মে দিবসের আনন্দে

প্রকাশ | ০১ মে ২০১৯, ০০:০০

শফিক নহোর
সাত সকালে উঠেই রান্না করতে হয়, মিনুর বাবার অফিস তার আবার শিফটিং ডিউটি আমি নিজে একটা গার্মেন্টে চাকরি নিয়েছি, মেয়েটা সকালবেলা স্কুল শেষ করে সারাদিন একা একা বাসায় বসে থাকে। কতকিছুর আবদার করে মেয়েটার কতকিছু শখ করে। ঘুরতে যেতে চায় আমরা একদিনও যেতে পারি না। সংসারের অভাবে ছুটির দিনেও ওভারটাইম করতে হয়। মেয়েটা সারাদিন মনমরা হয়ে থাকে। রঙিন টেলিভিশন দেখার খুব শখ, জানালা দিয়ে পাশের বাসার টেলিভিশন দেখে। জানালা দিয়ে নাকি দেখা যায়, রাতে যখন ডিউটি থেকে ফিরি মেয়ে কাছে এসে গল্প করে। মা টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুরে দেখছি, মিনার কার্টুন দেখছি, আমরা তো মা পানি ফুটিয়ে পান করি না। আজ দেখলাম টেলিভিশনে দেখাচ্ছে পানি ফুটিয়ে পান না করলে অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। মা আমার স্কুল ছুটি পহেলা মে দিবস। তোমার কি সেদিনও ডিউটি থাকবে। বাবাকে বলো না মা' আমরা সবাই মিলে ঘুরতে যাবো। কত সুন্দর সুন্দর জায়গা টেলিভিশনে দেখায়। মা জানো আজ স্মৃতিসৌধ দেখেছি। মা, বাবাকে বলো না। মে দিবসে ছুটি নিতে। তোর বাপ তো গস্নাস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে শুনছি গস্নাস ফ্যাক্টরি না কি বন্ধ থাকে না। ফার্নেস চুলা না, না কি কখনো বন্ধ করা যায় না। তোমার বাবা ওভারটাইম করলে টাকা পাবে। মা আমার না খুব শখ, বাবা আর তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো। মে দিবস মানে শ্রমিকদের ছুটি কোনো কাজ করতে হবে না। এই দিনে ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের মার্কেটের ম্যাসাকার শহীদদের আত্মত্যাগের স্মরণে এই মহান পহেলা মে দিবস। পৃথিবীর প্রায় ৮০টি দেশ মে দিবস পালন করে। মা আমি জানালা দিয়ে সুমনদের টেলিভিশনে দেখেছি। মা আজ তো মে দিবস। তুমি কি ডিউটিতে যাবে! আমাকে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাবে না? মিনুর মা-বাবা সঙ্গে সেদিন ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিল, মিনুর আনন্দে মিনুর মা হেসেছিল।