ওষুধ ছাড়াই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ৮টি উপায়

প্রকাশ | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি হেলথ ডেস্ক
লবণ খেলে রক্তনালির রক্তের ঘনত্ব ও চাপ বেড়ে যায়, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া ত্যাগ করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব সহজেই। পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার, যেমন কলা খেলে বাড়তি লবণ খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। কলা খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় পটাসিয়ামের অভাব পূরণ হয় এবং শরীরে ফ্লুইডের সমতা রক্ষা হয়, ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন মাত্র এক কাপ করে টক দই খেলে উচ্চ রক্ত চাপ প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমে যায় এবং স্বাভাবিক হয়ে আসে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জন মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে হাটর্ অ্যাটাক বা স্ট্রোক করার ঝুঁকিতে থাকেন। সারাদিন এক জায়গায় বসে কাজ করা, ব্যায়ামের অভাব এবং অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার কারণেও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। যাদের রক্তচাপ প্রায় বেড়ে যায় তাদের ডাক্তাররা অনেক সময় নিয়মিত ওষুধ দিয়ে দেন। প্রতিদিন একটি নিদির্ষ্ট মাত্রার ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের। সব সময়েই যাদের রক্তচাপ বেশি থাকে তাদের তো ওষুধ না খেয়ে কোনো উপায় নেই। কিন্তু যাদের রক্তচাপ উঠা নামা করে তাদের রক্তচাপ সব সময় স্বাভাবিক রাখার জন্য ওষুধ না খেলেও চলে। নিয়মিত কিছু সচেতনতা ও অভ্যাসের মাধ্যমেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আসুন দেখে নেয়া যাক ওষুধ ছাড়াই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু উপায়। টক দই খান : আমেরিকার ইউনিভাসিির্ট অব মিনোসোটার গবেষকদের মতে প্রতিদিন মাত্র এক কাপ করে টক দই খেলে উচ্চ রক্ত চাপ প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমে যায় এবং স্বাভাবিক হয়ে আসে। গবেষকদের মতে দই খেলে রক্ত চাপ ও রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রতিদিন ১২০ গ্রাম টক দই খায় তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি প্রায় ৩১% কমে যায় অন্যদের তুলনায়। সপ্তাহে একদিন জগিং করুন : সপ্তাহে অন্তত একদিন মাত্র একঘণ্টা করে জগিং করলে ৬ বছর আয়ু বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। কোপেনহেগেন সিটির হাটর্ কাডোর্ভাসক্যুলার স্টাডিতে ২৩ থেকে ৯৩ বছর বয়সী ২০,০০০ পুরুষ ও মহিলার ওপর গবেষণা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষকদের মতে জগিং হৃৎপিÐের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং হৃৎপিÐকে শক্তিশালী করে। রক্তচাপ কমিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখে। লবণ খাওয়া কমান : লবণ খেলে রক্তনালির রক্তের ঘনত্ব ও চাপ বেড়ে যায়। ফলে রক্ত চাপ বেড়ে যায়। তবে শুধুমাত্র লবণ নয় প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলেও রক্তচাপ বাড়ে। বøাড প্রেসার অ্যাসোসিয়েশনের মতে সল্টেড বিস্কুট, সকালের নাস্তার সেরেল ও রেডিমেড মোড়কজাত খাবারে প্রাত্যহিক আমরা যা লবণ গ্রহণ করি তার ৮০% থাকে। তাই প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। আর ভাতের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। ওজন কমান : গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র কয়েক কেজি ওজন কমালেও তার ইতিবাচক প্রভাব রক্তচাপের ওপর পড়ে। ওজন বাড়লে হৃৎপিÐের স্বাভাবিক কাযর্ক্রম ব্যাহত হয় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই সব সময় চেষ্টা করুন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ধূমপান ত্যাগ করুন : ধূমপান করলে শরীরে নিকোটিনের প্রভাবে অ্যাড্রেনালিন উৎপন্ন হয়। ফলে হৃৎপিÐের স্পন্দন বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। কলা খান : ব্রিটিশ মেডিকেল জানাের্লর সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখে গেছে, পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা খেলে লবণ খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ফলে নিয়মিত কলা খেলে প্রতিবছর হাজার হাজার জীবন বঁাচানো সম্ভব। কলা খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় পটাসিয়ামের অভাব পূরণ হয় এবং শরীরের ফ্লুইডের সমতা রক্ষা হয়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। কম কাজ করুন : ইউনিভাসিির্ট অব ক্যালিফোনির্য়ার একটি গবেষণা অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার বেশি অফিসের কাজ করলে হাইপারটেনশনের সম্ভাবনা ১৪% বেড়ে যায়। ওভারটাইম কাজ করলে এই ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। যারা সপ্তাহে ৫১ ঘণ্টা কাজ করে তাদের উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় ২৯% বেশি। অফিসে অতিরিক্ত কাজ করলে সারাদিন বসে থাকা হয় এবং ব্যায়ামের সময় পাওয়া যায় না। তা ছাড়াও মনের ওপর চাপ পড়ে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয়ে থাকে। তাই অফিসকে অতিরিক্ত সময় না দিয়ে নিজের বিশ্রামের জন্য কিছু সময় রাখুন। অতিরিক্ত চা ও কফি কমান : আমেরিকার উত্তর ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভাসিির্ট অব মেডিকেল সেন্টারের মতে ৫০০ মিলিগ্রামের অথার্ৎ প্রায় ৩ কাপ চা/কফি খায় তাদের বøাড প্রেসার ৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এই প্রভাব রাতে ঘুমানোর আগ পযর্ন্ত থাকে।