রূপচচার্য়

কঁাচা হলুদের জাদুকরী ব্যবহার!

প্রকাশ | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক
কঁাচা হলুদ বাটা, আঙ্গুরের রস ও গোলাপ জল মিশিয়ে ব্রণের ওপরে লাগান। কিছু সময় পর ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ মিলিয়ে যাবে ও ইনফেকশন হবে না। ব্রণের দাগ দূর করতে কঁাচা হলুদ ও নিমপাতা বেটে দাগের ওপর লাগান। বলিরেখা দূর করতে কঁাচা হলুদের সঙ্গে দুধের সর মিশিয়ে মুখে মাখুন ফেস প্যাক হিসেবে। নিয়মিত ব্যবহারে অবশ্যই দারুণ উপকার পাবেন। ত্বকের অ্যালাজির্র সমস্যায় হলুদের রস মেশানো পানিতে গোসল করলে অ্যালাজির্ ও র?্যাশ অনেকটাই কমে যায়। হলুদ আমাদের প্রত্যেকের রান্নাঘরে ভীষণ সহজলভ্য একটি উপাদান। হলুদ ছাড়া বাঙালিদের রান্না যেন কল্পনাই করা যায় না। সেই প্রাচীনকাল থেকেই হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানান রকম চিকিৎসায় আর সেই সঙ্গে কঁাচা হলুদ রূপচচার্র অন্যতম উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ। কঁাচা হলুদে আছে অ্যান্টি এজিং উপাদান, তাই ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করতে হলুদের জুড়িমেলা ভার। আবার অন্যদিকে হলুদ অ্যান্টি সেপটিক হিসেবেও চমৎকার কাজ করে, তাই ব্রণ দূর করতে বা ক্ষত সারাতেও অতুলনীয়। আসুন জেনে নিই সৌন্দযর্চচার্য় কঁাচা হলুদের কয়েকটি অনবদ্য ব্যবহার। ব্রণের চিকিৎসায়- ব্রণ সারাতে হলুদের মতন চমৎকার প্রাকৃতিক উপাদান খুব কমই আছে। ব্রণের ইনফেকশন কমানো হতে শুরু করে ব্রণের দাগ দূর করা পযর্ন্ত হরেক রকম ব্যবহার আছে এর। নিম্নে রইল সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি। ১) যাদের প্রচুর ব্রণ ওঠে তাদের জন্য কঁাচা হলুদ জাদুর মতো কাজ দেয়। ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কঁাচা হলুদ বাটা, আঙ্গুরের রস ও গোলাপ জল মিশিয়ে ব্রণের ওপরে লাগান। কিছু সময় পর ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ মিলিয়ে যাবে ও ইনফেকশন হবে না। ২) কঁাচা হলুদ বেটে রস করে নিন। এই হলুদের রসের সঙ্গে মুলতানি মাটি ও নিমপাতার রস একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে ফেস প্যাকের মতন মুখে লাগান। প্যাক শুকিয়ে এলে গোলাপজল দিয়ে আলতো হাতে ম্যাসাজ করে নিন এবং পানির সাহায্যে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের প্রকোপ কমবে। ৩) ব্রণের দাগ দূর করতে কঁাচা হলুদ ও নিমপাতা বেটে দাগের ওপর লাগান। কিছুদিন লাগালে দাগ মিলিয়ে যাবে। ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করতেÑ যুগে যুগে কঁাচা হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার আকাক্সক্ষায়। তবে ব্যবহার করতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে। ৪) কঁাচা হলুদ বাটা, বেসন, চালের গুঁড়া ও টকদই এক সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার সারা মুখে ও গলায় লাগান। শুকিয়ে গেলে হালকা হাতে ঘষে তুলে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে তিনদিন লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হবে। ৫) কঁাচা হলুদ ও মসুর ডাল একত্রে বেটে নিয়ে