শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী কোমরব্যথা

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
  ০৫ মে ২০২১, ০০:০০

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য কোমরব্যথা কষ্টকর এক অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে তৃতীয় ট্রাইমিস্টার বা গর্ভকালের শেষ ভাগে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। কারণ, আমাদের মেরুদন্ডের লাম্বার রিজন বা কোমরের অংশে একটি 'সি' আকৃতির কার্ভ থাকে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় লাম্বার লরডোটিক কার্ভ বলা হয়। এটি আমাদের কোমরের মুভমেন্ট বা নড়াচড়া করতে সাহায্য করে।

গর্ভকালে, বিশেষ করে শেষ তিন মাসে যখন বাচ্চার ওজন ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে, তখন মায়ের পেটের আকৃতিও বাড়তে থাকে। ফলে এই বাড়তি ওজন বহন করতে মায়ের মেরুদন্ডের কোমরের অংশের মাংসপেশিগুলোকে বেশি সক্রিয় থাকতে হয়। পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বা মা পেটের বাড়তি ওজন বহন করে কিছুটা পেছনের দিকে বাঁকা হয়ে যান। এর ফলে কোমরের মাংসপেশি ও স্পাইনাল লিগামেন্টগুলো দুর্বল হয়ে যায়। তখন ব্যথা অনুভূত হয়।

যেহেতু এ সময় ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়, তাই সাধারণত মায়েরা ব্যথা সহ্য করে থাকেন। কিন্তু প্রসবপরবর্তী সময়ে এই অতিরিক্ত সক্রিয় মাংসপেশিগুলো আরও বেশি শিথিল ও দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ব্যথা আরও বেড়ে যায়। অনেকেই ধারণা করে থাকেন, সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য দেওয়া ইনজেকশনই পরবর্তী ব্যথার জন্য দায়ী। কিন্তু তা পুরোপুরি ঠিক নয়। কোমরের মাংসপেশি, লিগামেন্ট ও লাম্বার স্পাইনের স্বাভাবিক বক্রতা বেড়ে যাওয়ার ফলে এই ব্যথার সৃষ্টি হয়।

করণীয়: গর্ভকালীন কোমরব্যথায় যেহেতু ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা যায় না, তাই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা কাজে লাগাতে হয়। এ ক্ষেত্রে সুপারফিসিয়াল থার্মোথেরাপির পাশাপাশি কিছু থেরাপিউটিক ব্যায়াম করতে হবে। যেমন স্ট্যাটিক ব্যাক মাসল এক্সসারসাইজ, পেলভিক ব্রিজিং এক্সারসাইজ ইত্যাদি। এগুলো গর্ভকালীন কোমরের মাংসপেশির শক্তি বজায় রাখে ও গর্ভকালীন কোমরব্যথা অনেকাংশে কমায়।

প্রসবপরবর্তী ফিজিওথেরাপিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে কোমর ও পেটের শিথিল হয়ে যাওয়া মাংসপেশিগুলোর শক্তি বাড়ানোর জন্য কিছু থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম আছে। যেমন পেলভিক-ফোর এক্সারসাইজ, ব্যাক মাসল স্ট্রেংদেনিং এক্সারসাইজ, অ্যাবডোমিনাল এক্সারসাইজ ইত্যাদি। ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করলে প্রসবপরবর্তী কোমরব্যথা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে