এই শীতে সোনামণির যতœ

প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক
শীতে প্রকৃতিতে যে পরিবতর্ন আসে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিশুর একটু কষ্টই হয়। এ ক্ষেত্রে তাই মা-বাবাকে সতকর্ হতে হবে। শিশুর ত্বক ও শ্বাসতন্ত্র নাজুক এবং অপরিণত। তাই শিশু তাপ ধরে রাখতে পারে না, সহজে ঠাÐা হয়ে যায়। এ জন্য তাকে পযার্প্ত শীতের কাপড় পরাতে হবে। তবে এর মানে এই নয় যে, শিশুকে নাক মুখ বন্ধ করে শক্ত করে মুড়িয়ে দিতে হবে। শীতের কাপড় যে আরামদায়ক হয়। সেদিকে খেয়াল রাখার পাশাপাশি খুব সকালে এবং রাতে যখন বেশি শীত পড়ে কিংবা যখন বাইরে বের হবে, তখনই বেশি সতকর্তা জরুরি। অন্য সময় হালকা মোটা কাপড় পরালেই হলো। শীতে ঘাম কম হওয়ার কারণে শিশুর প্রস্রাব বেশি হয়। এ জন্য নবজাতকের কঁাথা ভিজে যাচ্ছে কিনা বা একটু বড় শিশুর প্যান্ট ভিজেছে কিনা তা সবসময় খেয়াল রাখতে হবে। অনেকে বেশি প্রস্রাব করছে দেখে শিশুকে বুকের দুধ ও তরল খাবার কমিয়ে দিন। এটি খুবই মারাত্মক একটি পদক্ষেপ, যা কখনই করা উচিত নয়। এতে কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। শীতে সোনামণিদের কোমল ত্বকের যতেœ অবশ্যই ভালো মানের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। শুধু মুখে নয়, সারা শরীরে। শিশুকে পযার্প্ত সময় রোদে রাখতেও ভুলবেন না। শীতে গোসল করতে কিন্তু বাধা নেই। কুসুম গরম পানি দিয়ে শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে পারেন। তবে গোসল করানোর সময় কানে যাতে পানি না ঢোকে, সেদিক খেয়াল রাখতে হবে। আর শরীর ভালোভাবে মুছতে ভুলবেন না। শীতে শিশুর এক ধরনের ডায়রিয়া হয়। এতে রক্তও যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত এ ডায়রিয়া দেখে ভয় পাবেন না। স্যালাইন, বুকের দুধ ও পযার্প্ত তরল জিনিস খাওয়াতে থাকুন। ডাক্তারের পরামশের্ সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক দিলে এ ডায়রিয়া সেরে যায়। শীতে শিশুর সদির্ কাশির বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত। এগুলোয় অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো দরকার পড়ে না। জ্বর, নাকে পানি পড়া কিংবা কাশির জন্য সাধারণ কিছু ওষুধেই এসব ভালো হয়ে যায়। অনেকের আবার তাও লাগে না। লবণ পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার এবং বুকের দুধ ও পযার্প্ত তরল খাবার খাওয়ালেই ভালো হয়ে যায়। তবে শিশু দ্রæত শ্বাস নিলে বুক নিচের দিকে দেবে গেলে বা টানা কয়েকদিন জ্বর থাকলে ডাক্তারের পরামশর্ নিন। শিশু অচেতন হয়ে গেলে, খিঁচুনি হলে, কিছুই খাওয়ানো না গেলে অথবা সবকিছুই বমি করে ফেলে দিলে দ্রæত হাসপাতালে নিতে হবে। শিশুকে নিয়ে বেশি ভয় থেকে কিংবা বায়োজ্যেষ্ঠদের পরামশের্ শীতে অনেক মা খাওয়া-দাওয়া ও জীবনাচরণে খুবই কঠোরতা অবলম্বন করেন। বিশেষ করে নবজাতকের মায়েরা এসব বেশি করেন। অনেকে নিজের সদির্-কাশি হলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেন। গ্রামাঞ্চলের মতো শহরেও এসব ঘটনা বিরল নয়। এসবে শিশুর তো লাভ হয়ই না বরং ক্ষতি হতে পারে। আসলে বিভিন্ন ঋতুর মতো শীতেও শিশুর নানা রোগ হতে পারে, এ জন্য দুশ্চিন্তার কারণ নেই। প্রয়োজনে তারা একজন শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসকের কাছে গেলেই যে তিনি দামি ওষুধ লিখে দেবেন তা কিন্তু নয়। ওষুধের চেয়ে পরামশর্ ও নিদের্শনা মেনে চলাটা জরুরি। আসলে এ শীতে শিশুকে নিয়ে অহেতুক উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং সতকর্তা অবলম্বন করলে তবেই আপনার সোনামণি থাকবে রোগমুক্ত।