পহেলা বৈশাখের ইতিহাস

প্রকাশ | ১০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

গ্রন্থনা : প্রিন্স আশরাফ
সম্রাট আকবর তার সভার বিশিষ্ট গুণীজন ফাতেউলস্নাহ্‌ সিরাজীকে দিয়ে হিজরি চন্দ্রাব্দ এবং বাংলা পঞ্জিকার সমন্ব্বয়ে 'বাংলা বছর'-এর প্রচলন করেন, যা 'ফসলী সন' নামে ১৫৮৪-এর মার্চ মাসে প্রবর্তিত হয়। প্রকৃতপক্ষে ১৫৫৬ সালে সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের দিনটি থেকেই বঙ্গাব্দ বা বাংলা বছরের সূত্রপাত হয়। সম্রাট আকবরের আমল থেকেই বাংলা নতুন বছরাগমনের অর্থাৎ বৈশাখের প্রথম দিনটির উৎসবমুখর উদযাপন হয়ে আসছে। বছরের শেষদিন, চৈত্রসংক্রান্তির সূর্য পশ্চিমাকাশে ডুব দেয়ার আগেই পুরাতন অর্থবছরের সব হিসাব চুকিয়ে ফেলার নিয়ম। বছরের প্রথম দিন মহাজন, ব্যবসায়ীরা তাদের ক্রেতা বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করে মিষ্টিমুখ করানোর মাধ্যমে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবসায়িক লেনদেনের পুনঃসূচনা করতেন 'হালখাতা' বা হিসাবের নতুন খাতা খোলে। হালখাতার লুপ্তপ্রায় এই ধারাটা সোনা-ব্যবসায়ীরা আজও ধরে রেখেছে। সম্রাট আকবরের আমলে সর্বভারতে খাজনা আদায়ের নতুন বছরের সূচনা হলেও, পুরনো দিনের সব হিসাব পেছনে ফেলে আনন্দের নতুন বছরে পদার্পণ বাঙালিদের মধ্যে ঐতিহ্য হিসেবে টিকে গেছে 'পহেলা বৈশাখ' হিসেবে। সবচেয়ে বর্ণাঢ্য বৈশাখ উদযাপন হয় ঢাকা শহরকে ঘিরে। বছরের প্রথম সূর্যের আলোকে বরণ করে নিতে দলে দলে লোক সমবেত হয় রমনার বটবৃক্ষের তলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, যা সারা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করে। পাঞ্জাবি পরিহিত ছেলেদের পাশে খোঁপায় বেলিফুলের মালায় সজ্জিত হয়ে, লাল পেড়ে সাদা শাড়ির তরুণীরা মেতে ওঠে 'ইলিশ-পান্তা' উৎসবে।