ভাষা আন্দোলনের গল্প

প্রকাশ | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ইমাম সাজিদ
রেহান ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। সে প্রতিদিন বিকালবেলায় বাড়ির পাশের মাঠটায় বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে। কিন্তু সেদিন সে মাঠে খেলতে যায়নি। মাঠে না পেয়ে তার খেলার সাথিরা তাকে খোঁজ করার জন্য বাড়িতে আসে। তারপর তার মা বলেন, আজ রেহান খেলতে যাবে না, ওর আজ মন খারাপ। এরপর তার খেলার সাথিরা চলে যায়। রেহানের অভিমানটা একটু বেশিই, মন খারাপ করে চুপচাপ বসে আছে। কারণ তার বাবা তাকে কথা দিয়েছিলেন একুশে ফেব্রম্নয়ারির দিন ভোরবেলায় ভাষা আন্দোলনের গল্প শোনাবে, এবং আগের দিন সকালেই শহর থেকে বাড়িতে ফিরবে। একথা সে তার বন্ধুদেরও বলেছে। কিন্তু সকাল তো গেলই আবার দুপুর পেরিয়ে বিকালও প্রায় শেষের দিকে এখনো তার বাবা বাড়িতে আসেনি। রেহানের বাবা শহরে চাকরি করে। মাসে বাড়িতে ২-১ বার আসে। এদিকে আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাতের আঁধার চলে আসে। বাবার জন্য অপেক্ষা করতে করতে রেহান রাতে না খেয়েই কাঁদতে কাঁদতে একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়ে। অবশেষে রাস্তার জ্যামের কারণে রাত ১২টার দিকে বাড়িতে ফিরে তার বাবা। এসে দেখে রেহান ঘুমিয়ে আছে। তার মায়ের মুখে সব শুনে তাকে বাবা বাবা বলে ডেকে তোলেন। ঘুম ভাঙার পর রেহান যেন বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে তার বাবা এসেছে। এরপর তার বাবা তাকে নিজ হাতে ভাত খাইয়ে দেয়। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিছানায় বাবাকে জড়িয়ে ধরে রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। অতঃপর কাঙ্ক্ষিত দিনে অর্থাৎ একুশে ফেব্রম্নয়ারির ভোর সকালে তার বাবা তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। রেহান ঘুম থেকে উঠে পাশের বাড়ির তার বন্ধুদের ডেকে আনে। তার সব বন্ধুরা এলে তার বাবা সবাইকে একুশে ফেব্রম্নয়ারির ভাষা আন্দোলনের গল্প শোনায়। কীভাবে বাংলা ভাষার বিজয় হয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছিল তার গল্প শোনায়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের গল্প শোনায়। ৫২-র ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কের গল্প শোনায়। গল্প শেষ হলে রেহানের বন্ধুরা তার বাবাকে ধন্যবাদ জানায়। রেহান ও তার বন্ধুরা গল্প শোনে মাতৃভাষা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরে বেশ খুশি হয়। তারপর রেহানের বাবা বলেন, বিকেলে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। তোমরা সবাই এসো কিন্তু মনে করে।