খুব আদর করে। এক সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। সকালে ঘুম থেকে উঠে টিয়ে পাখির পছন্দের খাবার আয়োজন করে। টিয়ে পাখি মনের সুখে খায় আর মিষ্টিমিষ্টি করে কথা বলে। আজকের কথায় অন্যেরকম এক মায়া মিশ্রিত আছে। রুমার বড্ড ভালো লাগে। সকালের ব্রেকফাস্ট শেষ করে টিয়া পাখিকে নিয়ে স্কুলে যায়। টিফিনির সময় সবাই খেলাধুলা করছে। রুমা টিয়া পাখিকে নিয়ে খেলা করছে। হঠাৎ একটি ইন্দারায় জাল পেঁচিয়ে পড়ে যায়। একবারে অতল গভীরে পানির কাছাকাছি। অনেক চেষ্টা করে অবশেষে উপরে নিয়ে আসা হলো। আনার পর দেখা গেল পাখিটি মারা গেছে। পাখিটি রুমার খুব প্রিয় ছিল। প্রিয়জনকে হারানোর যন্ত্রণা কত নিমর্ম যার হারায় সে বুঝে। রুমার চোখে অশ্রæর বৃষ্টি ঝরছে । মেনে নিতে তার কষ্ট হচ্ছে; এইতো দুপুরে নিয়ে খেলা করছে একসঙ্গে কথা বলছে। জমিয়ে আড্ডা। আর এখন নিশ্চুপ..... খুব আদরের পাখিটি আজ তার কাছে মৃত! ষষ্ঠ শ্রেণি উত্তরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়