সঙ্গে মুলতানি মাটি ও গোলাপজল সহযোগে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও মসৃণ। ৬) কঁাচা হলুদ ও শুকনো কমলার খোসা একত্রে বেটে স্ক্রাবার হিসেবে পুরো শরীরে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে আসবে অন্য রকম জেল্লা। বলিরেখা, রোদে পোড়া ও অ্যালাজির্র জন্যÑ ৭) বলিরেখা দূর করতে কঁাচা হলুদের সঙ্গে দুধের সর মিশিয়ে মুখে মাখুন ফেস প্যাক হিসেবে। নিয়মিত লাগালে অবশ্যই দারুণ উপকার পাবেন। ৮) রোদে পোড়া দাগ কমাতে মসুর ডাল বাটা, কঁাচা হলুদ বাটা ও মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ৯) যাদের অ্যালাজির্র সমস্যা আছে হলুদ মেশানো পানিতে গোসল করলে অ্যালাজির্ ও র‌্যাশের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। মনে রাখবেন হলুদ দিয়ে কখনো রোদে বের হবেন না, তাহলে ত্বক পুড়ে কালো হয়ে যাবে। আর তাই হলুদ দিয়ে রূপচচার্ করবেন রাতের বেলা। কখনই দিনের বেলা নয়। গোটা বিশ্বজুড়ে এই গাছের জুস বা রস ক্যাপসুল বা জেলের আকারে বিক্রি হচ্ছে। এই জেলের ভেতরে আছে বিশটি অ্যামিনো এসিড যা থেকে বিজ্ঞানীরা বলেন প্রাণের সৃষ্টি। এই ২০ অ্যামিনো এসিডের আটটি দেহের মধ্যে তৈরি হয় না। এটা বাইরে থেকে খাদ্যের আকারে গ্রহণ করতে হয়। এটা আসে ঘৃতকুমারী থেকে। মেছতা দূর করার আরেকটি উপাদান হলো অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী পাতার জেল। এই জেলের রয়েছে ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করার ক্ষমতা। আক্রান্ত স্থানে আঙুলের ডগার সাহায্যে ধীরে ধীরে জেল ঘষে লাগাতে হবে এবং সারা রাত লাগিয়ে রাখতে হবে। এভাবে কয়েক সপ্তাহ লাগালে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে। এ ছাড়া অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ভিটামিন-ই এবং প্রিমরোজ অয়েল মিশ্রিত করে লাগালে এক সপ্তাহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে জেলের শরবত খেলে ভালো হবে। অ্যালোভেরাতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, ফলিক এসিড, বি১, বি২, বি৩, বি১২। প্রায় ২০ রকমের মিনারেলস যেমন ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, সোডিয়াম, আয়রন পটাশিয়াম, কপার ইত্যাদি। মানবদেহের জন্য ২২টি অ্যামিনো এসিড প্রয়োজন আর এর মধ্যে ৮টি উপাদান থাকা অনস্বীকাযর্। প্রধান ৮টি উপাদানসহ আনুমানিক ২০টি অ্যামিনো এসিড অ্যালোভেরায় বিদ্যমান। মানবদেহের টিস্যু নিষ্প্রাণ হয়ে গেলে, ত্বকে ফুসকুড়ি উঠলে অ্যালোভেরা জেল খুবিই উপকারী। যাদের অ্যালাজির্র সমস্যা তীব্র তারা ১ মাস নিয়মিত অ্যালোভেরার শরবত খেয়ে দেখুন, জাদুকরি ফল পাবেন। নতুন চুল গজানোর জন্য অ্যালোভেরার রস নারিকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসেজ করে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন, সপ্তাহে ২ বার করে ২ মাস। পরিবতর্ন নিজেই লক্ষ্য করতে পারবেন। এ ছাড়াও অ্যালোভেরার রস চুলকে কন্ডিশনিং করে মোলায়েম হতে সাহায্য করে যা অনেকদিন স্থায়ী থাকে। খুশকি দূর করতে এটি প্রহরীর মতো কাজ করে। এটি রক্তের কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে।