শিশুদের ঠাÐালাগা ও কানে ব্যথা

শিশুর ঠাÐালাগার সঙ্গে কানের একটি সম্পকর্ আছে। ঠাÐালাগা থেকে শিশুর নাকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। নাক থেকে কানে দুটি নালিকা বা টিউব চলে গেছে। এই নালিকা দুটি কানের ভেন্টিলেশনে কাজ করে। প্রদাহ নাকের পেছনের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ওই বঁা নালিকার মুখে যে ঝিল্লি আছে তাতেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে...

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক
শিশুরা সাধারণভাবে যে কয়েকটি রোগে ভোগে তার মধ্যে ঠাÐালাগা এবং কানে ব্যথা অন্যতম। ঠাÐালাগার সঙ্গে কানে ব্যথার কী সম্পকর্ আছে এবং এই কানে ব্যথার জন্য কী করতে হবেÑ এ ধরনের প্রশ্ন আপনার মনে হতেই পারে। শিশুর ঠাÐালাগার সঙ্গে কানের একটি সম্পকর্ আছে। এই সম্পকির্ট কীÑ আলোচনার শুরুতেই সেদিকে একবার নজর দেয়া যাক। ঠাÐালাগা থেকে শিশুর নাকে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। নাক থেকে কানে দুটি নালিকা বা টিউব চলে গেছে। এই নালিকা দুটি কানের ভেন্টিলেশনে কাজ করে। প্রদাহ নাকের পেছনের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ওই বঁা নালিকার মুখে যে ঝিল্লি আছে তাতেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে। পরিণামে ঝিল্লি ফুলে যায় এবং কানের ভেন্টিলেশন বাধাগ্রস্ত হয়। এদিকে প্রদাহের আরও বিস্তার ঘটে এবং মধ্যকণের্ ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যকণের্ কোনো প্রদাহ হলে তা শেষ পযর্ন্ত যন্ত্রণাদায়ক ব্যথার সৃষ্টি করে। এই ব্যথার সঙ্গে জ্বরও হয়। তবে শিশুর ঠাÐা লাগলেই কানে ব্যথা হবে এমন কথা সবসময় সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। ঠাÐালাগার সঙ্গে সঙ্গে কানের দুটি টিউব বন্ধ হয়ে যাওয়ার একটি সম্পকর্ রয়েছে। নাকের পেছনে অবস্থিত অ্যাডেনয়েড নামের মাংস খÐে কোনো সমস্যা থাকলে বা স্বাভাবিক আকারের থেকে বড় হলে তবেই শিশুর ঠাÐা লাগলেই কানে ব্যথা সৃষ্টি হওয়ার কারণ বেশি মাত্রায় ঘটবে বা ঘটার আশঙ্কা থাকবে। এদিকে অ্যাডেনয়েড স্বাভাবিক আকারের চেয়ে বড় হলে অনেক সময় নাকে সংক্রমণ না ঘটলে কানে সংক্রমণ ঘটতে পারে। এজাতীয় কোনো শিশুর যদি যে কোনো কারণে নাকে সংক্রমণ ঘটে তবে অবধারিতভাবে কানে সংক্রমণ ঘটবে। এভাবে কানের ভেন্টিলেশন টিউব বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আরও সংকটের সৃষ্টি হতে পারে। শিশু কানে কম শুনতে পারে। কানের এই সংক্রমণের মধ্যকণর্ পযর্ন্ত বিস্তার ঘটতে পারে এবং শিশুর কানে শেষ পযর্ন্ত পুঁজ জমতে পারে। সঠিক সময় এই রোগের চিকিৎসা না করা হলে তা কানের পদাের্ক ছিদ্র করে বের হয়ে আসতে পারে। শিশুর কান পাকার রোগ নিয়ে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গেলে এ কারণে চিকিৎসক প্রথমেই নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন যে তার এই রোগের উৎস অ্যাডেনয়েড নয় বা শিশুর নাকে কোনো সংক্রমণ আছে কিনা। কান পাকার মতো সমস্যা বহিঃকণের্ দেখা দিতে পারে। কানের পদার্র বাইরে সংক্রমণের কারণে শিশুর কান থেকে জলীয় পদার্থ বা পুঁজ বের হয়ে আসতে পারে। তবে কানের এ ধরনের সমস্যাকে বোঝানো হয়ে থাকে। কিন্তু সত্যিকারভাবে কান পাকা বলতে কিন্তু মধ্যকণের্র প্রদাহকে এবং সেখান থেকে পুঁজ বের হওয়াকে বোঝানো হয়। তবে অ্যাডেনয়েডের সমস্যা ছাড়াও আরও অনেক কারণে কান পাকতে পারে। আঘাতজনিত কারণে শিশু কানের পদার্ ছিঁড়ে যেতে পারে এবং প্রদাহ হতে পারে। উহারণ দিয়ে বলা যায়, শিশু খেলতে গিয়ে কানে কিছুর খেঁাচা খেতে পারে এবং তাতে পদার্ ছিঁড়ে যেতে পারে। তবে শিশু কানে আঘাতজনিত কারণে বা অন্য কোনো কারণে প্রদাহ হয়নি তবে অ্যাডেনয়েড বা কানের ভেন্টিলেশন টিউবের সমস্যা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ধরে নেবেন। কিংবা এ ধরনের সমস্যা নাকের কারণেও হতে পারে। সাধারণ কানের এরকম সমস্যার চিকিৎসা করতে গেলে চিকিৎসক প্রথমেই কারণ চিহ্নিত করার চেষ্টা করবেন। তিনি সঠিকভাবে কারণটি খুঁজে বের করার পর সে অনুযায়ী চিকিৎসা করবেন। বাইরের আঘাতের কারণে যদি এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে তবে তার চিকিৎসা এক ধরনের হবে। অন্যদিকে তবে অ্যাডেনয়েডের কারণে এ ধরনের সমস্যা তার চিকিৎসাও ভিন্ন হবে। তবে সাধারণভাবে অ্যাডেনয়েডের কারণে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকরা তা অপারেশন করে কেটে ফেলার পরামশর্ দিয়ে থাকেন। এই অপারেশন জটিল বা ব্যয়বহুল নয় বলে তা দেরি না করে সম্পন্ন করে নেয়া ভালো। তবে কখনো কখনো কানের ভেতর পুঁজ আটকে শিশুর কানে ভয়াবহ যন্ত্রণার সৃষ্টি করতে পারে। চিকিৎসকরা সে ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি কানের সে ব্যথা কমানোর জন্য বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে নিখঁুতভাবে কানের পদার্ কেটে দেন। আর পদার্ কেটে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুর কানে পুঁজের চাপ কমে ব্যথা হ্রাস পায়। এই কাটা পদার্ পরে ভালো হয়ে যায়। চিকিৎসকরা এজাতীয় চিকিৎসার জন্য এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। শিশুর কানে ব্যথা হলে বা ঠাÐা লাগলে তার চিকিৎসা করতে অনথর্ক সময় নষ্ট করবেন না তাকে নিয়ে দ্রæত চিকিৎসকের কাছে যাবেন।