বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম

নতুনধারা
  ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

মেয়েদের রিপ্রোডাক্টিভ অরগ্যান/প্রজনন অঙ্গগুলোর সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বা চঈঙঝ। বেশির ভাগ নারীদের ওভারিতে ছোট ছোট অনেক সিস্ট থাকে (সিস্ট হলো ছোট পানি ভরা থলি, আর একাধিক সিস্টকে একসঙ্গে বলা হয় পলিসিস্ট যা দেখতে মনে হয় পুঁতির মালার মতো ওভারি বা ডিম্বাশয়কে ঘিরে থাকে)। এ রোগটি যখন অনেক উপসর্গ নিয়ে দেখা দেয় তখন একে বলা হয় পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম যা সংক্ষেপে চঈঙঝ বলা হয়। এ রোগটি হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যখন মহিলাদের ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্ট্রেরন নামক সেক্স হরমোন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন হরমোন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়। চঈঙঝ নারীদের ঋতুচক্রে অনিয়ম, প্রজননে সমস্যা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি হয়।

চঈঙঝ-এর কারণ

চঈঙঝ-এর সঠিক কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি, তবে ধারণা করা হয় সেক্স হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়।

চঈঙঝ-এর লক্ষণ বা উপসর্গ

চঈঙঝ-এর উপসর্গ শুরু হয় সাধারণত নারীদের ঋতুচক্র শুরু হওয়ার পর থেকেই। তবে উপসর্গের ধরন এবং তীব্রতা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। সবচেয়ে বেশি যে উপসর্গ সবার মধ্যে দেখা দেয় তা হলো অনিয়মিত পিরিয়ড। এ ছাড়া সাধারণত কিছু পুরুষালী বৈশিষ্ট্য দেখা দিতে থাকে। যেমন-

১. ঠোঁটের নিচে, গালে বা চিবুকে কখনো বা বুকে, পেটে, পিঠে, হাতে এবং পায়ের আঙুলে অবাঞ্ছিত পুরুষালি লোম/ চুল গজায় (যা ওভারি থেকে মাত্রাতিরিক্ত পুরুষ হরমোন অ্যান্ড্রোজেন-ইস্ট্রোজেন বেড়ে যায় বলে এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়).

২. শুরুতে অনিয়মিত পিরিয়ড/ মাসিক হয়, হরমোনের তারতম্য বেশি হলে দুই-তিন মাস পরপর কিংবা বছরে দুই-তিনবার বা তারও কম পিরিয়ড হয়। কারও আবার অতিরিক্ত বিস্নডিং হয়।

৩. বন্ধ্যত্ব বা সন্তান ধারণে অক্ষমতা।

৪. শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমা।

৫. স্তনের আকার ছোট হয়ে যায়।

৬. গলার স্বর গভীর হয়ে যায়।

৭. চুল পড়তে শুরু করে।

এ ছাড়া অন্যান্য উপসর্গ

ব্রণ, ত্বকে আঁচিল, শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, কোমরের নিচের অংশ ব্যথা, মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা, অনিদ্রার এবং ঘুমের সময় নিশ্বাসে সমস্যা, অতিরিক্ত ইন্সুলিনের উৎপাদন, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস হওয়া, উলিস্নখিত উপসর্গের অনেকগুলোই অনেকের ক্ষেত্রে হয়তো দেখা নাও দেখা দিতে পারে।

ঝরমহ /চিহ্ন

১. ওভারি আকারে বড় হয়ে যায়।

২. ডিম্বাশয়ের চারদিকে অসংখ্য তরল পূর্ণ সিস্ট তৈরি হয়।

৩. অতিরিক্ত বিস্নডিং হওয়া।

৪. স্তন ছোট হওয়া।

৫. অবাঞ্ছিত পুরুষালি লোম/ চুল গজায়।

৬. অ্যান্ড্রোজেন নামক হরমোন নারী দেহে উৎপাদনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।

