মেয়েদের স্তনে চাকা বা গোটা

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি হেলথ ডেস্ক
মহিলাদের স্তনে চাকা বা গোটা হওয়া অথবা গোটা ভাব অনুভ‚ত হওয়া খুবই সাধারণ ঘটনা। এসব গোটার বেশির ভাগই ক্ষতিকর কিছু নয় অথার্ৎ এগুলো ক্যান্সার নয়। মাসিকের আগে স্তনে কিছু পরিবতর্ন হয়। স্তনের টিস্যু বিভিন্ন হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হয়। ফলে স্তনে চাকা অথবা গোটা ভাব বা ব্যথাও অনুভব হতে পারে। নিজেদের স্তনের স্বাভাবিক পরিবতর্নগুলো মহিলাদের সবারই জানা প্রয়োজন। তাহলে অস্বাভাবিক কিছু হলে সহজে বোঝা যাবে। মাসিকের আগে সাধারণত স্তনে ব্যথা ও চাকা ভাব মনে হতে পারে। এ অবস্থায় দুশ্চিন্তা না করে ডাক্তারের পরামশর্ নেয়াই শ্রেয়। ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করে দেখে প্রয়োজন হলে আরো কিছু পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেন। স্তনে সাধারণ যেসব পরীক্ষা করা হয় সেগুলো হলো: ম্যামোগ্রাম: ম্যামোগ্রাম স্তনের এক্স-রে। ৩০ বছরের বেশি বয়সে ম্যামোগ্রাম সবচেয়ে বেশি কাযর্কর। কারণ এ বয়সে স্তনের টিস্যু কম গøান্ডুলার থাকে এবং এক্স-রের ছবি ভালো আসে। ফাইন নিডেল এসপিরেশন সাইটোলজি: একটি সূ² সূচ দিয়ে স্তনের গোটা থেকে কিছু কোষ সরিয়ে নিয়ে তা অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এ পরীক্ষা করতে সাধারণত খুব একটা কষ্ট হয় না। আল্ট্রাসাউন্ড শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে এ পরীক্ষা করা হয়। ছোট মাইক্রোফোন জাতীয় যন্ত্র স্তনের ওপর ধরা হয়। স্তনের গোটা বা চাকা ভাব এ পরীক্ষায় ধরা পড়ে। সব বয়সের মহিলাদের জন্য এ পরীক্ষা খুবই কাযর্কর। এগুলোর সঙ্গে রোগীকে পরীক্ষা করে ডাক্তার নিশ্চিত হন যে স্তনে গোটা বা চাকা ভাব হয়েছে কিনা। এ পাথর্ক্যটা বোঝা খুবই গুরুত্বপূণর্। ফাইব্রো এডেনোমা ও সিস্ট-এ দুটির সবচেয়ে সাধারণ ক্ষতিকর নয় এমন গোটা। ফাইব্রো এডেনোমা ১৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ফাইব্রো এডেনোমা হয়। স্তনে একটি শক্ত চাকা যা চাপ দিলে বেশ সহজে নড়াচড়া করে। আকৃতিতে বাড়তে অথবা কমতে পারে, সময়ে চাকাটা মিলিয়েও যেতে পারে। পরীক্ষা করে ফাইব্রো এডেনোমা নিশ্চিত হওয়া যায় তাহলে অপারেশন না করালেও চলে। তবে রোগী যদি ৩০ বছরের বেশি বয়সী হন আর ফাইব্রো এডেনোমা নিশ্চিত হওয়া যায় তাহলে অপারেশন করে সরিয়ে ফেলার পরামশর্ দেয়া হয়। অজ্ঞান করে ছোট অপারেশনের মাধ্যমে গুটিটা সরিয়ে ফেলা হয়। এ ক্ষেত্রে শুধু একটা ছোট্ট কাটা দাগ থাকে, যা আস্তে আস্তে পরে মিলিয়ে যায়। অনেক সময় স্তনের অন্য জায়গায় ফাইব্রো এডেনোমা নতুন করে আবারো হতে পারে। সিস্ট স্তনের সিস্ট একটি তরল পদাথের্ ভরা থলি। হঠাৎ করে সিস্ট হলে ব্যথা হতে পারে। ৩০-৫০ বছর বয়সে সাধারণত এগুলো হয়। সিস্টের চিকিৎসাও খুব সহজ। একটি ছোট সূচ দিয়ে চাকা থেকে পানিটা বা তরল পদাথর্টা বের করে ফেলা হয়। কোনো জটিলতা না থাকলে চাকাটা সম্পূণর্রূপে চলে যায়। যেসব মহিলার সিস্ট হয় তাদের পরও স্তনের বিভিন্ন জায়গায় সিস্ট হতে পারে। অনেক সময় এসব সিস্ট অপারেশন করে সরানো হয়। ওষুধ দিয়েও কোনো সময় চিকিৎসা করা প্রয়োজন হতে পারে। ফাইব্রো এডেনোমা ও সিস্ট ক্যান্সার নয় এবং এগুলো হলে ক্যান্সারের সম্ভাবনাকে বাড়ায় না। মহিলাদের নিজেদের স্তন সম্পকের্ সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে, যাতে নতুন কোনো উপসগর্ দেখা দিলেই ডাক্তারের পরামশর্ নিতে পারেন। সব স্তনের গুটি পরীক্ষা করা আবশ্যক। ৯০ শতাংশ গুটি ক্ষতিকর নয়। সময়মতো ধরা পড়লে ছোট অপারেশন দিয়ে এর চিকিৎসা হতে পারে এবং তাতে আপনার জীবন রক্ষা পেতে পারে।