যৌনরোগ প্রতিরোধের উপায়

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর যে পরিমাণ লোক যৌনরোগে আক্রান্ত হয় তার পরিমাণ আনুমানিকভাবে ২৫ কোটি। তার মধ্যে একমাত্র গনোরিয়ায়ই আক্রান্ত হয় সাড়ে ছয় কোটিরও বেশি। বলা হয় ২ কোটিরও বেশি যুবক-যুবতী বতর্মান বিশ্বে এইডস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন। সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর সিফিলিসে আক্রান্ত হয় প্রায় ১০ লাখ নর-নারী। তাই এ যৌনরোগ প্রতিরোধকল্পে সবার্ত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেই হবে। যৌনরোগ যেমন সিফিলিস, গনোরিয়া বা এইডস তা কিন্তু নয়। প্রায় ২৫টি মতো রোগ আছে যা যৌনপথে বিস্তার লাভ করে। তার মধ্যে এইডস ছাড়াও জন্ডিসের মতো মারাত্মক রোগের অন্তভুর্ক্ত। যা কিছুদিন আগেও মানুষ মনে করত এটা কোনো সঙ্গতজনিত রোগ নয়। যৌনরোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা নয় প্রতিরোধই হচ্ছে অন্যতম ব্যবস্থা। তাই যুবক-যুবতীদের মধ্যে এ শিক্ষা আমাদের পেঁৗছে দিতে হবে যে কী করে তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারবে। আমাদের একটি কথা মনে রাখতে হবে আমরা ঘৃণা করব রোগকে, রোগীকে নয় কিন্তু বস্তুত আমাদের দেশে হচ্ছে তার উল্টো। আমরা যৌনরোগ এবং যৌন রোগী উভয়কেই যেন ঘৃণার চোখে দেখি। তাই আসুন, আমরা লক্ষ্য করি কী করে এ রোগের বিস্তার প্রতিরোধ করা যায়। ১. যুব সমাজের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে, তাদের জানতে দিতে হবে যে এগুলো প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং তাদের এও জানতে হবে যে এ রোগে আক্রান্ত হলে তার মৃত্যুও হতে পারে। ২. কলেজ, ইউনিভাসিির্ট লেবেলের পাঠ্যসূচিতে যৌন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অন্তভুর্ক্ত করতে হবে যাতে প্রতিটি যুবক-যুবতী এ রোগগুলোর ভয়াবহতা সম্পকের্ ন্যূনতম জ্ঞান লাভে সক্ষম হয়। ৩. আক্রান্ত হলে রোগ নিণর্য় ও চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে থানা, উপজেলা, জেলা পযাের্য় পেঁৗছে দিতে হবে যেন আক্রান্ত মানুষ দ্রæত চিকিসার সুযোগ পায়। ৪. কেউ আক্রান্ত হলে তার সঙ্গী বা উভয়েরই চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং স্বামী-স্ত্রী হলেও উভয়ের ক্ষেত্রেই রোগ নিণর্য় এবং একই সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে সাময়িকভাবে সুস্থ হলেও আবার স্বামীর থেকে স্ত্রী বা স্ত্রীর থেকে স্বামী আক্রান্ত হবেই এবং কনডম ব্যবহারের সুনিদির্ষ্ট পদ্ধতিও বহুগামী লোকদের শেখাতে হবে এবং তাদের বহুগামিতার পথ পরিত্যাগ করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। ৫. কনডম ব্যবহার করতে হবে। এবং কনডম ব্যবহারের সুনিদির্ষ্ট পদ্ধতিও বহুগামী লোকদের শেখাতে হবে এবং তাদের বহুগামিতার পথ পরিত্যাগ করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। ৬. কনডম সব যৌনরোগ প্রতিরোধে সক্ষম নয় এ কথা জনগণকে জানাতে হবে। অনেকে মনে করেন কনডম ব্যবহার করলেই আর যৌনরোগ হতে পারবে না এ ধারণা নিয়ে যারা বহুগামিতায় বিশ্বাস করেন তাদের প্রতিহত করতে হবে এবং যৌনরোগের ভয়াবহতা সম্পকের্ তাদের জ্ঞান দিতে হবে। ৭. শিক্ষিত জনগণ যেন মাঝেমধ্যে তাদের জননেন্দ্রিয় পরীক্ষা করেন তা তাদের জানাতে ও শেখাতে হবে। ৮. বহু যৌন রোগ উপসগির্বহীন অবস্থায় থাকতে পারে। যেমন গনোরিয়া মহিলাদের বেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপসগির্বহীন অবস্থায় থাকতে পারে। কাজেই উপসগর্ নেই তাই যৌন রোগ নেই এ কথা ভাবা ঠিক নয়। আবার সিফিলিসে ক্ষত চিকিৎসা না করলেও এমনিতেই কিছুদিন পর ক্ষত শুকিয়ে যায় তার মানে এই নয় যে সে রোগমুক্ত হয়ে গেছে। এ জীবাণু তার দেহে দীঘর্স্থায়ী রূপ নিল এবং চিকিৎসা না হলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে এমনকি তার জীবনও বিপন্ন হতে পারে। ৯. অপরের দঁাত মাজার ব্রাশ ও দাড়ি কাটার বেøড ব্যবহার করা উচিত নয়। সেভ করার সময় কেটে যেতে পারে বা দঁাত মাজার সময় দঁাত থেকে রক্ত বের হতে পারে এবং সেই রক্তে জীবাণু থাকতে পারে তা সহজেই অন্য ব্যবহারকারীর দেহে চলে যেতে পারে। ১০. এইডস বা যৌনরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সামাজিকতার ভয়ে চেপে যান, অনেকে মনে করেন এইডস হয়েছে জানলে চিকিৎসক পুলিশে খবর দিয়ে ধরিয়ে দিতে পারে সেই ভয়ে তারা এইডসের পরীক্ষা করাতে চান না। ধারণাটি আদৌ সত্য নয়। ১১. জাতীয় ও জেলা পযাের্য় যৌনরোগ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে এবং তার বিস্তার রোধে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা নিতে হবে। ১২. রক্ত গ্রহণ বা প্রদানের আগে এইডস, হেপাটাইটিস-বি ও সিফিলিসের পরীক্ষা অবশ্যই করাতে হবে। এগুলো পাওয়া গেলে সে রক্ত অবশ্যই গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ১৩. শিরাপথে মাদকদ্রব্য গ্রহণকারীদের নিবৃত্ত করার সবার্ত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আর তাদের যদি নিবৃত্ত করা না যায় তাহলে অন্তত তাদের এটুকু শেখাতে হবে যেন একই সুই তারা একাধিকবার ব্যবহার না করেন। করলে এইডস থেকে শুরু করে যে কোনো যৌনরোগ তার দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সবোর্পরি ধমীর্য় চেতনা জাগ্রত করতে হবে এবং নৈতিকতার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিজ নিজ পিতামাতা তাদের সন্তানদের নৈতিকতার উন্নয়নে বিশেষ ভ‚মিকা গ্রহণ করতে পারেন। য় যাযাদি হেলথ ডেস্ক