অপ্রয়োজনে ভিটামিন সেবন করবেন না

প্রকাশ | ০২ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি হেলথ ডেস্ক
বাংলাদেশে অধ্যায়ন করছেন একজন বিদেশি ছাত্রী। আবার মেডিকেলেও পড়ছেন। ইতোপূর্বে একাধিক ডার্মাটোলজিস্ট দেখিয়েছেন। ওষুধপত্রও কমবেশি সেবন করেছেন। আমি ওই ছাত্রীর চুলপড়ার ধরন, কারণ এবং তার ব্যক্তিগত চুল পরিচর্যার নানাদিক জানতে চাই। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগীর ইতিহাস জেনে বুঝা গেল না তার চুলপড়ার কোনো কারণ থাকতে পারে। ছাত্রীটির স্বাস্থ্য ভালো, রক্তশূন্যতা একেবারেই নেই। বরং হিমোগেস্নাবিন ১৩-১৪ এর কম হবে না। যেখানে মেয়েদের রক্তের হিমোগেস্নাবিন ১০-১১ থাকলেই স্বাভাবিক ধরা হয়। রোগী বলা ঠিক হবে না। বিদেশি নাগরিক ওই মেডিকেল ছাত্রীর শারীরিক, মানসিক ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সমস্যার দীর্ঘ ইতিহাস থেকে চুলপড়ার কোনো ধরনের কারণ বের করতে সক্ষম হলাম না। এরপর তার প্রেসক্রিপশনে যা লিখে দিলাম, যার বাংলা অর্থ হচ্ছে- কোনো ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। শুধু যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে চুলপড়া সমস্যার সমাধানের উপদেশ দিলাম। পরিচর্যার মাধ্যমে থাকবে, একদিন পর পর কোনো নরমাল শ্যাম্পু এবং যথাযথ নিয়ম অনুসারে কন্ডিশনার ব্যবহার করবে। প্রচুর শাকসবজি, পানি পান করবে ও প্রতিদিন যথাযথ নিয়মে ঘুমাবে। পরীক্ষার চাপ, মানসিক চাপ থাকলে তা স্বাভাবিকভাবে নেবে। মেডিকেল ছাত্রীটির সঙ্গে আরো একজন ছাত্রী ছিলেন। তিনি বললেন, স্যার ও অর্থাৎ বিদেশি ছাত্রীটি ভিটামিন-ই খেতে পারবে না। আমি বিদেশি ছাত্রীর কাছে জানতে চাই হঠাৎ তোমার মাথায় ভিটামিন-ই এলো কেন। মেয়েটির সোজা উত্তর- স্যারেরা তো ভিটামিন-ই বায়োটিনসহ নানা সাপিস্নমেন্ট খেতে বলেন। আমি কথা না বাড়িয়ে বললাম আমিও সাপিস্নমেন্ট দেই। তবে কেন দিচ্ছি, তা অবশ্যই রোগীর কাছে ব্যাখ্যা করি। কিন্তু আমার আলোচ্য ছাত্রী রোগীটির ভিটামিন বা বায়োটিন দেখার মতো কোনো কারণই ছিল না। আর তা ছাড়া অতিরিক্ত ভিটামিন সেবনে ওজন বেড়ে যায়। তাই অপ্রয়োজনীয় ভিটামিন-ই জাতীয় ওষুধ সেবন কোনোভাবেই উচিত নয়। কারণ ভিটামিন চুলপড়া সমস্যার কোনো সমাধান নয়। আমি সব সময় বলে থাকি চুলপড়া কোনো রোগ নয় এবং কারণ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন দরকার নেই। চুলের যথাযথ পরিচর্যা ও নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে থাকলেই অনেক ক্ষেত্রে চুলপড়া সমস্যার সমাধান হতে পারে।