শিশুতোষ গল্প

ভুল সংশোধন

প্রকাশ | ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

মোহাম্মদ আবদুর রহমান
ময়ূর নাচ করে বৃষ্টি হলে। তখন বনের অন্যান্য পাখিরা তার নাচ দেখে খুব আনন্দ পায়। ময়ূর বুঝতে পারে তার নাচ দেখে অন্যান্য পশু-পাখিরা প্রশংসা করছে। তাই তার মনে অহংবোধ সৃষ্টি হয়। সে ভাবে সব পশু-পাখিদের মধ্যে সেই সেরা। তাই সে সবসময় নিজেকে আলাদা করে রাখতে ভালো বাসে। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলে না। ময়ূরের এই ব্যবহারে সব দুঃখ পায়। এমন সময় আসে যখন সে নাচে তখন বনের অন্য পশু-পাখিরা আর নাচ দেখে না। ময়ূর আশ্চর্য হয়ে যায় তা দেখে। তার যেন আর নাচতে ইচ্ছা করে না। কেন নাচবে? যে নাচ অন্য কাউকে আনন্দ দিতে পারে না। আকর্ষণ করতে পারে না কাউকে। ময়ূর বুঝতে পারে নিজের ভুল। ময়ূর ভাবে বনের অন্য পশু-পাখিদের তার মন খারাপ হয়েছে। সে যখন নাচ্ছিল আর অন্য পশু-পাখিরা যখন দেখতো তখন সে যে আনন্দ পেত তা আজ খুব মিস করছে। তার ইচ্ছা করছে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে। কিন্তু লজ্জায় সে তা করতে পারে না। আসতে আসতে সে যেন একাকী হয়ে পড়েছে। তার মন ও শরীর নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। একদিন বৃষ্টি হচ্ছে; কিন্তু ময়ূর আর নাচে না। তা দেখে কোকিল পাখি তার কাছে গিয়ে বলে- কি হয়েছে ময়ূর তুমি নাচ না। তোমার সব অহংকার কোথায় গেল। ময়ূরের নীরবে চোখ দিয়ে অশ্রম্ন ঝরছে। কোকিল তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল- কাঁদছো কেন? কি হয়েছে তোমার? ময়ূর মৃদুস্বরে বলে- বুজতে পেরেছি নিজের ভুল। আমার ব্যবহারে দুঃখ পেয়ে কেউ আর নাচ দেখতে আসে না। বুঝতে পারছি যে নাচ কেউ দেখে না তার কোনো মূল্য নেই। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কোকিল ব্যথাতুর হয়ে বলল- ঠিক আছে ক্ষমা করে দিলাম। তুমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছ শুনে খুশি হলাম। চলো তোমাকে অন্য পশু-পাখিদের কাছে নিয়ে যাই। বুঝিয়ে বলব তোমার কথা। কোকিল অন্য পশু-পাখিদের একসঙ্গে জমা করে ঠিক তখন ময়ূর পৌঁছে যায় সেখানে। কোকিল সব কথা খুলে বলে। সব বুঝতে পারে ময়ূরের কথা। সব ক্ষমা করে দেয় তাকে। ময়ূর আবার নাচ করতে শুরু করে। আর পশু-পাখি দেখে আনন্দ উপভোগ করে। আর ময়ূর বুঝতে পারে অন্য পশু-পাখিরা আনন্দ পায় বলে তার নাচের দাম আছে।