বন্ধু কি খবর বল?

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অভিজিত বড়–য়া বিভু
রাতুল বাবার মোবাইল থেকে ফোন দিয়ে বলল, ‘বন্ধু কি খবর বল’? তারপর আরও কত কি... তারপর রাতুলের বাবা রাতুলের কথাগুলো শোনার পর বলল, ‘বেশ তো বললে ‘বন্ধু কি খবর বল?।’ রাফির সাথে তোমার ক’দিনের বন্ধত্ব। রাফিকে তুমি কীভাবে চেনো?’ - না, মানে বাবা! আমি তো! - মানে আবার কি! তোমার সাথে রাফির ক’দিনের পরিচয়। বন্ধুত্বইবা হলো কীভাবে? ঠিক তোমার মতো করে বণর্না লিখে রেখো। ভয় বা লজ্জা কীসের? লিখে ফেলো। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে তোমার লেখাটা পড়ব। তবে অন্য কারও সাহায্য নেয়া যাবে না কিন্তু...। রাতুল ভাবে, কেন যে বাবার মোবাইল থেকে রাফিকে ফোন দিতে গেলাম। হুফ! কীভাবে যে কি লিখি! মা ওমা ...মা একটু এদিকে আসো না। -কি হলো রে? -দেখ না মা। বাবা আমাকে কি লিখতে বলে গেল। আমি নাকি...! - ও তাই! তোমার বুলবুলি আন্টির ছেলে রাফির কথা লিখতে বলল তো? সমস্যা কি। লিখে ফেলো। রাতুল আবার ভাবে, দুপুরে সঁাতার কাটব। বিকেলে ফুটবল খেলব। হাতে তো সময় নেই। কীভাবে লিখি। কিন্তু কখন লিখব? সন্ধ্যায় তো বাবা এসে লেখা চাইবে। আর সময় নষ্ট করা যায়ে না। পড়ার রুমে বসে রাতুল লেখা শুরু করে দিল... ‘সেবার মায়ের সাথে মাসিদের গ্রাম সোনাইছড়ি বেড়াতে গেলাম। দুপুরের খাবারের পর মা যখন আন্টি আংকেলদের সাথে গল্পে ব্যস্ত। তখন চোখে পড়ল সমবয়সী কিছু ছেলে মাঠে ফুটবল খেলার জন্য জড়ো হচ্ছে। তারপর মাকে বলে আমিও ওই মাঠে চলে গেলাম। কারও সাথে পরিচয় নাই। মাঠের এক পাশে দঁাড়িয়ে আছি। মনে মনে ভাবছি ওরা আমাকে খেলায় নিলে তো পারে। সাথে মজা করে খেলব। যেই ভাবা সেই কাজ। দুটি ছেলে সামনে এগিয়ে এসে বলল, খেলবে আমাদের সাথে। আমাদের দলে একজন প্লেয়ার কম। তাই..? তারপর তো আমি এক কথায় রাজি। সাথে কে কে খেলছে সবার নাম জানা গেল না। শুধু একজনের নাম জানা গেল। যার নাম রাফি। খেলা জমে উঠল। আমরা একটার পর একটা গোল দিতে লাগলাম। একটা গোল রাফি দিলে আরেকটা আমি দিচ্ছি এই অবস্থা। আমাদের মাঝে ভালো বোঝাপড়া হয়ে গেল। খেলা শেষ হবে হবে অবস্থায় মাঠে মা এসে হাজির। মা বলল, কিরে বাবা কত আর খেলবি। চল্ বাড়ি ফিরে চল্। কিন্তু এত সহজে আসা গেল না। অল্প সময়ের মধ্যে সবার সাথে ভালো ভাব জমে গেল। বিশেষ করে রাফির সাথে। রাফি আমাদের মাসির বাড়ি পযর্ন্ত আগ বাড়িয়ে দিল। আর ওর আব্বুর মোবাইল নাম্বার দিয়ে বলল, এই নাম্বারে ফোন দিও। রাফির সঙ্গে মা আলাপ করে জানলো রাফি নাকি মায়ের বান্ধবী বুলবুলি আন্টির ছেলে। তারপর প্রায় একমাস পর আজ রাফিকে ফোন দিলাম। মাসি বাড়ি ফুটবল খেলতে গিয়ে রাফির সাথে পরিচয় । বন্ধুত্ব।’ রাতুলের লেখা এই পযর্ন্ত শেষ। লেখা শেষ করে রাতুল এক দৌড়ে সঁাতার কাটতে চলে গেল। তারপর বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা। সন্ধ্যায় রাতুলের বাবা রাতুলের লেখা পড়ে বলল, বাহ! বেশ তো লিখলে। তোমার লেখা তো ভালো হলো। সঙ্গে তোমার মুখের কথাটাও ভালো হলো। বাবার মুখে এই কথা শুনে রাতুল আবাক হয়ে বলল, বাবা কোন কথাটা? রাতুলের বাবা বলল, কেন সেই কথাটি... । বন্ধু কি খবর বল?