তালহার বিজয় দিবস
প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
সোলায়মান জয়
ডিসেম্বর মাস। স্কুল বন্ধ।
তালহা টিভিতে কার্টুন দেখছে।
কার্টুনের মাঝেমধ্যে নানা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে।
এর মধ্যে একটা বিজ্ঞাপনে তালহার মন আটকে গেল।
বিজ্ঞাপনটা ছিল বিজয় দিবস নিয়ে।
যুদ্ধের কষ্ট আর বিজয়ের আনন্দ নিয়ে তৈরি বিজ্ঞাপনটা তালহার হৃদয়ে ছোঁয়া দিয়ে গেল।
মনে মনে ভাবতে লাগল দাদু বাড়ি এলে দাদুর থেকে জানতে হবে এই বিজয় দিবস কি? আর কিসের যুদ্ধ হয়েছিল।
বিকালবেলা দাদু বাড়ি এলো।
প্রতিদিনের মতো দাদুর সঙ্গে হাঁটতে বের হলো তালহা।
বাড়ি থেকে নেমেই দাদুকে প্রশ্ন করা শুরু করল-
আচ্ছা দাদু- বিজয় দিবস কি? আর কিসের যুদ্ধ হয়েছিল?
কখন হয়েছিল সেই যুদ্ধ?
-তালহার এমন প্রশ্ন শুনে দাদু নুরুল সাহেব চমকে উঠল।
সেই সঙ্গে এমন প্রশ্ন শুনে অনেকটা খুশিও হলো।
আমাদের গর্বিত ইতিহাস এভাবেই মুখে মুখে থেকে যাক প্রজন্মের পর প্রজন্মের।
এসব ভাবছিলেন আর হাঁটছিলেন।
তালহা দাদুর হাত ঝাঁকি দিয়ে বলল-
ও দাদুভাই বল না বিজয় দিবস কি? বল না, বল না?
নুরুল সাহেব তখন-
আচ্ছা দাদু বলছি তবে মন দিয়ে শুনবে-।
বিজয় হলো আমাদের দেশের জন্য যুদ্ধ করে যে জয় অর্জন করেছিলাম সেই জয়।
আর যেই দিন আমরা সেই বিজয় পুরোপুরিভাবে অর্জন করেছিলাম সেই দিনকে বিজয় দিবস বলি।
দিনটি হলো ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ ১৯৭১ সাল।
সেই দিন থেকে প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসকে বিজয়ের মাস বলি।
আর ডিসেম্বরের ১৬ তারিখকে বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করি।
আর যুদ্ধ হলো-আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুদ্ধ।
নিজেদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছিলাম আমাদের মুখের ভাষার জন্য
আমাদের স্বাধীনতার জন্য।
আমাদের সম্মানের জন্য।
আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য।
-দাদু তুমিও কি যুদ্ধ করেছিলে?
-তখন আমি ছোট ছিলাম।
আমার বয়স ১০ বছর।
প্রায় ৯ মাস চলেছিল সেই ভয়ানক যুদ্ধ।
আর ৯ মাসের যুদ্ধে আমরা হারিয়েছিলাম প্রায় ৩০ লাখ জীবন।
পুড়িয়ে দিয়েছিল অসংখ্য ঘরবাড়ি।
৯ মাস যুদ্ধের পর আমরা এই বিজয় পেয়েছি।
তাই এই বিজয় আমাদের ইতিহাসের এক মহান বিজয়।
তাই বিজয় দিবসে যেমন আমরা বিজয়ের আনন্দ করি।
তেমনই স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যেসব স্বজন শহীদ হয়েছে তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।
তোমরাও সারাজীবন বিজয়ের আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে সব শহীদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে কেমন?
-দাদুর কথা শুনে বিজয়ের মাস আর বিজয় দিবস সম্পর্কে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জন্ম নিল তালহার হৃদয়ে।
সেই সঙ্গে বুকে ধারণ করল সেই মহান বিজয়ের ছবি।
আর শ্রদ্ধার আসনে বসাল সেই ৩০ লাখ শহীদকে।