৭. ইন্সুলিন এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।

ল্যাবরেটরি পরীক্ষা

১. ঝবৎঁস ঞড়ঃধষ/ঋৎবব ঞবংঃড়ংঃবৎড়হব, ঙবংঃৎড়মবহ, চৎড়মবংঃবৎড়হব, ঢ়ৎড়ষধপঃরহ ্‌ খঐ. ২. ঝবৎঁস ঞড়ঃধষ/ঋৎবব ঞঝঐ, ঞ৩, ঞ৪. ৩. ঝবী যড়ৎসড়হব নরহফরহম মষড়নঁষরহ (ঝঐইএ) ৪. ঐন অ১প. ৫. ঐঈএ

৬. খরঢ়রফ চৎড়ভরষব

অন্যান্য পরীক্ষা

১. ঞৎধহংাধমহধষ/ চবষারপ / অনফড়সরহধষ টষঃৎধংড়ঁহফ

চিকিৎসা পদ্ধতি

চঈঙঝ-এর এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি নেই। সাধারণত ল্যাপারোস্কপি করে সিস্ট রাপচার করা হয় (ওভারিয়ান ড্রিলিং)। এ চিকিৎসাপদ্ধতি ওভারি থেকে হরমোনের অস্বাভাবিক নিঃসরণকে স্বাভাবিক করে ডিম্বস্ফুটনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যারা বাচ্চা নিতে চান না এবং অনিয়মিত মাসিকে ভুগছেন তাদের মাসিক নিয়মিত করার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল বা প্রজেস্টেরন জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোগীর লক্ষণ, চিহ্ন এবং চাহিদা অনুযায়ী রেজিস্ট্রার হোমিওপ্যাথিক চিকিসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিম্ন ওষুধগুলো সেবন ও উপদেশ গ্রহণ করা যেতে পারে।

জী .

১. ঝবঢ়রধ: ঋড়ৎ ধনহড়ৎসধষ যধরৎ মৎড়ঃিয ড়হ :যব ভধপব, বংঢ়বপরধষষু ড়হ ঁঢ়ঢ়বৎ ষরঢ়ং, অপহব ফঁব :ড় চঈঙঝ.

২. চঁষংধঃরষষধ: ঋড়ৎ ঝঁঢ়ঢ়ৎবংংবফ ড়ৎ অনংবহঃ গবহংবং ধহফ ওহভবৎঃরষরঃু ঢ়ৎড়নষবস ফঁব :ড় চঈঙঝ.

৩. ঊঁঢ়যৎধংরধ: ঋড়ৎ ঝপধহঃু ধহফ ঝযড়ৎঃ উঁৎধঃরড়হ ড়ভ চবৎরড়ফং রহ চঈঙঝ.

৪. ঘধঃৎঁস গঁৎ: ঋড়ৎ চঈঙঝ রিঃয ওৎৎবমঁষধৎ ধহফ ঝঁঢ়ঢ়ৎবংংবফ গবহংঃৎঁধষ ঈুপষবং.

৫. ঈধষপধৎবধ ঈধৎন: ঋড়ৎ ঙনবংরঃু রহ ফঁব :ড় চঈঙঝ.

৬. ঞযঁলধ: ঋড়ৎ বীপবংং ধহফৎড়মবহ ধহফ ৎবফঁপরহম বীপবংংরাব যধরৎ মৎড়ঃিয ফঁব :ড় চঈওঙঝ.

উপদেশ

১. পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বা চঈঙঝ-এর মূল নিরাময়ক হচ্ছে নিয়মিত শরীরচর্চা এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।

২. নিয়মিত বছরে কমপক্ষে ২ বার চিকিৎসা পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে এবং ওষুধ সেবন করতে হবে।

৩. মাসিকের সময় অবশ্যই দিনে কমপক্ষে ৩ বার স্যানিটারি প্যাড পরিবর্তন করতে হবে।

\হডা. মাজেদা আক্তার

বিএইচএমএস - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রভাষক

ফেডারেল হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।

০১৮১৬০৫১৩০৪

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে