আলোর দোকানদার

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

রকিবুল ইসলাম
খোকাকে সেদিন প্রশ্ন করা হলোÑ খোকা, তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও? খোকা এক থোকা হেসে বলল, আমি বড় হয়ে আলোর দোকানদার হতে চাই। উত্তর শুনে বাবা হাসতে লাগলেন। ছেলে বলে কী! আলোর দোকানদার, সেটা আবার কেমন? খোকা যতটুকু ওর দাদার কাছে শুনেছে, তা বলল। বই নাকি আলো। আর এই আলোই নাকি জ্ঞানের উৎস। জ্ঞানী হতে হলে আলোর প্রয়োজন। আর আলোর উৎস বই। সুতরাং খোকা আলোর দোকানদার হবে। খোকা এবার দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠেছে। নতুন বই কিনতে হবে। বাবা এবার খোকাকে সঙ্গে নিয়ে বইয়ের দোকানে গেলেন। বইয়ের দোকানে গিয়ে খোকা তো ভীষণ খুশি। তাকের ওপর থরে থরে বই সাজানো। নানান রং আর বিভিন্ন সাইজের বই। এত বই একসঙ্গে সে আগে কখনো দেখেনি। আনন্দে সে দোকানের ভেতরে ঢুকতে গেল। বাবা থামাতে গেলে দোকানদার বঁাধা দিলেন। খোকা দোকানদারকে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি আলোর দোকানদার? আপনি তো আলো বিক্রি করেন। আমিও বড় হলে আলোর দোকানদার হব। খোকার মুখে এমন কথা শুনে দোকানদার অবাক হয়ে গেলেন। এতটুকু একটা বাচ্চা ছেলে বলে কী! তোমার নাম কী বাবু? আমার নাম বিহাম। তুমি কোন ক্লাসে পড়ো? ক্লাস টু। দ্বিতীয় শ্রেণি। শুনে সবাই হেসে দিলেন। খোকা এবার ঘুরে ঘুরে বই দেখতে লাগল। কত রঙিন সব বই! এক একটা বইয়ের নামও আলাদা। সুন্দর ছবিঅলা বই। বাবা বললেন, তুমি কি কোনো বই নিতে চাও? খোকা চুপ করে থাকে। একটু ভেবে বলল, আমি সব বই নিতে চাই। আমি বাড়িতে বইয়ের দোকান দেবো। বাবা তার ক্লাসের বই নিলেন। পাশাপাশি আরও তিনটা গল্পের, একটা ছড়ার আর একটা কমিক্সের বই কিনে দিলেন। বাবা বললেন, এখন এগুলো নাও। পরে তোমার জন্য বাড়িতে বইয়ের দোকান দিয়ে দেবো। খোকা রঙিন বইগুলো পেয়ে নাকে ধরে গন্ধ শুঁকল। তারপর বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিল। দুদিন পরে বাবা একটি আলমারি আনলেন। আর আনলেন মজার মজার কিছু বই। খোকা বাবার সঙ্গে বইগুলো আলমারিতে সাজিয়ে রাখল। দাদুকে ডেকে এনে দেখালো। বলল, দেখো দাদু, আমার আলোর দোকান। এখন আমি আলোর দোকানদার। তুমি প্রতিদিন এসে বই নিয়ে পড়বে। আমিও তোমার সঙ্গে বই পড়বো।