সারাদিন পরিশ্রমের পর কিংবা কমর্ব্যস্ততার ফঁাকে এক কাপ ধুমায়িত চা কিংবা কফি কার না ভালো লাগে? কিন্তু যাদের উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের ও দেখা যায় চা কিংবা কফি পানের পরে কিছু সময়ের জন্য রক্তচাপ বেড়ে যায়। দুই কিংবা তিন কাপ কফিতে যে পরিমাণ ক্যাফেইন থাকে, তার ফলে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৩ থেকে ১৪ মি.মি. পারদচাপ আর ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৪ থেকে ১৪ মি. মি. পারদচাপ বেড়ে যায়।
শরীরের ক্যাফেইন কিভাবে রক্তচাপ বাড়ায় তা সঠিক জানা যায় না। ধারণা করা হয়, রক্ত নালিকে প্রসারিত করে এমন হরমোনের কাযর্ক্রমে ক্যাফেইন বাধা সৃষ্টি করে। আবার অনেকে মনে করেন, ক্যাফেইন শরীরে অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণ ঘটায়। অ্যাড্রেনালিন রক্ত নালিকে সংকুচিত করেÑ যার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়।
যারা নিয়মিত কফি পান করে থাকেন তাদের রক্তচাপ তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। নিয়মিত ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় পান করলে একপযাের্য় সহনশীলতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দীঘের্ময়াদি ক্যাফেইন প্রকৃতপক্ষে রক্তচাপ বাড়ায় না।
তবে যারা উচ্চ রক্তচাপের রোগী তাদের ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় অতিরিক্ত পরিমাণে পান করা উচিত নয়। সাধারণত প্রতিদিন ২০০ মি. গ্রামের বেশি ক্যাফেইন সেবন করা ক্ষতিকর। ১২ আউন্সের দু-কাপ কফিতে এ পরিমাণ ক্যাফেইন থাকে। অবশ্য বিভিন্ন ব্রান্ডের কফি এবং ক্যাফেইন যুক্ত পানীয়ের মধ্যে এর পরিমাণের ভিন্নতা থাকতে পারে। সুতরাং এক এক ধরনের পানীয় সেবনে করলে রক্তচাপ বাড়ার মধ্যেও পাথর্ক্য দেখা যায়। সাধারণত যে সব কাজ কমর্ করলে রক্তচাপ বাড়ে (যেমন-ভারী জিনিসপত্র তোলা-নামানো, ব্যায়াম ইত্যাদি) তার আগে ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় সেবন করা উচিত নয়।
যাদের ক্যাফেইন গ্রহণের পর রক্তচাপ বাড়ার প্রবণতা আছে তাদের এ বিষয়ে সতকর্ থাকতে হবে। ক্যাফেইন গ্রহণের আধ ঘণ্টার মধ্যে কারোর রক্তচাপ যদি ৫ থেকে ১০ মি.মি. পারদ চাপ বেড়ে থাকে, তাহলে তাদের অবশ্যই এ বিষয়ে সতকর্ হতে হবে। নিয়মিত কফি পানকারীর সহসা এটা বন্ধ করা ক্ষতিকর হতে পারে এবং প্রতিক্রিয়া হিসেবে তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে। কফি আসক্ত ব্যক্তিদের ক্যাফেইন গ্রহণের ধীরে ধীরে কমালে এমন প্রতিক্রিয়া হয় না।
