শীতে ত্বকের পরিচযার্

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক
শীতকালে বাতাসের আদ্রর্তা কমে যায় ফলে বায়ুমÐল ত্বক থেকে পানি শুষে নেয়। এ শুষে নেয়ার কারণে ত্বক, ঠেঁাট ও পায়ের তালু ফেটে যেতে থাকে। আমাদের দেহের ৫৭ শতাংশই হলো পানি। আর এর মধ্যে ত্বক নিজেই ধারণ করে ১০ ভাগ। ফলে ত্বক থেকে পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক দুবর্ল আর অসহায় হয়ে পড়ে। ত্বকের যেসব গ্রন্থি থেকে তৈল আর পানি বের হয়ে থাকে তা আর আগের মতো ঘমর্ বা তৈল কোনোটাই তৈরি করতে পারে না। ফলে ত্বক আরও শুকিয়ে যেতে থাকে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আমাদের ত্বকে থাকে ঘমর্গ্রন্থি, থাকে তৈলগ্রন্থি যেখান থেকে অনবরত তৈল আর ঘাম বের হতে থাকে। এ ঘাম আর তৈল মিলে দেহের ওপর একটি তৈল আর পানির মিশ্রণ বা আবরণী তৈরি করে যায় দেহকে শীতল করে রাখে এবং ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে ও ত্বকের ফাটা ভাব প্রতিরোধ করে। শীত এলে ত্বক ছাড়াও সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় ঠেঁাট নিয়ে। কম বেশি ঠেঁাট ফাটা সবারই হয়। সেক্ষেত্রে তৈলাক্ত প্রলেপ ঠেঁাটে ব্যবহার করলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এক্ষেত্রে ভ্যাসলিন, লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে ঠেঁাট ভালো রাখা যায়। তবে মনে রাখতে হবে জিব দিয়ে ঠেঁাট ভিজানো কখনো উচিত নয়। এতে ঠেঁাট ফাটা আরও বেড়ে যেতে পারে। আর এক শ্রেণির লোকের এ শীত এলেই পা ফাটার প্রবণতা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে অ্যাক্রোফ্লেভিন দ্রবণে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর পা শুকিয়ে যাওয়া মাত্র ভ্যাসলিন মেখে দিন। এছাড়াও গিøসারিন ও পানির দ্রবণ পায়ে মাখলে পায়ের ফাটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। পায়ের ফাটা কম হলে অলিভ অয়েল বা নারকেল তৈল ব্যবহারেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। তবে এখন বাজারে অনেক রকমের ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। এটা আসলে তৈল আর পানির একটি মিশ্রণ। এতে থাকে ত্বক কোমলকারী পদাথর্ যেমনÑ পেট্রোলিয়াম, ভেজিটেবল অয়েল, ল্যানোলিন, সিলিকন, লিকুয়িড, প্যারাফিন, গিøসারিন, প্লাইকল ইত্যাদি। এখন শীতকালে বাড়ে এমন একটি রোগের বিষয় কিছুটা আলোচনা করা যাক। রোগটির নাম হচ্ছে ইকথায়োসিস। ইকথায়োসিস আবার বিভিন্ন ধরনের আছে তবে আমরা শুধু ইকথায়োসিস ভ্যালগারিস নিয়ে কিছুটা আলোচনা করব। এটি একটি জন্মগত রোগ এবং রোগটি শিশুকাল থেকেই লক্ষ্য করা যায়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি হাজারে অন্তত এ রোগে একজন ভুগে থাকেন। নারী-পুরুষের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সমপরিমাণ। এ রোগে যারা আক্রান্ত হয় তাদের হাত ও পায়ের দিক লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, ত্বক ফাটা ফাটা এবং ছোট ছোট গুঁড়ি গুঁড়ি মরা চামড়া বা অঁাইশ পায়ের সামনের অংশের বা হাতের চামড়ায় লক্ষণীয়ভাবে ফুটে উঠতে দেখা যায়। তবে হাত ও পায়ের ভঁাজযুক্ত স্থান থাকবে সম্পূণর্ স্বাভাবিক। তাদের কাছে প্রশ্ন রাখলে তারাই বলবে যে, এ রোগটি তাদের দেহে ছোটবেলা থেকেই আছে। এদের ক্ষেত্রে শীতকাল এলেই প্রতি বছর এর ব্যাপকতা বেড়ে যায়। এদের হাতে বা পায়ের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে, হাতের রেখাগুলো খুবই স্পষ্ট এবং মোটা যা কিনা সাধারণ রোকের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় নয়। এরই সঙ্গে তাদের থাকে অ্যালাজির্ক সমস্যা। তাদের কাছে প্রশ্ন করলে তারাই বলবে যে, তাদের প্রায়ই নাক দিয়ে পানি পড়া অথার্ৎ সদির্ সদির্ ভাব থাকবে। তাদের পারিবারিক ইতিহাস খুঁজলে আরও পরিষ্কারভাবে দেখা যাবে যে, তাদের পরিবার অ্যালাজির্ক সমস্যা ছিল বা এখনো আছে। এ রোগটি একবারে কখনই ভালো হয় না। তবে একে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শীত এলেই বেশি বেশি করে তৈলাক্ত পদাথর্ মাখলে ত্বক ভালো থাকে এবং ফাটাভাব পরিস্ফুট হয় না। তবে যাদের ফাটা অবস্থা খুব বেশি তাদের ক্ষেত্রে আলফা হাইড্রোক্সি এসিড মাখলে খুবই ভালো ফল পাওয়া যায়। আর এটি পেতে যদি অসুবিধা হয় তাহলে গিøসারিনের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে ত্বকে মাখলে খুবই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।