ক্যানসার জয়ীদের সুস্থ থাকার উপায়

'বিশ্বের ৮০টি দেশে আমরা সফটওয়্যার রপ্তানি করছি। নেপাল, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত ডিজিটাল যন্ত্র রপ্তানি হচ্ছে। মেড ইন বাংলাদেশ পোশাক বিশ্বে দ্বিতীয় উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক হিসেবে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখছে

প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার পর অথবা যে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের পর সেই সব রোগীদের নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এসব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অবশ্যই শারীরিক ও মানসিক যত্নের একান্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাভ্যাসের পরিবর্তন করাটা খুবই জরুরি। এ সময় বারবার ক্ষুধা লাগে কিন্তু পাশাপাশি খাবারেও মারাত্মক রকম অরুচি থাকায় তেমন কিছুই খেতে পারে না। সেক্ষেত্রে যেসব খাবার এ ধরনের রোগীরা খেতে পারবে এবং খেতে পারবেন না সে বিষয় নিয়েই আলোচনা করছি আজ- যেসব খাবার এ ধরনের রোগীরা খাবেন না: ১. ফ্রিজে রাখা খাবার এমন রোগীদের খাওয়া যাবে না। ২. চিনিজাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। এমনকি যে সব খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি কেক-পেস্ট্রি, কোল্ড ড্রিংকস সেগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। ৩. প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাবার খাওয়া যাবে না। যেমন: আচার, চাটনি, নোনা মাছ, জেলি, পাউরুটি, অধিক চিনি ও অধিক লবণ মিশ্রিত খাদ্য। ৪. জাংক ফুড বা অতিরিক্ত ভাজাভুজি জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্সফ্যাট থাকে। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। শরীরের সরাসরি ক্ষতি করতে পারে এই ধরনের খাবার। যেমন: সিঙ্গাড়া, সমুচা ও অতিরিক্ত মসলাজাতীয় খাবার ক্ষতিকর। ৫. কিছু কিছু দুগ্ধজাত দ্রব্য খেলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়। এর মধ্যে রয়েছে মাখন, চিজের মতো বেশ কিছু খাবার। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। ৬. যে কোনো ধরনের রেড মিড বা অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই এই জাতীয় মাংস একেবারে বাদ দিতে হবে খাদ্যতালিকা থেকে। ৭. সব ধরনের অ্যালকোহল বা মদই রোগ প্রতিরোধ শক্তি অনেকটা কমিয়ে দেয়। তাই এই অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। ৮. বারবিকিউ জাতীয় খাবার, অর্থাৎ যেসব খাবার সরাসরি আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা হয় যেসব খাবার খাবেন না। এ ধরনের রোগীরা যে খাবারগুলো খেতে পারবেন: ১. জাও ভাত বা নরম ভাতের সঙ্গে তেল-মসলা কম দিয়ে তৈরি তরকারি খেতে হবে। ২. এ সময় দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় প্রোটিন ও আয়রন রাখাটা অপরিহার্য। তাই মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ, বিভিন্ন রকম ডাল, বিচি জাতীয় খাদ্য, ডিম, বাদামের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন। ৩. বিভিন্ন রকম উদ্ভিজ্জ্ব তেল যেমন : অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, সূর্যমুখী তেল এসব খেলেও দ্রম্নত ত্বকের সৌন্দর্য ও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ৪. স্ট্রবেরি, বস্নু বেরি জাতীয় ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। শরীরের ক্ষত নিরাময় করতে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট অপরিহার্য। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টসমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি। ৫. এ সময় শরীরে ভিটামিনস, মিনারেলস, আয়রনের অভাব দেখা যায়। তাই সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। ৬. হিমোগেস্নাবিনের অভাব দেখা দেওয়ায় বিট রুটের শরবত বা হালকা ভাপানো সালাদ দেওয়া যেতে পারে। আনার বা ডালিম ও খেতে পারে। ৭. ফাইবার জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমন: কচুশাক, লালশাক ও ডাঁটাশাক ইত্যাদি। ৮. প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় টক ফল রাখা লাগবে। যেমন: লেবু, জাম্বুরা, আমড়া, আমলকী, আনারস ইত্যাদি মৌসুমি সহজলভ্য ফল। ৯. ভিটামিন এ ও ই খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমন: কমলা ফল ও সবজি এবং পালংশাক, লেটুস পাতা, ধনে পাতা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম জাতীয় খাবার। ১০. প্রতিদিন কয়েক কোয়া রসুন খাওয়া যেতে পারে। কেননা, রসুন এক প্রকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি শরীরের বিভিন্ন টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। ১১. যে কোনো বড় অসুখ থেকে সুস্থতা পেলে বেশি করে পানি পান করা প্রয়োজন। ১২. এ ধরনের রোগীকে তরল জাতীয় খাবার যেমন: টমেটো, ব্রোকলি, গাজর, ফুলকপি, মটরশুঁটি দিয়ে সু্যপ তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। কেননা, তাদের মধ্যে ডিহাইড্রেশন ও নিদ্রাহীনতা থাকায় তরল পুষ্টিকর খাবারগুলো খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া গ্রিন টি খেতে পারবে। ১৩. দুধের বদলে সয়া দুধ খাওয়া যায়। এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বাড়িয়ে দেয়। \হনাজিয়া আফরিন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মকর্তা, মানবিক সাহায্য সংস্থা এবং সিনিয়র পুষ্টিবিদ (এক্স)-কিংসটন হাসপাতাল।