চাপ কমার ১০ উপায়

বতর্মান ব্যস্ত নাগরিক জীবনে যেন মানসিক চাপ বেড়েই চলেছে। নানাভাবে আমাদের মানসিক অবস্থার ওপর চাপ পড়ছে। আমাদের চারপাশের নানা হট্টগোলের মাঝে নিজেকে শান্ত, স্থির রাখা কঠিন ব্যাপার। দীঘর্ কমর্ঘণ্টা, মিটিংয়ের সময়সূচি, গালগপ্পো-আড্ডা, পরিবারের যতœ-আত্তির মাঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে নানা ঝঞ্ঝাটের মধ্যে পড়ে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানো অসম্ভব নয়। সেই কারণে শান্ত থাকা এবং নিজেকে স্থির রাখার গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রকাশ | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি হেলথ ডেস্ক
বতর্মান ব্যস্ত নাগরিক জীবনে যেন মানসিক চাপ বেড়েই চলেছে। নানাভাবে আমাদের মানসিক অবস্থার ওপর চাপ পড়ছে। আমাদের চারপাশের নানা হট্টগোলের মাঝে নিজেকে শান্ত, স্থির রাখা কঠিন ব্যাপার। দীঘর্ কমর্ঘণ্টা, মিটিংয়ের সময়সূচি, গালগপ্পো-আড্ডা, পরিবারের যতœ-আত্তির মাঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে নানা ঝঞ্ঝাটের মধ্যে পড়ে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানো অসম্ভব নয়। সেই কারণে শান্ত থাকা এবং নিজেকে স্থির রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। কিছু অভ্যাস গড়ে তুললে সংকটকালীন মুহ‚তর্গুলোতে শান্ত থাকতে, স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করবে... ১। গভীরভাবে দম নিন : যখন আপনি চাপের মাঝে আছেন, এক মিনিট অবসর নিন। এ সময় পঁাচবার গভীরভাবে দম নিন ও দম ছাড়ুন। অবলোকন করুন আপনার চাপ ধীরে ধীরে আপনাকে ছেড়ে যাচ্ছে। ২। পেশী শিথিল করুন : শরীরের সেই অংশগুলোকে চিহ্নিত করুন যেখানে পেশী শক্ত হয়ে আছে, যেমন দৃঢ় চোয়াল, শক্ত কঁাধ, জমে ওঠা পেশি। এবার আলতোভাবে মালিশ করে শিথিল করে দিন। ৩। অতি বিশ্লেষণ বন্ধ করুন : আপনি যখন কোনো কিছু নিয়ে অযথাই দুশ্চিন্তা করেন তখন তা অনাকাক্সিক্ষতভাবে আপনার মনের মধ্যে চাপের সৃষ্টি করে। আপনার নিয়ন্ত্রণাধীন নয় এমন বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া বন্ধ করুন। যদি নিজেকে কোনো কিছু নিয়ে অতি বিশ্লেষণ করতে দেখেন : আশপাশ থেকে হেঁটে আসুন, পছন্দের গান শুনুন কিংবা এমন কিছু পড়ুন যা আপনার মনযোগকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করবে। আপনার ভালো লাগে এমন বিষয়ে দৃষ্টিপাত করুন। ৪। শান্তিপূণর্ বিষয় বা স্থান কল্পনা করুন : সমুদ্র সৈকত কিংবা কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশের মতো শান্তিময় কোনো স্থানে নিজেকে কল্পনা করুন। এমন কারও সঙ্গ কল্পনা করুন যার উপস্থিতি আপনাকে নিমিষেই শান্ত করে কিংবা এমন কোনো পরিস্থিতি যা আপনাকে অতীতে শান্ত রেখেছিল। ৫। কমর্সূচি ঠিক করুন : প্রতিদিন কিছু আগেই ঘুম থেকে উঠে ওই দিনের করণীয়গুলোর একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা করে নিন। একটা একটা করে দিনের কাজ শেষ করুন। এভাবে অপ্রয়োজনীয় কাজ এবং চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন, জরুরি এবং গুরুত্বপূণর্ কাজগুলোকে যথাযথভাবে শেষ করুন। এক একটি কাজের সমাপ্তি আপনার মনে একটা অজের্নর অনুভ‚তি এনে দেবেÑ যা হবে আপনার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। ৬। গুছিয়ে কাজ করুন : আপনার আশপাশে ঘরে কিংবা কমর্স্থলে সব কিছু গুছিয়ে রাখুন। অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সরিয়ে ফেলুন। অগোছালো কিংবা এলোমেলো পারিপাশ্বির্কতাও আমাদের মনের মধ্যে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। ৭। আত্মকেন্দ্রিক আচরণ পরিহার করুন : অনেক সময় আমরা নিজেকে নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি। এ সময় সাধারণত আমরা আমাদের অপূণর্ চাওয়া কিংবা সমস্যাগুলো নিয়েই ভাবি। এমন আত্মকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা আমাদের মধ্যে হতাশা ও মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। তাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত না থেকে অন্যদের মঙ্গলের কথা ভাবুন। অন্যের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন, এতে আপনার মন এক অপাথির্ব আনন্দে ভরে উঠবে। ৮। সামাজিক হোন : যখন আপনার মধ্যে অস্থিরতা কাজ করে আপনি তখন অন্যের সঙ্গে সময় কাটানোয় মনযোগী হোন। এমন কারো সঙ্গে সময় কাটান যার সঙ্গে সময় কাটাতে আপনার ভালো লাগে কিংবা যার সঙ্গে সময় কাটালে নিজেকে উজ্জীবিত, প্রাণবন্ত, উৎফুল্ল মনে হয়। বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত পরিজনের মাঝে সময় কাটালে তা আমাদের শান্ত হতে বা চাপ কমাতে সাহায্য করে। ৯। পযার্প্ত ঘুম বা বিশ্রাম নিন: প্রাণবন্ত থাকার জন্য আমাদের পযার্প্ত বিশ্রাম কিংবা ঘুমের প্রয়োজন। পযার্প্ত ঘুম কিংবা বিশ্রামের অভাবও অনেক সময় আমাদের মধ্যে অস্থিরতা কিংবা মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। দুপুরে ১৫ মিনিটের ভাত ঘুম আমাদের শরীর মনকে দ্রæত চাঙ্গা করে তুলে। ১০। ধ্যান করুন: আমাদের মনকে সুস্থ সবল চাঙ্গা করতে বিশ্বব্যাপী মেডিটেশন বা ধ্যানের সাহায্য নেয়া সবর্জন স্বীকৃত। একটা নিজর্ন স্থান খঁুজে নিয়ে বসে পড়ে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাস কিংবা কোনো প্রাথর্নায় মননিবেশ করুন। প্রতিদিন একটা নিদির্ষ্ট সময়ে ধ্যান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এটা আপনার মনযোগকে একাগ্র করার পাশাপাশি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় অনেক বেশি সহায়তা করবে।