শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কীভাবে বুঝবেন শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি বাড়ছে

সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা সবার সমান নয়। কারও অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেশি, কারও বা কম। কিন্তু কী দেখে বোঝা যাবে, কার শরীর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কোনো জায়গায় রয়েছে?

আমেরিকার ভিসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের গবেষণাপত্রে এ বিষয়েই নতুন তথ্য উঠে এসেছে। হালে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে চারটি লক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এই লক্ষণগুলো শরীরে দেখা গেলে বোঝা যাবে, শরীরে ভালো মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

আমেরিকার ১১৩ জন করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখে গবেষণার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন দলের সদস্যরা। তাদের কথায়, যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কোভিডের চিকিৎসা করান, তাদের শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে। যারা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করান, তাদের শরীরে সেই অ্যান্টিবডির পরিমাণ তুলনায় কম থাকে। এ ছাড়াও বেশকিছু লক্ষণ রয়েছে- যা দেখে বোঝা যাবে, শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা কেমন। যেমন, জ্বর বা পেটের গন্ডগোল থাকলে তার অর্থ, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। কিন্তু শ্বাসকষ্ট আর গন্ধ না পাওয়ার লক্ষণ মানেই, আক্রান্তের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির মাত্রা খুবই কম।

শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি কিনা, তা বোঝার জন্য যে চারটি লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে বলে গবেষকরা জানাচ্ছেন, সেগুলো হলো:

জ্বর: শরীরে যে কোনো ধরনের সংক্রমণ হলেই জ্বর আসে। কারণ শরীর নিজের উত্তাপ বাড়িয়ে সে রোগের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করে। কোভিডের ক্ষেত্রেও তাই। পাশাপাশি, ভিসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, কোভিডের সময় শরীর যখন উত্তাপ বাড়িয়ে ফেলে, তখন সে দ্রম্নত হারে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। 'শরীরের কোথাও প্রদাহ হলেই জ্বর আসবে। কিন্তু কোভিডের ক্ষেত্রে দ্রম্নত হারে অ্যান্টিবডি তৈরির সময়ও উত্তাপ বেড়ে যায়', বলছে এই গবেষণায়। ফলে যে সব কোভিড আক্রান্তরা জ্বরে ভুগেছেন, তাদের অনেকেরই শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে এই গবেষণাপত্রে। যে সব কোভিড আক্রান্তরা জ্বরে ভুগেছেন, তাদের অনেকেরই শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে একটি গবেষণাপত্রে।

খিদে কমে যাওয়া: যে কোনো ধরনের সংক্রমণেই খিদে কমে যায়। কোভিডের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। খিদে কমে যাওয়ার মানেও শরীর দ্রম্নত হারে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। তাই জ্বরের পাশাপাশি যদি কোনো কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তির খিদে কমে যায়, তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, তার শরীর লড়াই করার জন্য বেশি পরিমাণে প্রস্তুত হচ্ছে। এমনটাই বলছে এই গবেষণাপত্র।

পেটের গন্ডগোল: ডায়েরিয়া বা পেটের গন্ডগোল কোভিডের অন্যতম লক্ষণ, এ কথা এখন অনেকেই জানেন। যদিও ভিসকনসিনের গবেষকদল বলছে, এই লক্ষণের বহু ক্ষেত্রের অর্থ হলো শরীরে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তারা পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছেন, যে যারা কোভিড আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হন, তাদের পেটের গন্ডগোল সাধারণত বাড়ে না। কিন্তু যারা বাড়িতেই চিকিৎসা করান, তাদের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা বাড়তে পারে। এর পেছনে কাজ করে বিপুল পরিমাণে অ্যান্টিবডির উৎপাদন। অর্থাৎ কোভিডের মধ্যে পেটের গন্ডগোল থাকলে ধরে নেওয়া যায়, শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করছে।

পেট ব্যথা: ডায়েরিয়া বা পেটের গন্ডগোলের মতোই পেট ব্যথার মানেও শরীর বিপুল পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। এমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকরা। যদিও তাদের মতে, এই বিষয়ে আরও গবেষণার দরকার, তবেই একটা সুসংহত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাবেন বলে মত তাদের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে